ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বৈশাখী তেলপাম্প থেকে মাহতাব উদ্দিন ডিগ্রী কলেজ প্রায় ২ কিলোমিটারের মধ্যে মহাসড়কের দুধারে গড়ে তোলা হয়েছে অর্ধ শতাধিক মটর গ্যারেজ। আর এই সব গ্যারেজ মালিক তাদের গ্যারেজে ট্রাক/বাস না নিয়ে মহাসড়কের উপরই মেরামত করছে। যার কারনে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। দীর্ঘক্ষণ যানজটে পড়ছে যাত্রীবাহী ও পন্যবাহি যানবহন।
এছাড়াও বৈশাখী তেলপাম্পের সামনে ভুষন হাইস্কুল সড়কের প্রবেশ মুখে স্থাণীয় মটর গ্যারেজ মালিকরা ট্রাক রেখে মেরামত করায় সেখানেও দুর্ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা আইন শৃংখলা মিটিংয়ে বেশ কয়েকবার আলোচনা করা হলেও মহাসড়ক দখল যেন দিন দিন বাড়ছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, কালীগঞ্জ-ঝিনাইদহ মহাসড়ক একটি ব্যস্ততম সড়ক। এই সড়ক দিয়ে হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করে। আর এই সুযোগে বৈশাখী তেলপাম্প থেকে মাহতাব উদ্দিন ডিগ্রী কলেজ পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটারের মধ্যে অর্ধশতাধিক যানবাহন মেরামতের জন্য তৈরি হয়েছে গ্যারেজ। কোন কোন গ্যারেজে আবার গাড়ির বডিও তৈরি করা হচ্ছে। আর এই গ্যারেজগুলোর সামনে পর্যাপ্ত যায়গা না থাকায় তারা কালীগঞ্জ-যশোর মহাসড়কের উপরেই নষ্ট যানবাহন রেখে দীর্ঘক্ষণ ধরে মেরামত করছে। কোন কোন গ্যারেজের সামনের রাস্তায় বেশ কয়েকদিন ধরে নষ্ট ট্রাক রেখে রাস্তার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়েছে। এতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে এই সড়ক দিয়ে চলাচলকৃত যাত্রীবাহী বাস ও ট্রাকসহ অন্যান্য যানবাহনের যাত্রীরা। রাস্তার উপর যানবাহন রেখে মেরামত ও কোন সংকেত না দিয়েই যানবাহন ঘুরানোর সময় প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা।
বৈশাখী তেলপাম্প এলাকার বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, বৈশাখী তেলপাম্প থেকে নলডাঙ্গা ভুষণ হাইস্কুল হয়ে বাজার রোডের বৈশাখী মোড়টি দখল করে রেখেছে স্থানীয় কয়েকজন মটরগ্যারেজ মালিক। তারা তাদের গ্যারেজে গাড়ি না ঢুকিয়ে ঐ সড়কের মুখেই গাড়ি মেরামত করছে। যার কারনে কেউ ভুষণ সড়ক দিয়ে বৈশাখী তেল পাম্প এলাকায় ঢুকতে গেলে মহাসড়ক দেখা যায় না। এর ফলে ঘটছে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা। গত এক সপ্তাহে এই মোড়ে প্রায় ৫টি দুর্ঘটনা।
বিষয়টি নিয়ে এর আগেও কালীগঞ্জ উপজেলা আইন শৃংখলা মিটিংয়ে বেশ কয়েকবার আলোচনা করা হয়েছে। সাবেক উপজেলা নির্বাহী অফিসার মানোয়ার হোসেন মোল্লা, ছাদেকুর রহমান, উত্তম কুমার রায় কয়েকটি ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করলেও মহাসড়ক দখল বন্ধ করা যায়নি। ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করার ঘন্টা খানেক পরেও আবার গ্যারেজ মালিকরা রাস্তার উপর গাড়ি রেখে মেরামত করতে দেখা গেছে।
এছাড়াও মহাসড়কের দখল মুক্ত করতে এর আগে সাবেক ইউএনও ছাদেকুর রহমান মটর মালিক ও গ্যারেজ মালিকদের সাথে বৈঠকও করেছিলেন। তাকেও কাজ হয়নি। তবে কালীগঞ্জ বাসী তাকিয়ে আছে নবাগত উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুর্বনা রানী সাহা , কালীগঞ্জ থানার নতুন ওসি ইউনুচ আলী ও পৌরসভার প্যানেল মেয়র আশরাফুল আলম আশরাফের দিকে।
এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ পৌরসভার প্যানেল মেয়র আশরাফুল আলম আশরাফ জানান, বিষয়টি নিয়ে তিনি গত আইন শৃংখলা মিটিংয়ে আলোচনা করেছেন। এ বিষয়ে আইন শৃংখলা মিটিংয়ে উপস্থিত সকলেই একমত হয়েছেন এবং মহাসড়ক দখল করে গড়ে ওঠা গ্যারেজ মালিকদের সাথে আলোচনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। খুব শিঘ্রই গ্যারেজ মালিক ও মটর মালিকদের সাথে উপজেলা মতবিনিময় করা হবে এবং মহাসড়ক মুক্ত করা হবে।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুর্বনা রানী সাহা জানান, আমি এই উপজেলায় দায়িত্ব নেবার পর একটি আইন শৃংখলা মিটিংয়ে অংশ নিতে পেরেছি। তবে সেই মিটিংয়েও এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। আমরা আগামী অক্টোবর মাসে মটর মালিক ও গ্যারেজ মালিকদের নিয়ে একটি মত বিনিময় সভা করবো এবং সড়ক দখলমুক্ত রাখতে অনুরোধ করবো। এর পর তারা যদি আইন ভঙ্গ করে তাহলে অবশ্যই আগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।