ভারতীয় বিনিয়োগকারীদের জন্য মিরসরাইয়ে অর্থনৈতিক অঞ্চলের গড়তে ভূমি অধিগ্রহণ’ প্রকল্প পাশ করা হয়েছে। এ প্রকল্পটিতে ব্যয় হবে ৮৪৫ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। প্রকল্পটি পুরোটাই সরকারি অর্থায়নে বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)। ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২০ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন হবে।
বুধবার রাজধানীর পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে একনেক চেয়ারপারসন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এ প্রকল্পসহ মোট ১৩ টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। এসব প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১২ হাজার ৪৫৯ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মানান এসব কথা বলেন।
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় নতুন ১০টি ও সংশোধিত ৩টি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এই এর মধ্যে সরকারি তহবিল (জিওবি) থেকে দেয়া হবে ৯ হাজার ৪৮১ কোটি ৭৭ লাখ টাকা, সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে দেয়া হবে ১৫৪ কোটি ৪৫ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক ঋণ হিসেবে পাওয়া যাবে ২ হাজার ৮২৩ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।
সভায় বড়পুকুরিয়া-বগুড়া-কালিয়াকৈর ৪০০ কেভি লাইন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। এতে ব্যয় হবে ৩ হাজার ৩২২ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। এর মধ্যে ১ হাজার ৪২৪ কোটি ২৭ লাখ টাকা সরকার অর্থায়ন করবে, সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ১৫৩ কোটি ৪৫ লাখ টাকা এবং বিদেশি ঋণ ১ হাজার ৭৪৪ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। প্রকল্পটি ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২০ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে।
এছাড়া সংশোধিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের ‘বরিশাল-পটুয়াখালী সড়কে ‘পায়রা সেতু’ দ্বিতীয় সংশোধিত প্রকল্পে ব্যয় হবে ১ হাজার ৪৪৭ কোটি ২৪ লাখ টাকা। এর মধ্যে ৩৬৮ কোটি ২৯ লাখ সরকারি অর্থায়ন এবং বিদেশি ঋণ রয়েছে ১ হাজার ৭৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। মূল প্রকল্প ২০১২ সালের এপ্রিল থেকে চলমান আছে। এই প্রকল্প ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও দ্বিতীয় সংশোধনীতে এর মেয়াদ বাড়িয়ে করা হয়েছে ২০২২ সালের জুনে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের ‘ঢাকা শহরে ডাক বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য আবাসিক ভবন নির্মাণ’ প্রকল্পের প্রথম সংশোধিত প্রকল্পে ব্যয় হবে ৩৭৬ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। পুরোটাই সরকারি অর্থায়নে ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে শুরু হওয়া এই প্রকল্পের মেয়াদ ২০১৯ সালে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা বাড়িয়ে করা হয়েছে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত।
স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের ‘গোপালগঞ্জে এসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডের তৃতীয় শাখা কারখানা স্থাপন’ প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধনীতে ব্যয় হবে ৭৯৯ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে ১ কোটি টাকা সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন। ২০১১ সালের জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এই প্রকল্প ২০১৩ সালে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও দুই ধাপে এর মেয়াদ বাড়িয়ে করা হয়েছে ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত।
এছাড়া সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের ‘ফেনী-নোয়াখালী জাতীয় মহাসড়কের (এন-১০৪) ২-লেন অংশ (মহিপাল থেকে চৌমুহনী পূর্ব বাজার পর্যন্ত) চারলেনে উন্নীতকরণ’ প্রকল্পে খরচ হবে ৭৪৭ কোটি ৯ লাখ টাকা। পুরোটাই সরকারি অর্থায়নে ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের মধ্যে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে সড়ক ও জনপদ জনপথ অধিদফতর।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের ‘মহালছড়ি-সিন্দুকছড়ি-জালিয়াপাড়া সড়কের সিন্দুকছড়ি থেকে মহালছড়ি পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন’ প্রকল্পে ব্যয় হবে ৯৭ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। পুরোটাই সরকারি অর্থায়নে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে।
এছাড়া নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ‘মোংলা বন্দরের জন্য অত্যাবশ্যকীয় যন্ত্রপাতি/সরঞ্জাম সংগ্রহ’ প্রকল্পে ব্যয় হবে ৪৩৩ কোটি ৫২ লাখ টাকা। পুরোটাই সরকারি অর্থায়নে এই প্রকল্প ২০১৮ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে।
‘চট্টগ্রাম মহানগরীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ, জলমগ্নতা/জলাবদ্ধতা নিরসন ও নিষ্কাশন উন্নয়ন’ প্রকল্পে ব্যয় হবে ১ হাজার ৬২০ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। পুরোটাই সরকারি অর্থায়নে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে ২০১৮ সালের অক্টোবর থেকে ২০২২ সালের জুনের মধ্যে। এটি বাস্তবায়ন করবে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়।
একই মন্ত্রণালয়ের অধীনে ‘কুড়িগ্রামের চিলমারী ও উলিপুর উপজেলায় ব্রহ্মপুত্র নদের ডান তীর ভাঙনরোধ’ প্রকল্পে ব্যয় হবে ৩০২ কোটি ৬০ লাখ টাকা। যা সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের ‘সোনাগাজী ও মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল সংযোগ সড়কে ফেনী নদীর ওপর সেতু নির্মাণ’ প্রকল্পে ব্যয় হবে ৬৬২ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। পুরোটাই সরকারি অর্থায়নে ২০১৮ সালের জুলাই থেকে ২০২২ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের ‘আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃষক পর্যায়ে উন্নতমানের ধান, গম ও পাট বীজ উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বিতরণ’ প্রকল্পে ব্যয় হবে ২৬৯ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। ২০১৮ সালের জুলাই থেকে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে এই প্রকল্প।
কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের ‘কারিগরি শিক্ষা অধিদফতরের অধীন ৬৪টি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের সক্ষমতা বৃদ্ধি’ প্রকল্পে ব্যয় হবে ১ হাজার ৫৩৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে ২০১৮ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুনের মধ্যে।