কেশবপুরে বুড়ুলিয়া খালের বাঁধে ধস, বোরো আবাদে সংশয়

যশোরের কেশবপুরে বুড়ুলিয়া খালের মুখের বাঁধ আপারভদ্রা নদীর পানির চাপে গত বুধবার রাতে ভেঙে গেছে। মুহূর্তের মধ্যে পানি ৩ ইউনিয়নের ১০টি বিলে ঢুকে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। ফলে আসন্ন বোরো মৌসুমে বিলগুলিতে বোরো আবাদ হবে কি না তা নিয়ে কৃষকরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন।

জানা গেছে, কেশবপুর উপজেলার মঙ্গলকোট, পাঁজিয়া ও সুফলাকাটি ইউনিয়নের ১৫/১৬ গ্রামের বর্ষার অতিরিক্ত পানি বুড়ুলিয়া খাল দিয়ে আপারভদ্রা নদীতে নিষ্কাশন হয়ে থাকে। ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে বুড়িভদ্রা, হরিহর ও আপার ভদ্রা নদীসহ এর সংযোগ খালগুলি পুণর্খননে জলাদ্ধতা দূরীকরণ প্রকল্প নামে পানি উন্নয়ন বোর্ড সাড়ে ৪৯ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। চলতি বছর আপারভদ্রা নদী খননকালে ঠিকাদার বুড়ুলিয়া খালের মুখে বাঁধ দিয়ে পুণর্খনন কাজ শুরু করে। ফলে পানি নিষ্কাশন পথ বন্ধ হয়ে যায়। ওই বাঁধের কারণে বিলগুলি জলাবদ্ধ থাকায় আসন্ন বোরো মৌসুমে বোরো বীজতলা তৈরীর উপযুক্ত সময় হলেও এখনও কৃষকরা বীজতলা তৈরী করতে পারেনি।

বুড়ুলিয়া গ্রামের কৃষক আব্বাজ মোড়ল জানান, জলাবদ্ধ বিলগুলির পানি নিষ্কাশনে যখন এ অঞ্চলের কৃষকরা ঘের মালিকদের নিয়ে আন্দোলন, সভা, সমাবেশ করে চলেছে ঠিক তখনই ১১ ডিসেম্বর রাতে আপারভদ্রা নদীর অতিরিক্ত পানির চাপে বুড়ুলিয়া খালের মুখের বাঁধ ধসে ভেঙে যায়। মুহূর্তের মধ্যে পানি ঢুকে চুয়াডাঙ্গা, হদ, মাগুরখালি, ঘাঘা, পাঁজিয়া, কেশনগর, কাটাখালিসহ ১০টি বিলে পানি ঢুকে জলাবদ্ধ হয়ে পড়ে। ফলে চলতি মৌসুমে ওই বিলগুলিতে বোরো আবাদ হবে কি না তা নিয়ে তারমত এ অঞ্চলের হাজার হাজার কৃষক উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে।

সুফলাকাটি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান এসএম মুনজুর রহমান বলেন, আপারভদ্রার সন্ন্যাসগাছা থেকে কাশিমপুর পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার নদী ভরাট হয়ে গেছে। বিষয়টি নিয়ে গত ১২ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় পাথরাগেটে জরুরীভাবে বিলের পানি নিষ্কাশনে ঘের মালিকদের সাথে শত শত কৃষকের উপস্থিতিতে কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে পানি না সরলে কৃষকরা আন্দোলনে যাওয়ার হুমকি দিয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মহাদেব চন্দ্র সানা বলেন, এখন বোরো বীজতলা তৈরীর উপযুক্ত সময়। গত মাসিক সমন্বয় কমিটির সভায় বিলের পানি সরানোর দাবি জানিয়ে বিষয়টি সবাইকে অবহিত করা হয়েছে। পানি না সরলে কৃষকরা বীজতলা তৈরী করতে পারবে না।

এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মুন্সি আছাদুল্লাহ বলেন, ওই বাঁধ ভেঙে যাওয়ার কথা শুনেছি। কৃষকদের দাবির মুখে দ্রুত পানি সরানোর জন্যে গত ১১ ডিসেম্বর পানি উন্নয়ন বোর্ডের খুলনা বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সৈয়দ হাসান ইমামের নেতৃত্বে পানি বিষেজ্ঞরা আপারভদ্রা নদী পরিদর্শন করেছেন। ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে পানি নামানো শুরু হবে।