নড়াইলে এক খন্ড বাংলাদেশ দেখতে চান ফকির শওকত

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নড়াইল-২ (লোহাগড়া-সদরের একাংশ) আসনে লড়ছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি’র মনোনিত প্রার্থী সাংবাদিক ফকির শওকত আলী।

তাঁর প্রার্থীতার ব্যাপারে আলাপচারিতায় তিনি স্বাধীন বাংলাদেশ রচনায় নড়াইলবাসীর গৌরবোজ্জল ভূমিকা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে বলেন, নড়াইলকে এখানকার কোন রাজনৈতিক নেতৃত্ব গভির ভাবে দেখেননি চোখের সামনেই কিভাবে নড়াইলের গৌরব উজ্জল অতীত ও প্রকৃতি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, আমি আমার সাংবাদিকতার পর্যবেক্ষনে দেখেছি বাংলার প্রকৃতির শ্রেষ্ঠতম লীলাভূমি নড়াইল। নড়াইলের নদী, খাল, বিল, জলাশয়, ভূমি, নৌ-যোগাযোগ মৎস্যসম্পদ ও তার ইকোসিষ্টেম, বিশ্ব ব্যাংক পরিচালিত পানি উন্নয়ন বোর্ড তথা মুনাফালোভী গোষ্ঠীর নির্মিত বেড়িবাধ, স্লুইচগেট ইত্যকার প্রকল্পের কারণে এর প্রকৃতি আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।

তিনি বলেন, আমি এই প্রকৃতি বিনাশী উন্নয়নের বিরোধী। কিন্তু শুধু কলম দিয়েই এই ধ্বংস রোধ করা সম্ভব না। এর জন্য দরকার রানৈতিক শক্তি। সে কারণে আমার প্রার্থী হওয়া।

তিনি তার নির্বাচনী ইসতেহারের কথা উল্লেখ করে বলেন, আমি নির্বাচিত হলে তথাকথিত উন্নয়নের নামে যে বাংলা হারিয়ে যাচ্ছে তার মাঝে নড়াইলেই এক খন্ড বাংলাদেশ খুজে পাওয়া যায় সে চেষ্টাই করবো।

তিনি তার নির্বাচনী ইশতেহারে নড়াইলের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের কথা তুলে ধরে বলেছেন- এস এম সুলতান, বিজয় সরকার, রসরাজ তারক সরকার, জারি সম্রাট মসলেম বয়াতির মরমী ও মহান ভাবধারা আমাদের হৃদয়ে বহমান। নানান মতভেদের মধ্যেও আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য অটুট। এই মাটিতে জন্মে তিনি নিজেকে ধন্য ও গর্বিত মনে করেন।

নির্বাচনী ইশতেহারে তিনি ১৭ টি দফা দিয়েছেন। নির্বাচিত হলে এগুলো বাস্তবায়নে তিনি ওয়াদাবদ্ধ। তার ইশতেহার বাস্তবায়নে নড়াইল-২ আসনের ভোটারদের “তারা মার্কায়” ভোট ও নড়াইলবাসীর দোয়া কামনা করেছেন।

তার ১৭ দফা ইশতেহারে যা যা আছে:

১। লোহাগড়া বাজার থেকে বড়দিয়া বন্দর পর্যন্ত নবগঙ্গা নদী খনন করে নাব্যতা ফিরিয়ে আনা।

২। নৌ-যোগাযোগ বৃদ্ধি, প্রাকৃতিক মৎস্য সম্পদ বৃদ্ধি, কৃষি জমির উর্বরতায় পলি (ভারা) প্রবাহ, সেচ, পাটজাগ ও অন্যান্য কাজের জন্য নদীগুলোর সাথে খাল বিল ও গ্রামের সংযোগ পুনঃস্থাপন করতে, বেড়িবাধ ও স্লুইচগেট অপসারণে প্রকৃতি সম্মত জনবান্ধব প্রকল্প গ্রহণ করা।

৩। নড়াইলকে আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন অঞ্চলরূপে প্রতিষ্ঠা করা।

৪। বড়দিয়া, লোহাগড়া-লক্ষীপাশার বাণিজ্যিক গৌরব ফিরিয়ে আনা।

৫। কালনায় মধুমতির পাড়ে একটি পরিবেশসম্মত আধুনিক নৌ-বন্দর স্থাপন করা।

৬। নড়াইলে একটি সাংস্কৃতিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা।

৭। একটি ক্রীড়া ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করা।

৮। মৎসজীবী, বারুজীবী, কুমোর ইত্যাদি পেশাজীবী ও পেশাভিত্তিক সম্প্রদায়ের জীবন-জীবিকার মান উন্নয়নে বাস্তব সম্মত কর্মসূচি গ্রহণ করা।

৯। সরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক সমূহে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা ও মান বাড়ানো।

১০। সমগ্র নড়াইলকে ফ্রি ওয়াইফাই জোনের আওতায় আনা।

১১। নড়াইলের কৃষিজাত পণ্য বিদেশে রপ্তানীর ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।

১২। নড়াইলের ঐতিহ্যবাহী জারী, ধুয়া, মুর্শিদী, কবিগান, নৌকা-বাইচ, লাঠিখেলা, ঘোড়দৌড়সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও বিনোদনমূলক কর্মসূচিকে অগ্রাধিকার দেওয়া।

১৩। নারীর অর্থনৈতিক স্বয়ংসম্পুর্ণতার লক্ষ্যে তিনটি মেগাপ্রকল্প নেয়া।

১৪ । নড়াইলের কৃষিভূমিকে বিষমুক্ত কৃষি জোনে রূপান্তর করা।

১৫। উপ-মহাদেশে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় মাল্টিন্যাশনাল সিটিজেন ব্যবস্থা চালু করার জন্য কাজ করা।

১৬। জাতি-ধর্ম-বর্ণ ও ধন বৈষম্যহীন একবিশ্বব্যবস্থার পক্ষে লড়াই জারি রাখা।

১৭। জেএসডির ১০ দফার বাস্তবায়নে কাজ করা।