নির্বাচন কমিশন নিরাপত্তা পরিষদ নয়: ওবায়দুল কাদের

ফাইল ছবি

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে ইঙ্গিত করে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নির্বাচন কমিশন নিরাপত্তা পরিষদ না যে, পাঁচ জনের সম্মতি না হলে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না।

তিনি বলেন, ‘নিরাপত্তা পরিষদে পাঁচ জন স্থায়ী সদস্য আছেন, তারা একমত না হলে ‘মেজর’ কোনও সিদ্ধান্ত নিরাপত্তা পরিষদ নিতে পারে না। এখানে অধিকাংশ সদস্য একমত হলেই সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে।’

মঙ্গলবার বনানীতে নির্মিত বিআরটিএ’র নতুন ভবন পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দেওয়ার বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের মত জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যিনি নোট অব ডিসেন্ট দিলেন বা বেরিয়ে গেলেন, সার্চ কমিটির মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি যে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করেছিলেন, সেখানে মাহবুব তালুকদার বিএনপির মনোনীত ব্যক্তি হিসেবে নির্বাচন কমিশনে এসেছেন। এটা আমি শুধু স্মরণ করিয়ে দিতে চাই। তার সম্পর্কে কোনও বিরূপ মন্তব্য করতে চাই না। তবে একজন বিরোধিতা করেন, এটাও গণতন্ত্র। এটা অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র। একজনের ভিন্নমত পোষণ করার অধিকার আছে।’

নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের বিষয়ে বিএনপির দাবি প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের একজন সদস্য নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছেন, এটা কোনও বাধা না এবং এটা কোনও প্রতিবন্ধকতা নয়। তবে এটা নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের জন্য অযৌক্তিক।’

এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়, বরং শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে হটানোর জন্য ড. কামাল হোসেন বিএনপিকে নিয়ে ঐক্য করেছেন। আসলে শেখ হাসিনাকে হটানোর জন্য তারেক জিয়ার নেতৃত্ব মেনে নিতেও তার কোনও আপত্তি আছে বলে মনে করি না। কারণ, এই ধরনের ঐক্য আসলে কে চালাবে? মূল দল হচ্ছে বিএনপি। আর বিএনপি চালায় কে? তারেক রহমানের অঙ্গুলি হেলনেই চলবে এটা। লন্ডন থেকে দলেরও নেতৃত্ব দিচ্ছে এবং এই জোটের নেতৃত্বের কলকাঠি নাড়বেন তারেক রহমান। ড. কামাল হোসেন এটা নিজে ভালো করেই জানেন।’

তিনি বলেন, ‘জাতীয় ঐক্যের (ঐক্যফ্রন্ট) যে ফরমেশন এবং এখানে যেভাবে ঐক্য প্রক্রিয়া, প্রথমে যুক্তফ্রন্ট পরে যুক্তফ্রন্ট বাদ দিয়ে ঐক্য ফ্রন্ট। আসলে যুক্তফ্রন্টকে সুকৌশলে বের করে দেওয়া হয়েছে। যুক্তফ্রন্ট এখানে থাকুক এটা বিএনপির জন্য খুব স্বস্তিদায়ক ছিল না। কারণ, বদরুদ্দোজা চৌধুরী বিএনপির সময়ে রাষ্ট্রপতি ছিলেন। তার সঙ্গে বিএনপির অস্বস্তি ছিল। এ ধরনের ঐক্যে সারভাইবালের সংকট দেখা দেবে তাড়াড়াড়ি। এটা একটা ভাঙনপ্রবণ ইউনিটি।’ এখানে তেলে আর পানিতে মেশানোর যে অপচেষ্টা, সেটা অচিরেই ব্যর্থ হবে বলে মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের।

বিকল্প ধারা যদি আওয়ামী লীগের নির্বাচনি মহাজোটে আসতে চায়, এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এটা আমাদের ওয়ার্কিং কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে। জোটের সমীকরণ, পোলারাইজেশন এসব বিষয় নিয়ে শেষ পর্যন্ত পোলারাইজেশন কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে বলা মুশকিল। দলের সিদ্ধান্ত ছাড়া অ্যালায়েন্সের ব্যাপারে আমরা অগ্রসর হতে পারি না। ইলেকশন বিষয়ে রিলেটেড সব ওয়ার্কিং কমিটিতে আলোচনা হবে এবং সিদ্ধান্ত হবে।’

ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্টকে সরকার কিভাবে দেখছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা এনিয়ে চিন্তা করি না। আমাদের কোনও দুঃশ্চিন্তা কখনও ছিল না। এখনও নেই।’