দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। - ফাইল ছবি
ট্রান্সফারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশকে (টিআইবি) একচোখা হলে হবে না। শুধু সরকারের সমলোচনা করলে হবে না, পাশাপাশি ভালো কাজের প্রশংসাও করতে হবে মন্তব্য করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।
মঙ্গলবার দুপুরে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে টিআইবি’র চলমান কার্যক্রমের মূল্যায়ন ও ভবিষ্যৎ কর্মকৌশল নিরুপণ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ডিএফআইডি, সুইডিশ ও ড্যানিশ দূতাবাসের সহায়তায় জেনেভা-ভিত্তিক নীতি ও কৌশল বিশেষজ্ঞ ম্যাথিয়াস বসের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল দুদক চেয়ারম্যানর সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ইকবাল মাহমুদ বলেন, দুদকের কার্যক্রম নিয়ে টিআইবি’র সমালোচনাকে দুদক সবসময় সাধুবাদ জানায়, তবে দুদক বা অন্য কোনো সংস্থার সমালোচনা করতে হলে তাদেরকে দেশের সমসাময়িক বাস্তবতা, পরিস্থিতি এবং সংস্কৃতিকে অনুধাবন করতে হবে। সমালোচনার সাথে পরিত্রাণের উপায়ও বলতে হবে। সরকার বা সরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক দল কোনো ভালো কাজ করলে তার প্রশংসাও করা উচিত। তাদের একচোখা হলে চলবে না, দুচোখা হতে হবে।
প্রতিনিধি দলের প্রধান ম্যাথিয়াস বস টিআইবি সম্পর্কে দুদক চেয়াম্যানের সুচিন্তিত মতামত, সমালোচনা এবং পরামর্শ জানতে চান।
জবাবে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, জনগণের মাঝে টিআইবি’র ইতিবাচক ভাবমূর্তি রয়েছে। তবে এর কিছু সমালোচনাও শোনা যায়। টিআইবি দেশের শাসন প্রক্রিয়া তথা সরকার বা সরকারি সংস্থার যে কোনো ধরনের ত্রুটি-বিচ্যুতিতেই উচ্চকণ্ঠ থাকে।
তিনি বলেন, শুধু সম্যসা বা ত্রুটি তুলে ধরা টিআইবির কাজ হতে পারে না বরং এসব সমস্যা সমাধানের পথ বাতলে দেওয়ার সুযোগ তাদের রয়েছে। সমস্যা শনাক্তকরণের পাশাপাশি এর কারণ এবং তা থেকে উত্তরণের উপায় বের করা এ জাতীয় প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব হওয়া উচিত।
তিনি বলেন, টিআইবি’র একটি সুনির্দিষ্ট কর্মপরিধি থাকা উচিত। সব বিষয়ে টিআইবি’র কথা বলা কোনো কোনো ক্ষেত্রে তাদের ভাবমূর্তির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাদের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য থাকা উচিত। তারা দুর্নীতি, মেগাপ্রজেক্ট এবং সরকার নিয়ে যতটা উচ্চকিত। আবার মানসম্মত শিক্ষা, জনপ্রশাসনের নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতিসহ সুশানের অন্য যে সকল সূচক রয়েছে এগুলোর ক্ষেত্রে তাদের কার্যক্রমকে অনেকেই ততোটা জোরালো বলে মনে করেন না। অর্থাৎ তাদের সুনির্দিষ্ট কর্মপরিধি মানুষকে জানানোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
টিআইবির গবেষণা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, টিআইবির গবেষণার মেথডোলোজি স্বচ্ছ হতে হবে। তারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মাধ্যমিক ডাটা ব্যবহার করে অথবা ফোকাসগ্রুপ আলোচনার মাধ্যমে ডাটা সংগ্রহ করে। তাদের উচিত প্রাথমিক ডাটা ব্যবহার করা। তাহলে তাদের গবেষণার ফলাফল ও বিশ্লেষণে ত্রুটি কম থাকবে এবং তাদের প্রতিবেদনের বিশ্বাসযোগ্যতা বৃদ্ধি পাবে।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের পরামর্শক মাহিন সুলতান এবং টিআইবি’র ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার জাফর সাদিক।