সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা মইনুল হোসেনের স্বাস্থ্য ‘জরুরি ভিত্তিতে’ পরীক্ষা করে আগামী রোববারের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।
রংপুরের কারা কর্তৃপক্ষ এবং রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মইনুল হোসেনের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত দুটি রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের হাই কোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেয়।
রোববার এ মামলা আবার শুনানির জন্য উঠবে জানিয়ে আদালত সরকারকে বলেছে, ওই সময়ের মধ্যে রংপুর থেকে অন্য কোনো জেলায় মইনুল হোসেনকে স্থানান্তর করতে হলে তাকে যথাযথ নিরাপত্তা দিতে।
মইনুল হোসেনের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মাসুদ রানা। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী জিনাত হক।
আইনজীবী মাসুদ রানা পরে সাংবাদিকদের বলেন, “রংপুরের আদালতে হাজির করার সময় পুলিশ কাস্টডিতে থাকা মইনুল হোসেনের ওপর যেভাবে আক্রমণ করা হয়েছে, তাতে নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তাছাড়া ওই আক্রমণের সময় তার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি ঘটেছে।”
এসব বিষয় উল্লেখ করে মইনুল হোসেনের স্ত্রী সাজু হোসেন বুধবার দুটি রিট আবেদন করেন। তার প্রাথমিক শুনানি নিয়েই আদালত বৃহস্পতিবার অন্তবর্তীকালীন আদেশ দিয়েছেন বলে জানান মাসুদ রানা।
রংপুর আদালতে হাজির করার সময় মইনুল হোসেনের যথাযথ নিরাপত্তা দিতে কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না এবং ভবিষ্যতে মইনুল হোসেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না- তা জানতে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছিল সাজু হোসেনের একটি রিটে।
আর মইনুল হোসেনকে ঢাকায় বিশেষায়িত হাসপাতালে ভর্তি করে উপযুক্ত চিকিৎসা দেওয়ার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না- সেই মর্মে রুল ও নির্দেশনা চাওয়া হয়েছিল অন্য রিটে।
প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আদালত রুল না দিয়ে মইনুল হোসেনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে রোববারের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলেছে। পাশাপাশি তার যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলেছে সরকারকে।
গত ১৬ অক্টোবর একাত্তর টিভির এক আলোচনা অনুষ্ঠানে সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টিকে ‘চরিত্রহীন’ বলার পর থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থানে একের পর এক মামলা হচ্ছে ব্যরিস্টার মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে, যিনি কামাল হোসেনের উদ্যোগে বিএনপিকে নিয়ে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে সক্রিয় ছিলেন।
এর মধ্যে রংপুরের আদালতে মানহানির এ মামলাটি দায়ের করেন মিলি মায়া নামের এক মানবাধিকারকর্মী। মামলার আর্জিতে ১০ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ দাবি করেন তিনি।
এ মামলায় গত ২৩ অক্টোবর রাতে ঢাকার উত্তরা থেকে মইনুলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ৪ নভেম্বর তাকে রংপুরে নেওয়া হলে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা আদালত প্রাঙ্গণে তার দিকে ইট, জুতা ও ডিম নিক্ষেপ করে।
মইনুলের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন স্থানে দায়ের হওয়া ২২টি মামলার মধ্যে ২০টি মানহানির মামলা, বাকি দুটি মামলা হয়েছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে।