ব্রাজিলের দক্ষিণপূর্ব রাজ্য মিনাস জেরাইসে বাঁধ ধসে খনিজ বর্জ্যের প্রবাহে চাপা পড়ে নিহতের সংখ্যা ৫৮তে দাঁড়িয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
শুক্রবার দুপুরে ব্রুমাজিনো শহরে ভালি এস কোম্পানির কোরেগো দো ফেইজাও আকরিক লোহার খনি সংশ্লিষ্ট বাঁধটি ভেঙে খনি বর্জ্যের বিশাল এক প্রবাহ খনির স্থাপনাগুলোতে আছড়ে পড়ে; কাদায় চাপা পড়ে নিকটবর্তী বসতির বিভিন্ন ভবন ও যানবাহন।
কী কারণে বাঁধটি ধসে পড়েছে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
ঘটনার দুইদিন পরও উদ্ধার কর্মীরা নিখোঁজ কয়েকশ জনের সন্ধানে জোর তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন।
রোববার সূর্য ডোবার পরও তারা একটি বাস ও একটি বাড়ির ভেতরে মৃতদেহের খোঁজে অনুসন্ধান চালান। ওই বাড়ি থেকে আগেই দুর্ঘটনায় নিহত তিনজনের মৃতদেহ মিলেছিল বলে জানিয়েছেন মিনাস জেরাইস দমকল বিভাগের মুখপাত্র পেদ্রো আহিরা।
সময় যত গড়াচ্ছে নিখোঁজদের জীবিত উদ্ধারের সম্ভাবনাও তত ক্ষীণ হচ্ছে বলে ভাষ্য কর্মকর্তাদের।
“শেষ দেহটি পাওয়া পর্যন্ত, দমকল বিভাগ জীবিত কাউকে পাওয়ার সম্ভাবনা সামনে রেখেই কাজ করে যাবে। অবশ্যই, দুর্ঘটনার ধরন এবং সময় যেভাবে পার হচ্ছে, তাতে জীবিত কাউকে পাওয়ার সম্ভাবনা কমে আসছে,” বলেছেন আহিরা।
মিনাইস জেরাইস রাজ্যের দমকল বিভাগের মুখপাত্র ফ্লাভিও গোজিনো মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫৮ হয়েছে বলে জানিয়েছেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এ সংখ্যা আরও বাড়বে বলেও ধারণা তার।
নিখোঁজের সংখ্যা এখনো তিনশর বেশি, যাদেরই খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না, তালিকায় ধারাবাহিকভাবেই তাদের নাম সংযুক্ত হচ্ছে বলে জানান গোজিনো।
নিখোঁজদের অধিকাংশই ইতোমধ্যে মারা গেছেন বলে ধারণা কর্মকর্তাদের।
কী কারণে ভ্যালে এসএ’র বাঁধটি ধসে পড়ল তা এখনও অস্পষ্ট। সাম্প্রতিক পরীক্ষা-নিরীক্ষায়ও সেখানে কোনো সমস্যা দেখা যায় নি বলে জার্মান একটি প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে।
খনি কোম্পানি ভ্যালের বিরুদ্ধে ‘অবহেলা ও অযোগ্যতার’ অভিযোগ এনেছেন ব্রুমাজিনোর মেয়র আভিমার দে মেলো বারসেলোস। তিনি ভয়াবহ এ দুর্ঘটনার জন্য ভ্যালেকে দায়ী করার পাশাপাশি নজরদারির ত্রুটির জন্য মিনাস জেরাইস রাজ্য কর্তৃপক্ষেরও তুমুল সমালোচনা করেছেন।
বারসেলোস বাঁধ ধসের ঘটনায় খনি কোম্পানির কাছ থেকে দুই কোটি ৬৫ লাখ ডলার ক্ষতিপূরণ আদায়েরও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
বিশেষজ্ঞদের নির্দেশনা মেনে চলার পরও এ দুর্ঘটনাটি ঘটেছে বলে রোববার টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দাবি করেছেন ভ্যালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফাবিও স্কভার্টসমেন।
“আমি খনি বিষয়ে বিশেষজ্ঞ নই। আমি বিশেষজ্ঞদের নির্দেশনা মেনে চলেছি এবং আপনারা দেখেছেন কী ঘটেছে। এটা কাজ করেনি। আমরা সব বিষয়ে শতভাগ মান বজায় রেখেছি, তাতেও কাজ হয়নি,” বলেছেন তিনি।