স্পষ্ট হচ্ছে ২০ দলের বিভক্তি!

২০ দলীয় জোটডেস্ক রিপোর্ট: বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শরীক দলগুলোর মধ্যকার বিভক্তি আরও স্পষ্ট হয়ে উঠছে। সোমবার রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে দিনব্যাপী প্রতীকী অনশন কর্মসূচি পালন হলেও সেখানে বিএনপি জোটের শরীক কয়েকটি দলের শীর্ষ নেতাদের দেখা যায়নি। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া বলেন, ‘বিএনপি অগোছালোভাবে কর্মসূচি পালন করেছে। তাদের আমন্ত্রণ প্রক্রিয়া সম্মানজনক ছিল না, তাই কর্মসূচিতে যাওয়ার আগ্রহ ছিল না।’

ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গাণি বলেন, ‘খুব স্বল্প সময়ের নোটিশের কারণে কর্মসূচিতে উপস্থিত হতে পারিনি। আমার অন্য একটা প্রোগ্রাম ছিল।’

ন্যাপ মহাসচিবের বক্তব্যের বিষয়ে গাণি বলেন, ‘উনি ওনার ক্ষোভের জায়গা থেকে বলতেই পারেন।’ বিএনপি চেয়ারপারসনের মুক্তির দাবিতে সেভাবে রাজনৈতিক আন্দোলন গড়ে তোলা হয়নি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

কর্মসূচিতে না যাওয়া প্রসঙ্গে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনডিপি) চেয়ারম্যান খোন্দকার গোলাম মোর্ত্তজা বলেন, ‘দলের নিবন্ধনের বিষয়ে হাইকোর্টে কাজ ছিল, তাই যেতে পারিনি। আমাদের এক সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিবকে যেতে বলেছিলাম।’

বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম শারীরিক অসুস্থতার কারণে কর্মসূচিতে আসতে পারেননি বলে অনশন মঞ্চ থেকে জানানো হয়।

কল্যাণ পার্টির দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম মহাসচিব আল আমিন ভূইয়া রিপন বলেন, ‘ চেয়ারম্যান অসুস্থ এবং মহাসচিবের এক স্বজন মারা যাওয়ার কারণে উনারা কর্মসূচিতে যেতে পারেননি।

লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) চেয়ারম্যান ড. অলি আহমদও কর্মসূচিতে যাননি। তবে তার দলের মহাসচিব ড. রেদওয়ান আহমেদ কর্মসূচিতে বক্তব্য দিয়েছেন। সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহাদৎ হোসেন সেলিমও ছিলেন।

রেদওয়ান আহমেদ তার বক্তব্যে বলেন, ‘বিএনপির নেতৃত্বে ২০ দলীয় জোট এখনও ঐক্যবদ্ধ আছে। নির্বাচনে যাওয়ার ব্যাপারে কেউ যদি কোনো বক্তব্য দিয়ে থাকেন, সেটি তার ব্যক্তিগত বক্তব্য। তার সঙ্গে এলডিপির কোনো সম্পর্ক নেই।’

পিপলস লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাহবুব হোসেন বলেন, ‘বিএনপি এবং ২০ দলীয় জোটকে বাইরে রেখে আরেকটি পাতানো নির্বাচন করার জন্যই খালেদা জিয়াকে কারাবন্দি রাখা হয়েছে। কিন্তু সরকারের এই উদ্দেশ্য সফল হবে না। নির্বাচনের আগেই তাকে মুক্তি দিতে হবে।’

বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক সাঈদ আহমেদ বলেন, ‘ আমরা বিপ্লবে বিশ্বাস করি। আমরা মওলানা ভাসানীর অনুসারী। ভাসানী আমাদের শিখিয়েছে বলপ্রয়োগ করে ক্ষমতা কেড়ে নিতে হয়। খালেদা জিয়া আমাদের শিখিয়েছেন লড়াই করে দাবি আদায় করতে হয়। আমরা লড়াই সংগ্রামের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আনব।’

বিজেপির চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থকেও কর্মসূচিতে দেখা যায়নি। তবে দলটির মহাসচিব আব্দুল মতিন সউদ কমসূচিতে অংশ নিয়ে বক্তব্যে বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া ছাড়া দেশে কোনো নির্বাচন হবে না। বিএনপির নেতৃত্বে আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি। ভবিষ্যতে বিএনপির যে কোনো কর্মসূচিতে সক্রিয় থাকব। ’

জামায়াতের নায়েবে আমীর অধ্যাপক মজিবর রহমান খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার কথা বলেন।

এছাড়াও বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলাম, জাগপার সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ প্রমুখ প্রতীকী অনশনে অংশ নেন। সূত্র: জাগো নিউজ