জিতবে বাংলাদেশ, ২৮ সেপ্টেম্বরে কখনও জেতেনি ভারত!

চলছে এশিয়া কাপ ফাইনালের বাংলাদেশ বনাম ভারত ম্যাচ। ব্যাটিং এ নেমে চমৎকার সূচনা করেছে বাংলাদেশ।

প্রথম বল থেকেই চাপে আছেন রোহিত শর্মারা। তবে মজার ছলে বলুন আর ভাগ্যে বিশ্বাসী হন অনেক ভারতীয় বলছেন আজ ভারত জিতবে না। কারণ আজ ২৮ সেপ্টেম্বর।

ব্যাপারটা অনেকটা আনলাকি থারটিন কিংবা লাকি সেভেনের মতোই। ২৮ সেপ্টেম্বর ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য দুর্ভাগ্যের একটি দিন।

ইতিহাস বলছে, ক্রিকেট ইতিহাসে এদিন ভারত কোনো ম্যাচে জয়লাভ করেনি।

তাহলে কি সপ্তমবারের মতো এশিয়া কাপের শিরোপা ঘরে তুলতে পারবেনা ভারত।?

কাগজে কলমে, মাঠের পারফরম্যান্সে অথবা পরিসংখ্যানে যেভাবেই বলুন ফেভারিটের তকমা ভারতের দিকেই ভারি।

কিন্তু ভারতীয়দের ক্রিকেট ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যাচ্ছে ২৮ সেপ্টেম্বর দিনটিতে তাদের কপালে শুধু পরাজয়ই জুটেছে।

শুধুমাত্র কপাল গুণে একবার বেঁচে গিয়েছিল ভারত এমনই কোনো এক ২৮ তারিখে। তবে এতে ভারতীয়দের খুশি হবার জো নেই। কেননা, ম্যাচটি বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হয়।

অবাক করা বিষয় হল, যে সিরিজে ভারত প্রতিপক্ষকে ধুয়ে দিয়েছে সে সিরিজেও ২৮ তারিখের ম্যাচ হেরেছে ভারত।

আসুন দেখে নিই ২৮ তারিখে ভারত ক্রিকেট দলের পরাজিত ম্যাচগুলোর কথা:

* ১৯৮৪ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর। দিল্লির জওহর লাল নেহেরু স্টেডিয়ামে পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হয় ভারত। স্বাগতিকদের দুর্দান্ত বোলিংয়ের মুখে কেপলার ওয়েলসের ১০৭ রান ও কিম হাউজেসের ৭২ রানের উপর ভর করে নির্ধারিত ৫০ ওভারের আগেই ২২০ রানে অলআউট হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া।

পরে কার্ল রেকম্যান ও টম হগানের বোলিং তোপে গাভাস্কার, শাস্ত্রী, কপিল দেবরা ৪০.৫ ওভারেই ১৭২ রানে অলআউট হয়। শেষ পর্যন্ত ৪৮ রানে পরাজয়ের হতাশা নিয়েই মাঠ ছাড়ে ভারত।

* ১৯৯৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর। হায়দরাবাদের নিয়াজ আহমেদ স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের মুখোমুখি হয় ভারত। টেন্ডুলকার, গাঙ্গুলি, দ্রাবিড়, আজহারউদ্দীন, জাদেজার মতো ব্যাটিং লাইআপ আকিব জাভেদ ও সাকলাইন মুস্তাকের বোলিং তোপে পড়ে নির্ধারিত ৫০ ওভারের আগেই ১৭০ রানে অলআউট হয়ে যায়।

পরে পাকিস্তান সাঈদ আনোয়ারের ৩০, আফ্রিদির ৪৫ ও ইনজামামের ৩৫ রানে ভর করে ৫ উইকেটে জয়লাভ করে। পাকিস্তানের আকিব জাভেদ প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার পান।

* ২০০৯ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর। সেঞ্চুরিয়ানের সুপার স্পোর্টস পার্কে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হয় ভারত।

টিম পেইন ৫৬, পন্টিং ৬৫ ও মাইক হাসির ৬৭ রানে ৪২.৩ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ২৩৪ রান সংগ্রহ করে।

তখনি সেঞ্চুরিয়ানে বৃষ্টি আঘাত হানে। বৃষ্টির কারণে এরপর আর মাঠে নামা হয়নি। শেষ পর্যন্ত আম্পায়াররা ম্যাচটি পরিত্যক্ত করতে বাধ্য হন।
* ২০১২ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর। কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হয় ভারত। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৪০ রান সংগ্রহ করতে সক্ষম হয় তারা।

শেন ওয়াটসনের ৭২ ও ডেভিড ওয়ার্নারের ৬৩ রানে ৫ ওভার আগেই ৯ উইকেটের বিশাল জয় পায় অস্ট্রেলিয়া। অস্ট্রেলিয়ার শেন ওয়াটসন প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার পান।

* ২০১৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর। বেঙ্গালুরুর চিন্নস্বামী স্টেডিয়ামে পাঁচ ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের চতুর্থ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হয় ভারত। ডেভিড ওয়ার্নারের ১২৪ ও অ্যারেন ফিঞ্চের ৯৪ রানে ভর করে অস্ট্রেলিয়া নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৩৩৪ রানের লক্ষ্য দাঁড় করায়।

পরে আজিঙ্কা রাহানে ৫৩, রোহিত শর্মা ৬৫ ও কেদার যাদবের ৬৭ রানের ছোট ছোট ইনিংসগুলো ভারতকে পরাজয়ের হাত থেকে বাঁচাতে পারেনি। অস্ট্রেলিয়ার ডেভিড ওয়ার্নার প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার পান।

অথচ অস্ট্রেলিয়া পাঁচ ম্যাচদিয়েইসিরিজের প্রথম তিন ম্যাচ হেরে হোয়াইটওয়াশের লজ্জার সামনে ছিল। তখন এই ২৮ তারিখেই ঘুরে দাঁড়ায় তারা।

আজ ২০১৮ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর। সংযুক্ত আরব আমিরাতে দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে এশিয়া কাপের ফাইনালে বাংলাদেশের সঙ্গে খেলছে ভারত।

ভাগ্যে বিশ্বাসীদের তাই সেদিকেই প্রশ্ন! আজও কি সেই ২৮ এর দুর্ভাগ্য গড়বে ভারত? না কি দুর্ভাগ্যকে সৌভাগ্যে পরিণত করে সপ্তম শিরোপা ঘরে তুলবে তারা?

তবে ভাগ্য নয় নিজেদের সেরাটা উপহার দিয়েই প্রথমবারের মতো ভারতকে হারিয়ে মরুরবুকে এশিয়া কাপের শিরোপা উঁচিয়ে ধরবে বাংলাদেশ।