বাবরসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড, তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন

২০০৪ সালের ২১শে অগাস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলার সাথে জড়িত থাকার দায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর এবং আব্দুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে ঢাকার একটি আদালত।

রায়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত তারেক রহমান ও হারিছ চৌধুরিসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে।

বুধবার বেলা ১২ টায় ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইবুন্যালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন এই রায় ঘোষণা করেন। এই মামলায় চেয়ারপার্সন তারেক রহমান এবং সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ৪৯ জনকে আসামি করা হয়।

তাদের মধ্যে ৪১ জনের সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়েছিলেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা।

আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ২০০৪ সালের ২১ শে অগাস্ট শনিবার গ্রেনেড হামলা চালানো হয়।

সেদিন বিকেলে ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশে একটি ট্রাকে তৈরি করা অস্থায়ী মঞ্চে দলের প্রধান এবং তখনকার বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনা বক্তৃতা শেষ করার পরই গ্রেনেড হামলা হয়।

সেই ঘটনায় আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। আহত হন শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের কয়েক শ নেতা-কর্মী।

ওই হামলার ঘটনায় দুইটি মামলা করা হয়, একটি হত্যা মামলা এবং একটি বিস্ফোরক আইনের মামলা।

মামলায় মোট আসামি ৪৯ জন, এর মধ্যে কারাগারে রয়েছেন ৩১জন। রাষ্ট্রপক্ষে সাক্ষী দিয়েছেন ২২৫ জন মানুষ।

অন্যদিকে, আসামি পক্ষে সাক্ষী দিয়েছেন ২০ জন।

মামলা দুটির বিচারকাজ এ বছরের ১৮ই সেপ্টেম্বর বিচারিক আদালতে শেষ হয়েছে।

গ্রেনেড হামলার সময় এবং তারপরের তদন্ত নিয়ে পুলিশের নিস্ক্রিয়তায় প্রশ্ন উঠেছিল তৎকালীন বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে।

জজ মিয়া নামের এক ব্যক্তিকে দিয়ে গ্রেনেড হামলার বিষয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয়ার বিষয়টি ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছিল।

২০০৭ সালের সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ওই হামলার ঘটনায় পুনরায় তদন্ত হয়।

সেখানে নিষিদ্ধ সংগঠন হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি আবদুল হান্নান এবং তৎকালীন বিএনপি সরকারের উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুর নাম আসে।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে পুনরায় তদন্ত হয়।

ঐ তদন্তে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছেলে ও বিএনপি’র অন্যতম শীর্ষ নেতা তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর সহ বেশ কয়েকজন পদস্থ সামরিক কর্মকর্তা এবং পুলিশের সাবেক তিনজন মহাপরিদর্শক বা আইজিপি’র নাম আসে।

বিএনপি অবশ্য এই তদন্তকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক’ বলে বর্ণনা করে।

তদন্তে বেরিয়ে আসে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ওই হামলা চালানো হয়েছিল।

হামলায় ব্যবহৃত আর্জেস গ্রেনেড এসেছিল পাকিস্তান থেকে।