এবার কোয়ারেন্টিনে গেলেন হোয়াইট হাউসের শীর্ষ কর্মকর্তা ডা. ফাউসি

trump and fawsi

কোভিড-১৯ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যিনি সবচেয়ে বেশি ভোকাল সেই ডা. অ্যান্থনি ফাউসি হোম কোয়ারেন্টিনে গেছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেসের (এনআইএআইডি) পরিচালক ও হোয়াইট হাউসের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা এবং করোনাভাইরাস বিষয়ক ট্রাস্কফোর্সের অন্যতম সদস্য।

হোয়াইট হাউসের একজন কর্মকর্তা করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর তিনিও করোনার ‘সামান্য ঝুঁকিতে’ রয়েছেন এই বিবেচনায় কোয়ারেন্টিনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন ফাউসি।

সিএনএনসহ যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম ফাউসির কোয়ারেন্টিনকে ‘মোডিফায়েড হোম কোয়ারেন্টিন’ বলে উল্লেখ করেছে।এনবিসির প্রতিবেদনে মোডিফায়েড হোম কোয়ারেন্টিনের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, ফাউসি দুই সপ্তাহ বাসায় থেকে কাজ করবেন। আর অতি প্রয়োজনে অফিসে গেলেও মাস্ক পড়ে অন্যদের কাছ থেকে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখবেন।

আর সীমিত ঝুঁকির ব্যাখ্যায় সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যে ব্যাক্তি করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন তার সরাসরি কাছাকাছি কিংবা সংস্পর্শে তিনি ছিলেন না।তারপরও সম্প্রতি হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা করোনা পজিটিভ শনাক্ত হওয়ায় সতর্কতাস্বরূপ হোম-কোয়ারেন্টাইনে থাকবেন তিনি। বাসায় থেকেই অনলাইনে নিজের কাজকর্ম সারবেন এনআইএআইডি পরিচালক।

এর আগে করোনাভাইরাস সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকায় সেলফ-কোয়ারেন্টিনে গেছেন হোয়াইট হাউসের দুই শীর্ষ কর্মকর্তা। যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) পরিচালক রবার্ট রেডফিল্ড এবং খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনের (এফডিএ) কমিশনার স্টিভেন হান হোম-কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। এবার তাদের সঙ্গে যোগ দিলেন ড. অ্যান্থনি ফাউসি।

তবে অন্যদের মতো কড়া নিষেধাজ্ঞা থাকছে না হোয়াইট হাউসের স্বাস্থ্য উপদেষ্টার জন্য। প্রয়োজনে ডাকা হলে পর্যাপ্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করে হোয়াইট হাউসে প্রবেশ করতে পারবেন ড. ফাউসি।

এর আগে, শুক্রবার রাতে এফডিএ’র এক মুখপাত্র রয়টার্সকে জানিয়েছেন, স্টিভেন হান করোনা পজিটিভ এক ব্যক্তির সংস্পর্শে যাওয়ায় সেলফ-কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে করোনা টেস্ট করিয়েছেন এবং এর ফলাফল নেগেটিভ এসেছে। তারপরও সিডিসির নির্দেশনা মোতাবেক আগামী দুই সপ্তাহ কোয়ারেন্টিনে থাকবেন ড. হান।

পলিটিকো জানিয়েছে, ড. ফাউসি সম্প্রতি যে করোনা পজিটিভ ব্যক্তির সংস্পর্শে গিয়েছিলেন তিনি হচ্ছেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্টের প্রেস সেক্রেটারি কেটি মিলার। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অন্যতম জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা ও ভাষণ লেখক (স্পিচ রাইটার) স্টিফেন মিলারের স্ত্রী কেটির শরীরে গত শুক্রবার করোনাভাইরাস শনাক্ত হন। এতে হোয়াইট হাউসের মধ্যেও প্রাণঘাতী ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

শনিবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট রেডফিল্ডের এক মুখপাত্রের বরাতে জানিয়েছে, গত বুধবার সিডিসি প্রধান হোয়াইট হাউসের করোনায় আক্রান্ত এক কর্মীর সংস্পর্শে গিয়েছিলেন। এ কারণে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হওয়ায় আগামী দুই সপ্তাহ তিনি বাসায় থেকে অনলাইনেই দায়িত্ব পালন করবেন।

এদিকে ড. ফওসি, ড. হান ও রবার্ট রেডফিল্ড তিনজনেরই আগামী মঙ্গলবার সিনেট কমিটির সামনে করোনা নিয়ে পদক্ষেপের বিষয়ে জবাবদিহি করার জন্য হাজির হওয়ার দিন ধার্য রয়েছে। তবে তারা কোয়ারেন্টিনে থাকায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমেই জবাবদিহি করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।