রোববার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনীর (এসএসএফ) ৩২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, মানুষের জন্যই আমার কাজ। যে মানুষের জন্য কাজ করি সে মানুষগুলো থেকে যদি বিচ্ছিন্ন হয়ে যাই তাহলে আমাদের জীবনটা অর্থহীন হয়ে যাবে। এই যোগাযোগটা যেনো অটুট থাকে।
এসএসএফ সদস্যদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার প্রধান হিসেবে আমার কোনো বিলাসবহুল জীবন-যাপন অথবা কিছু চাওয়া-পাওয়া নেই। জনগণের সঙ্গে আমাদের যেন নিবিড় যোগাযোগটা থাকে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখার কথা বলবো। তবে অবশ্যই পেশাদারিত্ব, নিয়ম-নিষ্ঠার বিষয়টা থাকতে হবে। বিদেশি ভিআইপি অতিথিরা এসএসএফ-এর পেশাদারিত্বের প্রশংসা করে যান। সেজন্য আমি গর্ববোধ করি।’
তিনি বলেন, ‘আমি একজন মা। এসএসএফ সদস্যদের আমি সন্তানের মতো দেখি। আমি চাই এই দায়িত্ববোধটা যেন সব সময় থাকে। আমি বিশ্বাস করি সুযোগ্য নেতৃত্ব, সঠিক দিক-নির্দেশনা এবং এই বাহিনীর প্রত্যেক সদস্যের পেশাদারিত্ব এবং আন্তরিকতার মাধ্যমে এসএসএফ-এর উন্নতি অব্যাহত থাকবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এবার নিয়ে আমি তিনবার দায়িত্বপালন করছি। স্বাভাবিকভাবে খুব কাছে থেকে এই বাহিনীর কর্মনিষ্ঠা, একাগ্রতা, পেশাদারিত্ব ও দক্ষতা লক্ষ্য করেছি। তারা অত্যন্ত নিষ্ঠার ও দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্বপালন করছেন। আমি চাই ভবিষ্যতে শৃঙ্খলা, আনুগত্য এবং পেশাগত মান বিচারে এই বাহিনী হয়ে উঠুক একটি আদর্শ নিরাপত্তা বাহিনী।’
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সন্ত্রাসবাদ; একটা বিরাট সমস্যা। এটা শুধু আমাদের দেশে নয়, বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে রয়েছে। সেই সঙ্গে আমাদের দেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের জন্য হত্যা, ষড়যন্ত্রের রাজনীতি, ক্ষমতা দখলের প্রতিযোগিতার পাশাপাশি স্বাধীনতা বিরোধীদের অপতৎপরতা, সন্ত্রাস জঙ্গিবাদী তৎপরতা; যা সব সময় একটা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার সৃষ্টি করে।
তিনি বলেন, আমরা মনে করি এটা একটা চ্যালেঞ্জ, যেটা বার বার মোকাবেলা করে আমাদের চলতে হচ্ছে। এছাড়া যুগের পরিবর্তন হচ্ছে, নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন হচ্ছে। এই প্রযুক্তি যেমন মানুষের কল্যাণের কাজে লাগছে সেই সঙ্গে ধ্বংসের কাজেও ব্যবহৃত হয়। সেদিক থেকে নিরাপত্তা প্রদান সব সময় একটা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সদা পরিবর্তনশীল ও নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করে প্রতিষ্ঠার পর থেকে আমাদের এসএসএফ অত্যন্ত দায়িত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। সেবার মানে দক্ষতা অর্জনের পাশাপাশি সদস্যদের প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, সব সময় যুগের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে যখন যা প্রয়োজন সে অনুযায়ী আধুনিক সরঞ্জামাদি ক্রয় করা হয়েছে, যাতে নিরাপত্তাটা আরও সুরক্ষিত হয়। যারা আমার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকেন, তাদের নিরাপত্তার বিষয়টাও আমি সব সময় চিন্তা করি। নিজের জীবন বাজি রেখে তারা ডিউটি পালন করে থাকেন। তাই তাদের নিরাপত্তাটা সব সময় গুরুত্বপূর্ণ।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এসএসএফ-এর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সফিকুর রহমান।