বাংলাদেশে আরও রোহিঙ্গা ফেরত পাঠাচ্ছে সৌদি আরব

সৌদি আরব রোহিঙ্গাদের আটক করে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো অব্যাহত রেখেছে। দেশটি এবার অবৈধভাবে থাকা ২৫০ রোহিঙ্গাকে আটক করে বাংলাদেশে ফেরতের পরিকল্পনা নিয়েছে। এদের ফেরত পাঠানো হলে চলতি বছরে এটি হবে রোহিঙ্গা ফেরতের দ্বিতীয় ঘটনা।

রোহিঙ্গা অ্যাক্টিভিস্টদের একটি গ্রুপের বরাত দিয়ে আল জাজিরা গতকাল এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে। এসব রোহিঙ্গাকে আটক করে এরই মধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রে রেখেছে সৌদি আরব। আটক রোহিঙ্গাদের আশঙ্কা, বাংলাদেশে ফেরত পাঠালে তাদের কারাগারে পাঠানো হতে পারে।

এর আগে গত ৭ জানুয়ারি সৌদি আরব ১৩ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠায়। ওই দিন রাত স্থানীয় সময় রাত দুইটার দিকে সৌদি এয়ারলাইন্সে করে তারা ঢাকায় পৌঁছায়। পরে তাদেরকে ইমিগ্রেশন পুলিশের হেফাজতে রাখা হয়।

নায় সান লুইন নামের একজন অ্যাক্টিভিস্ট আল জাজিরাকে জানান, সৌদি আরবে অন্তত ৩ লাখ রোহিঙ্গা বাস করছেন। এসব রোহিঙ্গারা সৌদি কর্তৃপক্ষের কাছে আটক রোহিঙ্গাদের ফেরত না পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

সান লুইন বলেন, ‘সৌদি আরবে বেশিরভাগ রোহিঙ্গারই বৈধভাবে বসবাসের অনুমতি রয়েছে। কিন্তু দেশটি জেদ্দার শুমাইসি কারাগারে বন্দি রোহিঙ্গাদের সঙ্গে অপরাধীর মতো আচরণ করা হচ্ছে।’

একটি ভিডিও অনুসারে, কয়েক বছর আগে বিভিন্নভাবে সৌদি আরব যাওয়া এসব রোহিঙ্গাদের গত রবিবার জেদ্দার একটি কারাগারে নেওয়া হয়েছে। তাদের যে কোনো সময় ঢাকাগামী ফ্লাইটে তুলে দেওয়া হবে। এসব রোহিঙ্গাদের অনেকেই বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভারত ও নেপালের মতো দেশের পাসপোর্ট নিয়ে সৌদি আরবে প্রবেশ করেছে।

এর আগে গেল বছরের অক্টোবরে মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, কোনও সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়াই সৌদি আরবে বেশ কয়েক বছর ধরে আটক রাখা হয়েছে কয়েকশ রোহিঙ্গা পুরুষ, নারী ও শিশুদের। প্রতিদিন ৫ থেকে ১০ জন রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে পাঠানো হচ্ছে বলেও দাবি মিডল ইস্ট আইয়ের।

মিয়ানমারে নাগরিকত্ব না থাকা রাখাইনের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে বিশে^র সবচেয়ে নিপীড়িত জাতিগোষ্ঠী হিসেবে বিবেচিত করা হয়। রাখাইনে মিয়ানমার বাহিনীর নির্বিচারে ধর্ষণ, হত্যা, বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়ার মুখে প্রাণ বাঁচাতে সব মিলিয়ে এগারো লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

এর বাইরে দক্ষিণ এশিয়ার ভারত, পাকিস্তান নেপালেও রোহিঙ্গা শরণার্থী রয়েছে। এরপর সৌদি আরবেই সবচেয়ে বেশি রোহিঙ্গার বসবাস। ১৯৭৩ সালে বাদশা ফয়সালের সময় থেকে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া শুরু করে সৌদি আরব।

সম্প্রতি সৌদি আরবের পাশাপাশি ভারতও দেশটিতে থাকা শরণার্থী কার্ডধারী রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে ফেরতের চেষ্টা চালাচ্ছে। এমন ৩১ জন রোহিঙ্গা গত চারদিন ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা সীমান্তের শূন্যরেখায় আশ্রয় নিয়েছে