একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে রাজধানী ঢাকায় বড় ধরণের শোডাউনের প্রস্তুতি নিচ্ছে এইচএম এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি। এ লক্ষ্যে আগামী নভেম্বরের শেষ দিকে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ আয়োজনের চিন্তা-ভাবনা করছে দলটি। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়টি ধরে নিয়েই দলের প্রস্তুতির পাশাপাশি দেশবাসীর সামনে নিজেদের শক্তিমত্তার প্রকাশ ঘটাতেই এ মহাসমাবেশের আয়োজন করা হচ্ছে বলে দলের একাধিক সূত্রে জানা গেছে। এরআগে এ বছরের ২৪ মার্চ রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ করে জাতীয় পার্টি।
এদিকে পুরোদমে নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছে জাতীয় পার্টি। পার্টির চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ইতিমধ্যে দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন। নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আগামী ৫ সেপ্টেম্বর দলের প্রেসিডিয়াম সভা আহবান করা হয়েছে। দলীয় সংসদ সদস্যদেরও এই সভায় উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। বনানীতে পার্টিও চেয়ারম্যানের কার্যালয় রজনীগন্ধায় অনুষ্টিতব্য ওই সভায় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সভাপতিত্ব করবেন। ওই সভা থেকেই দলের নীতিনির্ধারকদের মতামত নিয়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ চুড়ান্ত করবেন তিনি।
এরপরই আগামী ৮ সেপ্টেম্বর রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আহবান করা হয়েছে জাতীয় পার্টির যৌথ সভা। এতে বিভিন্ন জেলা-উপজেলা-মহানগরসহ দলের অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। যৌথ সভায়ও সভাপতিত্ব করবেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। এই সভা থেকে তৃণমূল নেতাদের নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করাসহ প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেবেন তিনি। সম্ভাব্য প্রার্থীদের গ্রীণ সিগন্যালও দেয়া হবে এই সভা থেকে। এছাড়া পার্টির যেসব জেলা এবং উপজেলায় সম্মেলন এখনও হয়নি, আগামী ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সেগুলোতে সম্মেলন শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।
এ বিষয়ে জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার এমপি বলেন, নির্বাচনের আগ মুহুর্তে আমরা ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একটি মহাসমাবেশ আয়োজনের চিন্তা-ভাবনা করছি। এর মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের দলীয় শক্তিমত্তার বিষয়টি দেশবাসীকে আরও একদফা জানান দিতে চাই। তিনি বলেন, মহাসমাবেশের দিন-তারিখ পার্টি চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ঘোষণা করবেন। আগামী ৮ সেপ্টেম্বর অনুষ্টিতব্য দলের যৌথসভা থেকে তিনি এ ঘোষণা দিতে পারেন। এ মহাসমাবেশ হবে স্মরণকালের মধ্যে বৃহত্তম মহাসমাবেশ।
জাতীয় পার্টিও একাধিক সূত্র জানায়, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয় পার্টিও চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত এইচএম এরশাদ নিজেই তত্ত্বাবধান করছেন। এক্ষেত্রে তাকে সহায়তা করছেন পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার। ইতোমধ্যে দলের সংসদ সদস্যদের যার যার নির্বাচনী এলাকায় আরও বেশি সময় দেওয়ার নির্দেশ দিযেছেন পার্টির চেয়ারম্যান। সংসদ সদস্যদের বাইরে দলের শীর্ষ নেতা এবং সম্ভাব্য প্রার্থীদেরও যার যার এলাকায় যাতায়াত বাড়াতে বলা হযেছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে দল মনোনীত সম্ভাব্য প্রার্থীর একটি খসড়া তালিকা তৈরির কাজ শেষ করেছেন এরশাদ। নির্বাচন উপলক্ষে একটি রোডম্যাপও তৈরি করেছেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় পার্টির মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, আমাদের সামনে এখন একটাই
লক্ষ্য-ছাত্র সমাজের প্রস্তুতি কমিটি
মোড়ল জিয়াউর রহমান’কে আহ্বায়ক এবং ইয়াছিন মিসবাহ’কে সদস্য সচিব করে জাতীয় ছাত্র সমাজের ১৫১ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। জাতীয় ছাত্র সমাজের কেন্দ্রীয় কমিটির মেয়াদ পূর্ণ হওয়ায় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এই আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে দিয়েছেন।
কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক- সুলতান জিসান উদ্দিন প্রধান, জিয়াউল হক জুয়েল, ফয়সাল দিদার দিপু, আব্দুর রহমান রোহান, মোঃ হেলাল আহমেদ তালুকদার, জামাল উদ্দিন, জিয়াউর রহমান জয়, মোখলেছুর রহমান বস্তু, ছাদিকুর রহমান তালুকদার, ইয়াছির আরাফাত আসিফ, নকিবুল হাসান নিলয়, কে.এম সুজন, তরিকুল আলম, মামুনুর রশিদ সনেট, সুলতান আহমেদ সোহাগ, খাজা শফিউল্লাহ দিপু, জুবায়ের আহমদ ও সাব্বির হোসেন বিল্লাল। সদস্য- শরিফুল ইসলাম শিপন, মোস্তাফিজুর রহমান ময়না, নূর মোহাম্মদ, অর্নব চৌধুরী, শরীফ মুহিত মুনিম, জহিরুল ইসলাম মারুফ, ইব্রাহিম খান জুয়েল, শাহ ইমরান রিপন, মহিউদ্দিন সরকার, হাসান মাহমুদ শামীম, সাইফুল সরকার, মিজানুর রহমান মিজান, এরশাদুল বারী নাসিম, তৌহিদুল ইসলাম আনিক, আমিনুল হক মোল্লা, মোজাম্মেল হক বকুল, রফিকুল ইসলাম পিয়াল, বেলাল হোসেন, শাহাজাদা ইমরান, রফিকুল ইসলাম (রফিক), রাশেদুল হক খোকন, হাবিবুর রহমান হাবীব, তনু মোস্তফা, কাজেমুল ইসলাম শাহেদ, নজরুল ইসলাম, ওমর ফারুক ভূঁইয়া সোহেল, শরিফুল ইসলাম পাটোয়ারী, শাহাদাত হোসেন সজিব, কৌশিক আহম্মেদ রাজু, শাহ আনোয়ারুল হক অনু, ওয়াছিকুল্লাহ রাজিব, আফরোজা আক্তার আখি, আরিফুল ইসলাম, সাওগাতুল ইসলাম হিমেল, জসিম উদ্দিন সৈকত, মঈন খান, জাকির হোসেন বাবু, মিলন মোল্লা, আল-আমিন, ইব্রাহীম খলিল, ইউসুফ হোসেন, মাঈন উদ্দিন জসিম, জুলফিকার রায়হান, জাকের উল্লাহ, সালাউদ্দিন খোরশেদ চৌধুরী, আমিনুল ইসলাম আমিন, ইসমাইল রোস্তম, আব্দুল খালেক জুয়েল, আবেদ আলী মিশু, ইমরান শেখ খোকন, নাজমুল হক, ফিরোজ আলম জিসান, জাহেদ আহমেদ, মোবারক হোসেন, মোকাররম হোসেন, শাহরিয়ার পারভেজ ইমন, রাজ্জাকুর ইসলাম রাজ্জাক, সোহাগ খান, আশিকুর রহমান, জিয়াবুল হক, বেলাল হোসেন, অয়ন মাহমুদ, ইফতেখার হোসেন মুক্তার, আমির হামজা, কামাল জাহিদ, আবুল কালাম আজাদ সুজন, কাইছারুজ্জামান হিমেল, এসএম আকরামুল ইসলাম, আল-আমিন, ফছিউল আলম ভূঁইয়া, ছাদিকুর রহমান সোহেল, মনজুরুল আলম মনজুর, খলিল দেওয়ান, আশরাফ খান, মনসুর আহমেদ, রুবেল মাহমুদ, জালাল উদ্দিন, ওয়াজিউল মেহেদী, সাইদুর রহমান মোড়ল, আতিকুজ্জামান চৌধুরী, শহিদুল ইসলাম শান্ত, নাহিদ হোসেন নাজমুল, এস.এম রেজাউল হাসিব, মামুন ফকির, আশিকুজ্জামান খাঁন শাওন, শেখ মাসুম, ওমর ফারুক, সুমন বড়ুয়া, ইমরান আহমেদ, জয়নাল আবেদীন জয়নুল, সুলতান আহমেদ, জাহাঙ্গীর সেলিম, মিলন সরকার, ইমরান কবির হিরা, জাহিদ হাসান পাপন, খন্দকার জুবায়ের, আক্তার হোসেন, সালমান হোসেন, শাহ-আলম সবুজ, শাহাদাৎ হোসেন রুœপু, আরিফুল ইসলাম বাবু, ওমর ফারুক, আশিক রহমান মোস্তোফা, শফিকুল ইসলাম বাপ্পি, মোহাম্মদ শহিদ, রাকিব হোসাইন, মোস্তোফা সুমন, রিপন মন্ডল, স্বপন চৌধুরী, এস.এম জিন্নাহ, জুবায়ের আহমেদ জেমী, শামীম ইসতিয়াক জেম, হযরত আলী সরকার, রশিদুল ইসলাম রশিদ, আরিফ আলী, আমিনুল ইসলাম ছোট, আল-আমিন, ওয়াসিম, আজিজুর রহমান আদিল, নাজমুল ইসলাম জিকু, আল-আমিন হোসেন আবির, গাজী রুহুল আমিন বিপ্লব, জুলফিকার আলী, মিজানুর রহমান সুমন, শেখ শাহিন, কাজী জীবন, মিজানুল ইসলাম অনিক, হাসান আলী বাচ্চু, মাহমুদুল হাসান বাবু, বদিউর রহমান ও আতিকুর রহমান সাগর।
আর তা হচ্ছে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভালো ফলাফল অর্জনের মাধ্যমে জাতীয় পার্টিকে ক্ষমতায় আনা। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর বেশি দেরি নেই। দেখতে দেখতে সময় ঘনিয়ে এসেছে। তাই আমরা এখন নির্বাচনের সর্বাত্মক প্রস্তুতি শুরু করেছি। তিনি বলেন, আপাতত আমরা একভাবেই নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছি। নির্বাচনের শিডিউল ঘোষণার সাথে সাথে যাতে আমরা নির্বাচনী ময়দানে ঝাপিয়ে পড়তে পারি সে অনুযায়ী প্রার্থী তালিকাও প্রায় চুড়ান্ত করা হয়েছে। বলতে গেলে আগামী একাদশ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করা লক্ষে জাতীয় পার্টিও সব ধরণের প্রস্তুতি রয়েছে বলেও তিনি জানান। নয়া দিগন্ত