ভারত থেকে পালাতে পারেন কয়েক লাখ মুসলিম: ইমরান খান

ভারতে প্রণীত নতুন নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ও কাশ্মীরে চলমান কারফিউয়ের কারণে লাখ লাখ মুসলিম ভারত ছাড়তে বাধ্য হবেন বলে মন্তব্য করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।

তিনি আরো বলেছেন, এতে সৃষ্টি হবে এক শরণার্থী সঙ্কট, যা অন্য সঙ্কটগুলোকে খর্ব করে দেবে। জেনেভায় গ্লোবাল রিফিউজি ফোরামে মঙ্গলবার বক্তব্যে এসব কথা বলেন ইমরান। এতে উপস্থিত ছিলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়্যিপ এরদোগান এবং জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরাঁ। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা।

ইমরান খান বলেন, তার দেশ অধিক সংখ্যক শরণার্থীকে আশ্রয় দিতে সক্ষম হবে না। তাই তিনি বিশ্বকে এখনই এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানান। ইমরান খান বলেন, একটি শরণার্থী সঙ্কট তৈরি হবে, আমরা পাকিস্তানিরা শুধু এ নিয়েই উদ্বিগ্ন নই। একই সঙ্গে এ থেকে একটি যুদ্ধ শুরু হতে পারে। এ যুদ্ধ হবে পারমাণবিক শক্তিধর দুটি দেশের মধ্যে।

উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে ভারতে ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করা হয়। এর উদ্দেশ্য বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মুসলিমদের বাদ দিয়ে শুধু ধর্মীয় সংখ্যালঘু হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পারসি ও খ্রিস্টানদের নাগরিকত্ব দেয়া। ভারতের আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই আইন দেশটির ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধানের লঙ্ঘন। এ আইনের বিরোধিতা করে হাজার হাজার মুসলিম, নাগরিক সমাজের বিভিন্ন গ্রুপ, রাজনৈতিক দল বিক্ষোভ করছেন। তাদের আশঙ্কা, এই আইনের মাধ্যমে ভারতের ২০ কোটি মুসলিমকে একপেশে করে ফেলা হবে।

ওদিকে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর চার মাস ধরে অবরুদ্ধ। এ বিষয়ে ইমরান খান বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার ওই অঞ্চলে জনসংখ্যাতত্ত্ব পাল্টে দিতে চাইছেন। ইমরান খানের ভাষায়, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, বিশ্বকে এখন বুঝতে হবে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মীরে জনসংখ্যাতত্ত্ব পাল্টে দিয়ে সেখানে মুসলিমদেরকে সংখ্যালঘুতে পরিণত করার পরিকল্পনা নিয়েছে ভারত। আমাদের অতীত অভিজ্ঞতা বলে, প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ উত্তম। যদি বিশ্ব ঠিক এখনই পদক্ষেপ নেয় এবং ভারত সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করে অবৈধ বা বেআইনি কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে, তাহলে আমরা এই সঙ্কট প্রতিরোধ করতে পারবো।

উল্লেখ্য, গত ৫ই আগস্ট জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে ভারত। তারপর থেকে পারমাণবিক শক্তিধর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিরোধ নতুন করে নিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। হিমালয়ের অববাহিকায় কাশ্মীর দুটি অংশে বিভক্ত। এর এক অংশ ভারতের নিয়ন্ত্রণে। অন্য অংশ পাকিস্তানের। কাশ্মীরের কিছু গ্রুপ ভারতের কাছ থেকে স্বাধীনতার দাবিতে লড়াই করছে অথবা পাকিস্তানের সঙ্গে একীভূত হতে চাইছে।