ঢাকার মোহাম্মদপুর, মেহেরপুরের গাংনী ও কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় তথাকথিত গোলাগুলিতে তিন ব্যক্তি নিহত হয়েছেন বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। নিহতরা মাদক ব্যবসায়ী বলেও দাবি তাদের।
গতকাল বুধবার দিবাগত গভীর রাতে গাংনী উপজেলার হাড়াভাঙ্গা গ্রামে এবং টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যংয়ে ‘গোলাগুলিতে’ দুই ব্যক্তি নিহত হন বলে দাবি করেছে পুলিশ। অন্যদিকে বৃহস্পতিবার ভোররাতে রাজধানীর ঢাকা উদ্যানে ‘গোলাগুলিতে’ আরেক ব্যক্তি নিহত হন বলে দাবি করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
গোলাগুলিতে নিহত ব্যক্তির নাম-পরিচয় জানতে পারেনি পুলিশ। তবে স্থানীয়দের ধারণা, নিহত ব্যক্তি কাজীপুর গ্রামের মাদক ব্যবসায়ী ফজলুল হক ফজু।
গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হরেন্দ্রনাথ সরকার দাবি করেন, হাড়াভাঙ্গা মাদ্রাসার কাছে দুপক্ষের গোলাগুলির খবর পেয়ে পুলিশের কয়েকটি দল ঘটনাস্থলে যায়। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে গুলি বন্ধ করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় কয়েকজন। পরে ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ একজনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। একই সঙ্গে একটি এলজি শাটারগান ও কয়েক কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়।
‘গোলাগুলির সঙ্গে এলাকার মাদক ব্যবসায়ীরা জড়িত। মাদক ব্যবসায়ীদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক, তাদের নামে মামলা করা হবে এবং চিহ্নিত করে আটক করা হবে,’ যোগ করেন ওসি।
পীরতলা পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) অজয় কুমার ও সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আহম্মেদ আলী মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করার পর লাশ থানায় পাঠান। সকালে লাশের ময়নাতদন্ত হবে বলেও জানায় পুলিশ।
এ দিকে র্যাব সদর দপ্তর থেকে মুঠোফোনে পাঠানো এক খুদে বার্তায় দাবি করা হয়েছে, আজ ভোর সোয়া ৫টার দিকে মোহাম্মদপুর থানার ঢাকা উদ্যান এলাকায় ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নবী হোসেন (৪৭) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।
র্যাবের বার্তায় দাবি করা হয়, আজ ভোরের দিকে ঢাকা উদ্যান এলাকায় চেকপোস্ট চলাকালে একদল অস্ত্রধারী মাদক ব্যবসায়ীর সঙ্গে র্যাবের গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। সে সময় নবী হোসেন গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। ঘটনাস্থল থেকে বিদেশি পিস্তল ও গুলিসহ ১০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করে র্যাব।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানান, গুলিবিদ্ধ অবস্থায় নবী হোসেনকে ঢামেক হাসপাতালে নেওয়া হলে সকাল ৭টার দিকে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। তাঁর লাশ বর্তমানে হাসপাতাল মর্গে রাখা আছে বলে জানান তিনি।
এদিকে কক্সবাজার টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যংয়ে অবৈধ অস্ত্র ও মাদকবিরোধী অভিযানে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন বলে পুলিশ দাবি করেছে। নিহত ব্যক্তির নাম আবুল কাসেম। তিনি হোয়াইক্যং পশ্চিম সাতঘরিয়াপাড়ার বাসিন্দা।
টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ দাশ বৃহস্পতিবার সকালে দাবি করেন, গতকাল রাতে আবুল কাশেমকে নিয়ে পুলিশের একটি দল পশ্চিম সাতঘরিয়াপাড়া পাহাড়ে অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার অভিযানে যায়। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে কাশেমের সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি করে। এতে পুলিশের এএসআই অহিদ উল্লাহ (৩৯), কনস্টেবল হাবিব হোসাইন (২৩) ও তুহিন আহমেদ (২২) আহত হন। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি করলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
‘কিছুক্ষণ পর গোলাগুলি থামলে পুলিশ ঘটনাস্থল তল্লাশি করে দুটি দেশি তৈরি এলজি, নয়টি কার্তুজ, তিন হাজার ৪০০ ইয়াবাসহ গুলিবিদ্ধ কাশেমকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার নেওয়ার পথে কাশেম মারা যান।’
মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানান ওসি।