ফাঁদে পা না দেয়ার বার্তা বিএনপি’র

একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়কে কেন্দ্র করে কোনো ফাঁদে পা না দিতে দলের নেতাকর্মীদের প্রতি নির্দেশনা দিয়েছেন বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব। বলেছেন, একুশে আগস্ট মামলার রায়কে সামনে রেখে পুরো জাতি প্রত্যাশা করেন ন্যায়বিচার। জনগণ প্রত্যাশা করে এই মামলায় কোনো ফরমায়েশি রায় ঘোষিত হবে না। সেই সঙ্গে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে সকল পর্যায়ের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের দেয়া হয় কয়েকটি পরামর্শ। বলা হয়, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রাখুন। এই সংকটময় মুহূর্তে ধৈর্যের সঙ্গে মোকাবিলা করুন। বিচক্ষণতার সঙ্গে সিদ্ধান্ত নিন। কারও পাতা ফাঁদে পা দেবেন না। ঐক্য বিনষ্ট করতে এবং বিশ্বাসে চিড় ধরাতে নানা রকম ফাঁদ পাতা হয়েছে। তাই সাহস এবং সতর্কতার সঙ্গে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে প্রস্তুত থাকতে হবে।

শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে ঐক্যবদ্ধভাবে স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের পক্ষে সকল শক্তিকে সঙ্গে নিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনকে সফল করার আহ্বান জানানো হয়। বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে বলা হয়, বর্তমান সরকার আইন আদালতকে ব্যবহার করে যাই করুক বা যাই বলুক তথ্যউপাত্ত এবং বাস্তবতা প্রমাণ করে এই জঘন্য হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে বিএনপির কোনো পর্যায়ের কেউ জড়িত নয়। কেন জড়িত নয় এর অনেকগুলো সুনির্দিষ্ট কারণ ও প্রমাণ রয়েছে। এই ঘটনায় বিএনপিকে জড়ানো সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক। কারণ ওই জনসভার হামলা থেকে বিএনপির কিছুই পাওয়ার নেই। যার কারণ বিএনপি তখন ক্ষমতায়।

আওয়ামী লীগের মতো একটি দলের সমাবেশে হামলা চালিয়ে বিএনপি কেন নিজেই নিজের সরকারকে অস্থিতিশীল করবে? একটি পরিস্থিতিতে তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে এই মামলার রায় ঘোষণার। আদালত রায় দেয়ার তারিখ নির্ধারণ করলেও এর আগেই শেখ হাসিনা এবং তার দলের নেতাকর্মীরা মামলার রায় দিয়েছে। হয়তো দেখা যাবে, নির্দিষ্ট বিচারক আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দেয়া রায় যথানিয়মে পড়ে দিয়েছেন। তবে দেশ ও জনগণের স্বার্থে যেকোনো ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় প্রস্তুত বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে বলা হয়, দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করতে গেলে বিপদ আসবেই। কিন্তু দেশ ও জনগণের স্বার্থে বিএনপি যেকোনো ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় প্রস্তুত।

দেশের গণতন্ত্রকামী জনগণ ও সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়েছে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব। বলেছে, তাদের ধন্যবাদ জানাই- যারা এই অবৈধ সরকারের সব রকম গুম-খুন অত্যাচার নির্যাতন জেল-জুলুম হয়রানি উপেক্ষা করেও একটি সাম্য, মানবিক মর্যাদা সম্পন্ন সমাজ প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে অবিচল। বিশেষ করে সারা দেশের তৃণমূল পর্যায়ের জনগণের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা। যারাই প্রকৃত অর্থে বাংলাদেশের প্রাণশক্তি।

এদিকে একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়কে কেন্দ্র করে কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি দেয়নি বিএনপি। দলটির কেন্দ্রীয়, জেলা ও তৃণমূল পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিশেষ কোনো আন্দোলন কর্মসূচির নির্দেশনাও তারা পাননি।

তবে তৃণমূল নেতারা জানান, মামলায় যদি বিএনপি নেতাদের জড়িয়ে কোনো উদ্দেশ্যমূলক ফরমায়েশি রায় আসে তবে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ করবে বিএনপি ও অঙ্গদলের নেতাকর্মীরা। সে বিক্ষোভের সিদ্ধান্ত স্থানীয় পর্যায়ের নেতারাই নেবেন।

দলের কেন্দ্রীয় নেতারা জানান, আন্দোলন কর্মসূচি দিয়ে আর কোনো লাভ নেই। এখন তারা আগামী জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ৭ দফা ও ১২ লক্ষ্য অর্জনে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার চূড়ান্ত কাঠামো ঠিক করে ইতিবাচকভাবে কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে এগিয়ে নিতেই সবচেয়ে বেশি মনোযোগী। এটা অর্জন হলেই বিএনপিসহ সকল বিরোধী রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে সকল অনিয়ম-অবিচারের ইতি ঘটবে। সূত্র: মানবজমিন