বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা সোমবার বিকেলে মিরপুর শের বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এক সংবাদ সম্মেলন করেন। ওই সংবাদ সম্মেলনে তারা ১১ দফা দাবি তুলেছেন। তাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত জাতীয় লিগ, অনুশীলন ক্যাম্প কিংবা অন্য কোন সিরিজ খেলবেন না বলে উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশ ক্রিকেটারদের পক্ষে নাঈম ইসলাম, মাহমুদুল্লাহ, মুশফিকুর রহিম এবং সাকিব আল হাসানরা দাবি তুলে ধরেন।
বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে খেলা এবং ঘরোয়া লিগের নিয়মিত মুখ নাঈম ইসলাম বলেন, ‘আমরা আমাদের ক্রিকেটারদের কিছু সমস্যা, দাবি-দাওয়া নিয়ে আপনাদের (সাংবাদিক) সামনে এসেছি। প্রথমে বলতে চাই, আমরা যতটুকু সম্মান প্রত্যাশা করি ততটুকু পায় না। আমাদের ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (কোয়াব) ক্রিকেটারদের পক্ষে কিছু করে না। তাদের পদত্যাগের দাবি জানাচ্ছি। কোয়াবের সভাপতি, সেক্রেটারিকে দ্রুত পদত্যাগ করতে হবে। প্লেয়াররা ঠিক করবেন নতুন করে কারা সভাপতি, সেক্রেটারি হবেন। ক্রিকেটাররা নির্বাচনের মাধ্যমে তাদের নির্বাচিত করবেন।’
মাহমুদুল্লাহ তার বক্তব্যে প্রিমিয়ার লিগ নিয়ে কথা বলেন। তিনি দাবি তোলেন প্রিমিয়ার লিগের বাজে অবস্থা নিয়ে। আগে ক্রিকেটাররা প্রিমিয়ার লিগ নিয়ে কথা বলতে পারতো। এখন পারে না বলে উল্লেখ করেন তিনি। মাহমুদুল্লাহ বলেন, ‘আপনারা প্রিমিয়ার লিগের অবস্থা জানেন। এখন যেভাবে চলছে তাতে ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিকের মানদণ্ড বেধে দেওয়া হচ্ছে। আগে ব্যাপারগুলো খেলোয়াড়রা ডিল করতো। আমরা চাই আগে সেভাবে প্রিমিয়ার লিগ খেলতাম, যেভাবে নিজেদের পারিশ্রমিক ঠিক করতাম সেটা যেন আগের মতো ফিরে পায়।’
মুশফিকুর রহিম বিপিএল নিয়ে কথা বলেন। বিপিএলের আগামী আসর ডিসেম্বরে হওয়ার কথা আছে। ওই আসরে কোন ফ্র্যাঞ্চাইজি থাকবে না। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের নাম দেওয়া হয়েছে বঙ্গবন্ধু প্রিমিয়ার লিগ। বিসিবি সার্বিক তত্ত্বাবধায়নে থাকবে।
মুশফিক ব্যাপারটাকে সম্মান জানিয়ে বলেন, আমরা জানি যে এই বছর অন্য নিয়মে বিপিএল হচ্ছে। আমরা সেটাকে সম্মান করি। অন্য বছর থেকে যেন আগের নিয়মে বিপিএল হয়। স্থানীয় খেলোয়াড়রা যেন বিদেশিদের মতো পরিশ্রমিক পান। বিদেশি লিগগুলোতে স্থানীয় ক্রিকেটারদের সম্মান দেওয়া হয়। কিন্তু আমাদের এখানে বিদেশি ক্রিকেটাররা যেমন সম্মান পান আমরা সেটা পায় না। অন্য লিগে প্লেয়াররা কোন ক্যাটাগরিতে থাকবেন সেটা ঠিক করার সুযোগ তাদের দেওয়া হয়। এরপর কোন দল যদি নিলামে তাকে ওই ক্যাটাগরি থেকে না নেয় তবে সেটা ভিন্ন কথা।’
ক্রিকেটারদের ডাকা এই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের টেস্ট এবং টি-২০ অধিনায়ক সাকিব আল হাসানও। তিনি সংবাদ সম্মেলনে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিত এক লাখ টাকা করার দাবি করেন। এছাড়া সাকিব বলেন, ‘প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটারদের বেতন ৫০ ভাগ বাড়াতে হবে। ক্রিকেটারদের অনুশীলন সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে হবে। বার মাসের জন্য কোচ, ফিজিও দিতে হবে। যেন তরুণ ক্রিকেটাররা গড়ে উঠতে পারে। আমরা জানি এটার জন্য সময় লাগবে। তবে আমরা আশা করবো যেন দ্রুত এটা কার্যকর হয়।’