নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন চলাকালে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে ছাত্রদেরকে হত্যা ও ধর্ষণের গুজব ছড়িয়েছে, এমন সাতশ ফেসবুক আইডি শনাক্ত করেছে ছাত্রলীগ।
সরকারপন্থী ছাত্র সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী জানিয়েছেন, শনাক্ত হওয়া এসব আইডি যারা চালায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়কে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেছেন তারা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘সন্ত্রাস বিরোধী’ সমাবশে ছাত্রলীগ নেতা একথা বলেন। অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ছাত্রলীগ এ সমাবেশের আয়োজন করে। এতে ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
নিরাপদ সড়কের দাবিতে ছাত্রদের আন্দোলনের মধ্যে গত ৫ আগস্ট ফেসবুক লাইভ ও সাক্ষাৎকারের মতো করে ফেসবুকে ভিডিও ছাড়া হয় যেখানে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হত্যা-ধর্ষণ, চোখ তুলে ফেলার মতো অভিযোগ আনা হয়। স্পষ্টত এসব ভিডিও ছাত্রদেরকে উত্তেজিত করেছিল এবং দল বেধে সেদিন আওয়ামী লীগের ধানমন্ডি কার্যালয়ে হামলার চেষ্টা হয়।
ছাত্রদের আন্দোলনকে এভাবে ব্যবহারের চেষ্টা নিয়ে কঠোর অবস্থানে আছে সরকার। সেই সঙ্গে ছাত্রলীগও নানাভাবে শনাক্ত করার চেষ্টা করছে, তারা এই প্রচারগুলো চালিয়েছে।
গুজব ছড়ানোর পাশাপাশি স্বাধীনতার সংগ্রামে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা পালন করা ছাত্রলীগ ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে প্রচারের চেষ্টা চলছে।
ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন বানানোর অপচেষ্টা যারা চালিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
যখনই দেশের সাধারণ শিক্ষার্থীরা কোনো আন্দোলনে যায়, জামায়াত-শিবির ও ছাত্রদল তাদের বিভ্রান্ত করে ফায়দা লুটতে চায় বলেও সতর্ক করেন রাব্বানী।
ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও সীমাহীন ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে দাবি করে ঢাবির আইন বিভাগের এই শিক্ষার্থী বলেন, আমরা এই অপপ্রচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে এখানে এসেছি।
গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চোধুরী ও গণফোরাম নেতা ড. কামাল হোসেনের প্রত্যক্ষ মদদে কোটা আন্দোলনের মতো নিরাপদের সড়ক আন্দোলনকে বিএনপি ব্যবহারের চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদকের।
‘কোটা আন্দোলনের মতো লন্ডনের নতুন হাওয়া ভবন তাদের দেওয়া অর্থে জাফরুল্লাহ চোধুরী ও ড. কামালের প্রত্যক্ষ মদদে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোকে ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনকে (নিরাপদ সড়ক) ব্যবহারের চেষ্টা করেছে, তবে তারা ব্যর্থ হয়েছেন’।
‘প্রধানমন্ত্রী নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নেওয়ায় ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে না পারেনি বিএনপি।’
নিরাপদ সড়কের দাবিতে ছাত্রদের আন্দোলনের সময় ছাত্রলীগ উপস্থিতির দাবির আান্দোলনে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের উপস্থিতির কথা স্বীকার করে রাব্বানী বলেন, ‘জামায়াত-শিবির এসব আন্দোলনে অংশ নিতে পারে এ জন্য ছাত্রলীগের প্রত্যেক ইউনিটের নেতাকর্মীদের প্রতি আমাদের নির্দেশনা ছিল, তারা প্রত্যেক পয়েন্টে থাকবে, তবে কোন ধরনের সংঘর্ষে জড়াবে না।’
‘আর উপস্থিত থাকার কারণেই আন্দোলনের শেষের দিকে আমাদের ৭১ জন সহযোদ্ধা আহত হয়। কিন্তু আক্রান্ত হওয়ার পরও কোনো সংঘর্ষে তারা যুক্ত হয়নি।’
বিএনপিকে হুশিয়ার করে দিয়ে রাব্বানী বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারম্যান বেগম খালেদা জিয়া যদি ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে বাংলাদেশের কোন জায়গায় ভুয়া জন্মদিন পালন করে, তবে ছাত্রলীগ তা প্রতিহত করবে।’
সমাবেশে ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্ব দানকারী সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে আজকে সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যায়িত করতে বিভিন্নভাবে অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এর বিরুদ্ধে আমাদের আজকের এ ছাত্র সমাবেশ।’