বিদ্রোহী প্রার্থী হলে আওয়ামী লীগ থেকে আজীবন বহিস্কার

আগামী জাতীয় নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে কেউ বিদ্রোহী প্রার্থী হলে তাকে দল থেকে আজীবন বহিস্কার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আওয়ামী লীগ। শুক্রবার রাতে আওয়ামী লীগের যৌথসভায় এমন কঠোরবার্তা জানিয়ে দেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা । কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ, উপদেষ্টা পরিষদ ও আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সদস্যদের নিয়ে এই যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় তফসিল ঘোষণার পর দলীয়ভাবে প্রথমে ৩০০ আসন, পরে জোটের অন্যান্য শরীকের সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত আসন বন্টনের সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়া বামগণতান্ত্রিক জোট, ইসলামী ফ্রন্ট ও জাকের পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আওয়ামী জোটে আসার আবেদনের বিষয়ে দলের কার্যনির্বাহী সংসদকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয় সভায়। আল্লামা আহমেদ শফীর নেতৃত্বাধীন কওমী আলেমদের নিয়ে কোনো মন্তব্য না করার বিষয়ে যৌথসভায় নির্দেশনা দেওয়া হয়। প্রতিটি নির্বাচনি আসন থেকে তিনজন এজন্টকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার বিষয়েও সভায় ঐক্যমত হয়।

শুক্রবারের যৌথসভায় উপস্থিত একাধিক সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘নির্বাচনে দল থেকে যাকেই মনোনয়ন দেওয়া হবে, তার পক্ষে সবাইকে কাজ করতে হবে। যদি কেউ দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়, তাহলে পূর্বে ছাড় পেলেও এবার তাকে কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না। আওয়ামী লীগ থেকে আজীবনের জন্য তাকে বহিস্কার করা হবে।’

সব নির্বাচনি আসনের দলীয় সংসদ সদস্য ও মনোনয়ন প্রার্থীদের সব তথ্য তাঁর হাতে এসেছে বলে বৈঠকে জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি জানান, শুক্রবার ফজরের নামাজের পরে তিনি ২০টির মতো গোয়েন্দা ও জরিপ রিপোর্ট খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখেছেন। এর আগে ৬০ থেকে ৭০ টির মতো রিপোর্ট দেখছেন বলেও উল্লেখ করেন। যেসব মনোনয়ন প্রার্থী নিজেকে জাহির করতে দলীয় সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়েছেন, তাদের রিপোর্টও তার কাছে আছে বলে জানান। এ ধরনের কাউকেই মনোনয়ন না দেওয়ার বিষয়ে কঠোর মনোভাব দেখান তিনি।

বৈঠকের এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সম্পর্কে কওমি আলেমদের একটা ভুল ধারণা ছিল। আমরা তাদের সেই ভুল ধারণা ভেঙে দিতে পেরেছি। তারা এখন আওয়ামী লীগের সুনাম করে। আমার বিশ্বাস আগামীতে কওমি মাদ্রাসার আলেমদের ভোট আমরা পাব। কিন্তু নির্বাচনের পূর্বে অনেকেই চেষ্টা করবে, তাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সম্পর্কের দূরত্ব তৈরির। ১৪ দলের কোনও নেতার কোনও বক্তব্যে যেন এমন কিছু বলা না হয়, যাতে করে কওমি আলেমদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কে ফাটল ধরে। এজন্য সবাইকেই সতর্ক থাকতে হবে।’