পিলখানার ঘটনার সময় খালেদা কেন ২৪ ঘণ্টা নিখোঁজ ছিলেন: কাদের

ফাইল ছবি

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার আসামিদের মতো ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানার ঘটনায় হত্যায় জড়িতদের পালিয়ে যেতে সহায়তা করেছে বিএনপির নির্ধারিত একটি টিম। বিএনপির নেত্রী খালেদা জিয়া ২৫ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে সাতটা থেকে প্রায় চব্বিশ ঘণ্টা নিখোঁজ ছিলেন। তিনি এই সময় কোথায় ছিলেন?’

শনিবার (১৩ অক্টোবর) সকালে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের কাঁচপুরে চট্টগ্রাম-সিলেট মহাসড়কের সংযোগ সড়ক উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।

কাদের বলেন, ‘পিলখানায় হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়েছে, কেউ প্রশ্ন তোলেনি। আজ বিএনপি সেখানেও তাদের মুখের বিষ ঢেলে দিচ্ছে। তারা বলছে, সরকারি নাকি দায়ী। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে জানতে চাই ২৫ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৭টায় বাড়ি ছেড়ে কোথায় পালিয়ে গিয়েছিলেন বিএনপির নেত্রী। ২৪ ঘণ্টা হারানো বিজ্ঞপ্তির পার্যায়ে তিনি ছিলেন। কেন? ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার আসামিদের মতো পিলখানা হত্যাকাণ্ডের আসামিদেরও পালিয়ে যেতে সহায়তা করতে বিএনপির নেতৃত্বাধীন একটি টিম নিয়োজিত ছিল। এটা আমার সাজানো কথা নয়। যিনি সকাল ১১টার আগে ঘুম থেকে ওঠেন না, তিনি কেন সকাল সাড়ে ৭টায় বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেলেন। কেঁচো খুড়তে চান, কেঁচো খুড়তে গিয়ে বিষধর সাপ বেরিয়ে আসবে। সেই সাপে আপনাদেরই দংশন করবে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কানাডা ও দেশের অভ্যন্তরীণ আদালতে রায়ের মাধ্যমে ইতোমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে বিএনপি একটি আর্ন্তজাতিক সন্ত্রাসী দল। তাদের কোনও নীতি নৈতিকতা ও আদর্শ নেই। তারা এখন বেসামাল হয়ে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়কে কেন্দ্র করে পিলখানার হত্যাকাণ্ড টেনে সরকারের বিরুদ্ধে তথাকথিত সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তুলছে।’

তিনি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামকে সর্তক করে বলেন, ‘শালীনতা বজায় রেখে কথাবার্তা বলা উচিত। শালীনতার সীমারেখার বাইরে যাওয়া উচিত নয়। বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিএনপি একটি বিষফোঁড়া। যাদের রাজনৈতিক হাতিয়ার হচ্ছে সন্ত্রাস। যারা পলিটিক্স ও ভায়োলেন্সকে একত্রিত করে ফেলেছে। ২১ আগস্ট হত্যা মামলার রায় হওয়ার পর তারা আসলেই ধরা পড়ে গেছে। সত্যকে আড়াল করার জন্য মুখের বিষ ও গলার জোর দিয়ে আবোল তাবোল বলছে।’

আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, ‘সর্বশেষ তাদের মুখের বিষ এসে পড়ছে স্বাধীনতা সবোভৌমত্বের প্রতীক বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ওপর। সেনাপ্রধানের মতো স্পর্শকাতর জায়গায়ও তাদের মুখের বিষ এসে ঝড়ে পড়ছে। তারা এখানেও হাত দিয়েছে। তাদের বুদ্ধিজীবী এক নেতা সেনাপ্রধানকেও আক্রমণ করতে ছাড়েননি। পরে আবার স্লিপ হয়ে গেছে বলেও মন্তব্য করেন। এ ধরনের মন্তব্য অত্যন্ত বিপজ্জনক। সেনাপ্রধান সম্পর্কে না জেনে মিথ্যা বানোয়াট অসত্য মন্তব্য আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্যাহার করতে হবে। অন্যথায় এর জন্য বিএনপিকে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমি অবাক হচ্ছি যারা নীতি নৈতিকতা ও গণতন্ত্রের কথা বলে তারা খুনি ও সন্ত্রাসী দলের সঙ্গে তথাকথিত জাতীয় ঐক্য করতে যাচ্ছে।’ তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘২১ আগস্ট মাস্টারমাইন্ড হিসেবে যাবজ্জীবন কারাদাণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন। এই রায়ের পর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বেপরোয়া বাসের চালকের চেয়েও বেশি বেপরোয়া বক্তব্য দিতে শুরু করেছেন।’

এসময় উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন, সড়ক ও জনপথ বিভাগের ঢাকা বিভাগীয় অতিরিক্ত প্রকৌশলী আব্দুস সবুর, হাইওয়ে পুলিশের ডিআইজি আতিকুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান, নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আলীউল হোসেনসহ কাচঁপুর সেতু নির্মাণ কাজে নিয়োজিত জাপানের প্রকৌশলীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।