সিটি নির্বাচন নিয়ে কূটনীতিকদের যা বলল বিএনপি

ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের পদে পদে আচরণবিধি লঙ্ঘণসহ নানা ঘটনা কূটনীতিকদের কাছে তুলে ধরেছে বিএনপি।

রোববার বিকালে ঢাকায় বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠকে দলটির নেতারা এসব অভিযোগ করেন।

রুদ্ধদ্বার এ বৈঠকে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপি দলীয় প্রার্থীদের ওপর সরকারি দলের হামলা, হয়রানি, মামলা ও গ্রেফতারসহ নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন, ইভিএমের বিরোধীতাসহ বিভিন্ন ঘটনা কূটনীতিকদের ব্রিফিং করা হয়।

গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিকাল ৪টা থেকে থেকে ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, কানাডা, ভারত, ফান্স, তুরস্ক, জার্মানী, অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ ২০ দেশের কূটনীতিকরা উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপির পক্ষে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, কেন্দ্রীয় নেতা সাবিহউদ্দিন আহমেদ, আবদুল আউয়া মিন্টু, শামা ওবায়েদ, অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান, অ্যাডভোকেট ফাহিমা নাসরিন মুন্নী, জেবা খান, অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, মীর হেলাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

পর দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে যা চলছে, সার্বিক প্রেক্ষাপট, সিটি নির্বাচনকে সামনে রেখে যেসব ঘটনা ঘটছে তা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। মানুষ অধিকারহীন অবস্থায় আছে। সেখানে মানুষের অধিকার থাকবে সেখানে ভোট হবে এবং যেখানে ভোটের প্রক্রিয়া সুষ্ঠু হবে সেখানে ভোট হবে-কিন্ত এর কোনটাই তো দেশে নেই। এসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

তিনি বলেন, সরকারি দলের প্রার্থীরা নির্বাচনে আচরণ বিধি লঙ্ঘনে করে রাস্তার ফুটপাতেরও নির্বাহী ক্যাম্প স্থাপন, বড় বড় পোস্টার ছাপানো, মাইক ব্যবহার সময়-অসময়ে ইত্যাদি কাজ করে যাচ্ছে। এগুলোর বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টিগোচরও হচ্ছে না, আগামী ২৮ জানুয়ারি যে বৈঠক ডাকা হয়েছে তার আলোচ্যসূচিতেও নেই। এরকম অবস্থায় নির্বাচনে কোনো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই। যেখানে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হবে না সেখানে নির্বাচনের ওপর মানুষের ভরসা কোত্থেকে আসবে? যত ধরনের বাধা-বিপত্তি সৃষ্টি করে একপক্ষকে আটকিয়ে রাখা হচ্ছে এবং আরেক পক্ষ সব আইনভঙ্গ করে নির্বাচনী কার্যক্রম চালাচ্ছে।

ঢাকার উত্তরের মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল ও দক্ষিণের প্রার্থী ইশরাক হোসেনের ওপর হামলার ঘটনা এবং তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলা দেয়ার বিষয়টিও কূটনীতিকদের অবহিত করা হয়েছে বলে জানান খসরু।

ইভিএমের ভোটের বিষয়টিও কূটনীতিকদের জানানো হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ওরা (কূটনীতিকরা) প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত দেশ। তারা কেউ কিন্তু ইভিএম ব্যবহার করছে না। কারণ ইভিএম ব্যবহার করার অর্থ হচ্ছে যে, প্রোগ্রামিংটা যারা করবে তাদের পক্ষে যাবে। প্রোগ্রামে যা থাকবে তাই রেজাল্ট হবে-এটা পরিষ্কার। বেশিরভাগ দেশে ইভিএম ব্যবহার হচ্ছে না। দুই-চারটা দেশে যারা ব্যবহার করছে সেখানে সমস্যা দেখা দিচ্ছে।

বাংলাদেশের মানুষ সারা জীবন ব্যালট পেপারে ভোট দিয়ে আসছে কোনো সমস্যা নাই। সেখানে ৪ হাজার কোটি টাকায় ইভিএম এনে

ভোটকে প্রশ্নবিদ্ধ করে মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেয়ার যে প্রক্রিয়া এটা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

শামা ওবায়েদ বলেন, কূটনীতিকরা নির্বাচন সম্পর্কে আমাদের কাছে জানতে চান। আমরা পুরো বিষয়টি তাদের অবহিত করেছি।