পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি যশোরের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ঈদ আনন্দ মেলার আয়োজক কমিটির প্রধান সমন্বয়ক মাসুদুর রহমান মিলন ও তার পার্টনার শাহীন ওরফে মেলা শাহীনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ব্যাবসায়ীরা। তাদের ২৫ লাখ টাকার মালামাল আটকে রেখে এখন অভিযুক্তরা খুন ও জখমের হুমকি দিচ্ছেন বলে ওই অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ব্যবসায়ীরা থানায় হাজির হয়। তাদের মধ্যে ঝালকাঠি জেলার নলচিঠি থানার তেওলা গ্রামের মৃত সুলতান হাওলাদারের ছেলে আরিফুর রহমান (আরাফ ব্যাগ হাউজের মালিক), বরিশাল জেলার অক্সফোর্ড মিশন রোড এলাকার রুবেল খান (আই পি এল প্লাস্টিক ঘরের মালিক), ঢাকা যাত্রাবাড়ী এলাকার সাদ্দাম হোসেন( বিউটি প্লাসের মালিক), ঢাকা মিরপুর এলাকার শাহাদৎ হোসেন (চায়না স্টোরের মালিক), শরীয়াতপুর জেলার শখিপুর উপজেলার রাজানগর গ্রামের রাসেল হোসেন ( মা বাবা স্টোরের মালিক) একসাথে বিবাদীদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জমাদেন।
এসময় কোতোয়ালী থানার ডিউটি অফিসার এস আই মতিয়ার রহমান ব্যবসায়ীদের অভিযোগ গ্রহন করে প্রশাসনিক সহযোগিতা গ্রহনের আশ্বাস দেন।
অভিযোগে বলা হয়, গত ২৮ এপ্রিল মেলা শুরু হওয়ার পর মাঝখানে ১০ দিন বন্ধ রেখে গত ২২ জুন পর্যন্ত মেলা চলে। এর মধ্যে মেলা বন্ধ হয়ে গেলে মেলাটি পুনরায় চালু করার জন্য তাদের কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকা নেয়া হয়। পরে মেলা শেষ হলে ছাড় পত্র আনতে গেলে তাদের কাছে পাওনা টাকার থেকে কয়েকগুন টাকা দাবি করে তাদের দোকানের সকল মালামাল মেলার মাঠ থেকে নিয়ে চলে যায়। পরে তাদের মালামাল ফেরত চাইলে নানা ধরনের তালবাহানা করতে থাকে। সর্বশেষ গত ১০ জুলাই রাত আটটার দিকে মেলার সামনে আয়োজক কমিটির সাথে দেখা হয়। এসময় আয়োজক কমিটির প্রধান সমন্বয়ক মিলন ওই মালামাল ফেরত দেয়া হবেনা বলে মারপিট ও খুন জখমের হুমকি দেয়।
এদিকে শুধু মেলার ব্যবসায়ীরায় নয় মেলার ডেকরেটর মালিক ও ক্ষোভ প্রকাশ কেরেছন আয়োজক কমিটির উপর।
মেলায় যেয়ে দেখা যায়, ২১ দিন মেলা শেষ হলেও এখনো পর্যন্ত মেলার ডেকোরেশন খোলা হয়নি। এখনো বাশ দিয়ে মেলায় প্যান্ডেল সাজানো রয়েছে। এ বিষয়ে প্যান্ডেল মালিক জাকির হোসেন বলেন, মিলনের সাথে এ মেলায় ৪২ টি দোকান করতে হবে ও এসব দোকান একমাস থাকবে এ হিসাবে চার লাখ টাকার চুক্তি হয়। কিন্তু পরবর্তীতে ৬৫ টি দোকান তৈরী করিয়ে নেয়। এছাড়া এক মাসের কথা বলে মেলা চলে প্রায় দু’মাস। কিন্তু এ পর্যন্ত মাত্র দু লাখ টাকা দিয়েছে মিলন। বাকী চার লাখ টাকা নিয়ে শুধু ঘুরাচ্ছে। আজ না কাল করে ২২ দিন হলেও বাকী টাকা দিচ্ছেনা। মিলনের মোবাইলে ফোন দিলে ফোন ধরে না।
জাকিরের কাছে টাকা না থাকায় তিনি মেলা থেকে ডেকরেশনের বাঁশ খুটি খুলে আনতে পাছেন না বলে জানান।
এদিকে আরেক দোকানী আলামিন জানান, মেলা করার জন্য তিনি পাঁচ লাখ টাকার মালামাল যশোরে পাঠায়। যে দোকান তাকে দেয়ার কথা ছিল মেলা কমিটি সে দোকান তাকে দেয়নি বলে তিনি আর মেলাতে আসেনি। কিন্তু মাল ফেরত আনতে গেলে তা আর দেয়নি। ওই পাঁচ লাখ টাকার মাল মিলন ও মেলা শাহীন এক মেলা দোকানীর কাছে বিক্রি করে দেন বলে তিনি জানান।