ঢাকা-দিল্লি যৌথ নদী কমিশনের বৈঠক স্থগিত

bangladesh india

আকস্মিকভাবে স্থগিত হয়ে গেছে ঢাকা-দিল্লি যৌথ নদী কমিশনের বৈঠক। অভিন্ন ৬টি নদীর ডাটা আপডেট বিষয়ক ২ দিনের ওই বৈঠক আগামীকাল শুরু হওয়ার কথা ছিল নয়া দিল্লিতে।

এ কমিশনের সদস্য কেএম আনোর হোসেন গত রাতে বলেছেন, বৈঠকের জন্য নতুন একটি তারিখ তারা পরে ঠিক করে নেবেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ডেইলি স্টার।

খবরে আরো বলা হয়, ৩৪ বছর পরে অভিন্ন ৬টি নদীর পানি বন্টন নিয়ে ভারতের রাজধানী দিল্লিতে এ বৈঠক হওযার কথা ছিল। নদী ৬টি হলো মুহুরি, মনু, ধরলা, খোয়াই, গোমতি এবং দুধকুমার। এর আগে দুটি নদী তিস্তা ও ফেনির পানি বন্টন নিয়ে চুক্তি চূড়ান্ত করা হয় ২০১১ সালে। কিন্তু কোনো চুক্তি ওই সময় স্বাক্ষরিত হয় নি। প্রতি বছর মার্চ মাসে ফেনির পরশুরামে মুহুরি নদী শুকিয়ে খড় খড়া হয়ে যায়।

ওই সময় পানির প্রবাহ নেমে দাঁড়ায় মাত্র ৭৫ কিউসেক (ঘনফুট প্রতি সেকেন্ডে)। অন্যদিকে মে মাসে সিলেটে মনু নদীর প্রবাহ কমে দাঁড়ায় মাত্র ২০৫ কিউসেকে। এর কারণ, উজানে ভারত পানি প্রত্যাহার করে নেয়। সাধারণ সময়ে এ নদীতে যে পরিমাণ পানি থাকে এই পরিমাণ তার চেয়ে দশ গুন কম। এই দুটি নদীর মতো বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অভিন্ন ৫৪টি নদী আছে। তবে দুটি দেশের মধ্যে এ বিষয়ে মাত্র একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে ১৯৯৬ সালে। এর আওতায় গঙ্গা নদীতে পানির ভাগাভাগি দেখাশোনা করা হয়।

ঢাকা ও নয়া দিল্লি ওই ৬টি নদীর পানির প্রবাহের ডাটা প্রথম বিনিময় করে ১৯৮৫ সালে। তারপর থেকে উল্লেখিত ওই ৬টি নদীর পানি ভাগাভাগি নিয়ে দুই দেশ আলোচনা করেছে। কিন্তু তারা কোনো ঐকমতে পৌঁছাতে পারে নি।

সর্বশেষ পানি প্রবাহের চার্ট অনুযায়ী, মার্চে খোয়াই নদীর পানি প্রবাহ কমে দাঁড়ায় ৩৭৮ কিউসেকে। গোমতিতে ৫০৭ কিউসেকে। ধরলায় ২২৫৩ কিউসেকে এবং দুধকুমারে ২৫৯১ কিউসেকে। উজানে পানি প্রত্যাহারের ফলে নদীগুলোর এ অবস্থায় হয়। অন্যদিকে বর্ষা মওসুমে নদীগুলোর লেভেল অতি মাত্রায় বৃদ্ধি পায়।

যৌথ নদী কমিশনের সূত্র বলেছেন, ১৯৯৬ সালের গঙ্গা পানি চুক্তি অনুযায়ী যে পরিমাণ পানি পাওয়ার কথা এ বছরের প্রথম দুই মাস জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে খরা মৌসুমে তার চেয়ে ৬৮০০০ কিউসেক পানি কম পেয়েছে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আন্তঃসীমান্ত ৫৪টি নদী আছে। এসব নদীর পানি বন্টন নিয়ে যে বিপত্তি আছে তা সমাধানের জন্য গঠন করা হয়েছিল যৌথ নদী কমিশন।