বাসের চাপায় পা হারানো রাসেল সরকারকে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের মধ্যে অবশেষে ৫ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করেছে গ্রিন লাইন পরিবহন কর্তৃপক্ষ। ক্ষতিপূরণের বাকি ৪৫ লাখ টাকা এক মাসের মধ্যে প্রদানের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
এর আগে রাসেলকে ক্ষতিপূরণের অগ্রগতি জানাতে গ্রিন লাইন পরিবহন কর্তৃপক্ষকে বিকাল তিনটা পর্যন্ত সময় দেয় উচ্চ আদালত। তারপরই পরিবহস কোম্পানিটি রাসেলকে পাঁচ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করে।
এর আগে গত ৩১ মার্চ প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ রাসেলকে ৫০ লাখ টাকা দেওয়ার হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন।
একই দিন বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ ৩ এপ্রিলের মধ্যে ৫০ লাখ টাকা রাসেলকে বুঝিয়ে দিতে গ্রিনলাইন পরিবহনকে আবার নির্দেশ দেন এবং টাকা দেওয়ার পর বৃহস্পতিবার তা হাইকোর্টকে জানাতে বলেন।
কিন্তু আজ বিষয়টি হাইকোর্টের এই বেঞ্চে আদেশের জন্য এলে রাসেলের পক্ষের আইনজীবী আদালতকে বলেন, গ্রিন লাইন পরিবহন তাদের সাথে টাকা দেওয়া নিয়ে এখনও কোনও যোগাযোগ করেনি।
এসময় গ্রিন লাইন পরিবহন পক্ষের আইনজীবী ওয়াজি উল্লাহ আদালতকে বলেন, ‘গ্রিন লাইনের প্রোপাইটার চিকিৎসার জন্য এখন দেশের বাইরে রয়েছেন। তাছাড়া আরও কিছু জটিলতা আছে। টাকা দিতে তাদের এক মাস সময় প্রয়োজন।’
বিচারক তখন বলেন, ‘উনি অসুস্থ, কিন্তু উনার ব্যবসা তো থেমে নেই, ব্যবসা তো চলছে।’
আদালতকে তিনি বলেন, ‘গ্রিন লাইন পরিবহন অনেক দিন ধরে সুনামের সঙ্গে ব্যবসা করে আসছে, এরকম অ্যাক্সিডেন্ট আগে ঘটেনি।’
বিচারক তখন বলেন, ‘অ্যাক্সিডেন্ট তো হতেই পারে, কিন্তু এটা তো অ্যাক্সিডেন্ট না…। রাসেল একজন ড্রাইভার। একজন শ্রমজীবী মানুষ। এতদিন হাসপাতালে থাকল, একটা দিন আপনারা খোঁজ খবর নিলেন না। একটা পা গেছে, আরেকটা পা যেতে বসেছে…।’
‘আজকে যদি একটা কিছু নিয়ে আসতেন তাহলে আমরা বুঝতাম একটা মানবিকতা আপনারা দেখিয়েছেন। কিন্তু কিছুই দেন নাই এখন পর্যন্ত। কিছু কমপ্লাই করে তিনটায় আসেন।’
রাসেল সরকার ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠানের ভাড়া গাড়ি চালাতেন। গত বছরের ২৮ এপ্রিল কেরানীগঞ্জ থেকে ঢাকায় ফেরার পথে যাত্রাবাড়ীর হানিফ উড়ালসড়কে গ্রিন লাইন পরিবহনের বাসের এক চালক কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে তার ওপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে দেন। এতে একটি পা হারান রাসেল। এ ঘটনায় তার বড় ভাই আরিফ সরকার বাসচালক কবির মিয়ার বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী থানায় একটি মামলা করেন।