ওয়ার্কার্স পার্টি মতাদর্শ রক্ষা সমন্বয় কমিটির জাতীয় সম্মেলন ২৯-৩০ নভেম্বর

নতুন সাচ্চা বিপ্লবী পার্টির আত্মপ্রকাশ ঘটতে যাচ্ছে!

২৯-৩০ নভেম্বর বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি মতাদর্শ রক্ষা সমন্বয় কমিটির জাতীয় সম্মেলন যশোরে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ সম্মেলনের মাধ্যমে একটি নতুন সাচ্চা বিপ্লবী পার্টির আত্মপ্রকাশ ঘটবে বলে নেতারা আভাস দিয়েছেন।

ওয়ার্কার্স পার্টির ১০ম কংগ্রেস বর্জনকারী পার্টির মতাদর্শ রক্ষা সমন্বয় কমিটির জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে মঙ্গলবার দুপুরে পার্টির যশোর জেলা কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ সম্মেলনের প্রস্তুতি সম্পর্কে বিশদ ব্যাখ্যা দেন।

নেতৃবৃন্দ বলেন, কাউন্সিলে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক জেলার কমরেডগণ উপস্থিত থেকে একটি বিপ্লবী পার্টির রূপরেখা তৈরি করবেন। নেতৃবৃন্দ এই সম্মেলন বামপন্থীদের একটি মিলনমেলা হবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন।

২৯ নভেম্বর দুপুরে যশোর টাউন হল মাঠে সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন ১৯৪৬ সালে যশোরের কেশবপুরের পাঁজিয়ায় অনুষ্ঠিত সর্বভারতীয় কৃষাণসভার সম্মেলনের একমাত্র জীবিত স্বেচ্ছাসেবক কমরেড নারায়ণ বসু।

উদ্বোধনী সমাবেশে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি সাইফুল হক, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক শোশাররফ হোসেন নান্নুসহ কেন্দ্রীয় বাম নেতৃবৃন্দ।

নেতৃবৃন্দ বলেন, ওয়ার্কার্স পার্টির নেতৃত্ব মার্কসবাদী-লেনিনবাদী আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়ে পার্টিকে সংস্কারবাদী, সুবিধাবাদী পার্টিতে রূপান্তরিত করেন। এমনকী শীর্ষ নেতৃবৃন্দ রাজনৈতিক দুর্নীতির পাশাপাশি অর্থনৈতিক দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। তাদের নেতৃত্বে পার্টি অধঃপতিত হয়ে একটি দেউলিয়া পার্টিতে পরিণত হয়েছে। তারা আন্তঃপার্টি সংগ্রাম তথা দুই লাইনের সংগ্রামকে গলা টিপে হত্যার মাধ্যমে ভিন্নমতকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে একতরফাভাবে কেন্দ্রীয় দলিল পাশ করিয়ে নেন।

নেতৃবৃন্দ বলেন, ১০ম কংগ্রেস আসলে প্রহসনের কংগ্রেস। অর্থাৎ, সেটি একটি নিছক গণজমায়েতে পরিণত হয়। তাদের নতজানু আপসকামীতা তথা একলা চলার নীতির কারণে আমরা বেরিয়ে আসতে বাধ্য হই।

নেতৃবৃন্দ বলেন, বুর্জোয়া, লেজুড়বৃত্তি ও দক্ষিণপন্থী সুবিধাবাদী রাজনীতি পরিহার করে একটি সত্যিকারের বিপ্লবী পার্টি গড়ে তুলতে, পুঁজিবাদ-সা¤্রাজ্যবাদ-বিরোধী সংগ্রাম তথা জাতীয় স্বার্থে তেল-গ্যাস-বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষার সংগ্রামকে বেগবান করতে, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ গড়ে তোলার সংগ্রামকে এগিয়ে নিতে, জনগণতান্ত্রিক বিপ্লব সম্পন্ন করার লক্ষ্যে কর্মসূচিভিত্তিক বাম গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট গড়ে তোলার পাশাপাশি বহুধাববিভক্ত কমিউনিস্ট আন্দোলন পুনর্গঠনের মাধ্যমে এক পতাকার নীচে কমিউনিস্ট পার্টি গড়ে তোলার প্রচেষ্টা করবেন। আর সে লক্ষ্যেই এই সম্মেলন বলে তারা দাবি করেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পার্টির সমন্বয়ক কমরেড ইকবাল কবির জাহিদ। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন কমরেড নুরুল হাসান, কমরেড মনোজ সাহা, কমরেড জাকির হোসেন হবি, কমরেড অনিল বিশ্বাস, কমরেড নাজিমউদ্দিন, কমরেড জিল্লুর রহমান ভিটু, কমরেড মিজানুর রহমান, অধ্যাপক ইসরারুল হক প্রমুখ।