যেভাবে দুই ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ

চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী তূর্ণা নিশীথা সোমবার রাত ২টা ৪৮মিনিটে শশীদল রেলওয়ে স্টেশন অতিক্রম করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মন্দভাগ রেলওয়ে স্টেশনের দিকে রওনা হয়। মন্দভাগ রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার ট্রেনটি স্টেশনে প্রবেশের আগেই আউটারে থামার জন্য লালবাতি জ্বালিয়ে সংকেত দেন।

অন্যদিকে সিলেট থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী উদয়ন এক্সপ্রেস কসবা রেলওয়ে স্টেশন ছেড়ে মন্দভাগ রেলওয়ে স্টেশনের প্রবেশপথে অবস্থান করছিল। স্টেশন মাস্টার ট্রেনটিকে মেইন লাইন ছেড়ে দিয়ে ১ নম্বর লাইনে আসার সংকেত দেন। ওই ট্রেনের চালক ১ নম্বর লাইনে প্রবেশ করার সময় ছয়টি বগি প্রধান লাইনে থাকতেই অন্যদিক থেকে আসা তূর্ণা নিশীথা ট্রেনের চালক সিগন্যাল (সংকেত) অমান্য করে দ্রুতগতিতে ট্রেন চালান। এসময় উদয়ন এক্সপ্রেসের মাঝামাঝি তিনটি বগির সঙ্গে তূর্ণা নিশীথার ইঞ্জিনের সংঘর্ষ হয়। এতে উদয়ন এক্সপ্রেসের তিনটি বগি দুমড়ে মুচড়ে যায়।

মন্দভাগ রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো. জাকের হোসেন চৌধুরী বলেন, তূর্ণা নিশীথা এক্সপ্রেসকে আউটারে মেইন লাইনে থামার সংকেত দেওয়া হয়েছিল। উদয়ন এক্সপ্রেসকে মেইন লাইন থেকে ১ নম্বর লাইনে আসার সংকেত দেওয়া হয়েছিল। সেই হিসেবে উদয়ন এক্সপ্রেস ১ নম্বর লাইনে প্রবেশ করেছিল। এ সময় তূর্ণা নিশীথা ট্রেনের চালক সংকেত অমান্য করে উদয়ন এক্সপ্রেসকে ধাক্কা দেয়।

উদয়ন এক্সপ্রেসের যাত্রী তামান্না ইসলাম বলেন, আমাদের ট্রেনটি লাইন ক্রস করছিল। ওই সময় বিপরীত দিক থেকে আসা তুর্ণা নিশীথা ট্রেনটিকে ধাক্কা দেয়। সামনের বগিতে থাকায় আমি বেঁচে গেছি। পেছনের তিনটি বগির যাত্রীরা বেশি আহত হয়েছেন।

তুর্ণা নিশীথার যাত্রী মেহেদী হাসান বলেন, উদয়ন এক্সপেস অন্য লাইনে ঢোকার আগেই বিপরীত দিক থেকে এসে তুর্ণা নিশীথা ধাক্কা দেয়। এ সময় আমরা ঘুমিয়ে ছিলাম। পরে তাড়াতাড়ি করে ট্রেন থেকে নেমে পড়ি।

স্থানীয় বাসিন্দা তৌহিদ রহমান বলেন, আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। রাতে হঠাৎ বিকট শব্দে ঘুম ভেঙে যায়। ঘর থেকে বের হয়ে দেখি এখানে সেখানে ছিটকে পড়ে আছে বিভিন্ন বয়সের মানুষের মরদেহ। সবার সঙ্গে আহতদের উদ্ধার করার চেষ্টা করি।

এ দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ১৬ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন শতাধিক।