মানুষ মৃত্যু আতঙ্কে ভুগছে : ফখরুল

mirza fokrul
ফাইল ছবি

সরকারের ব্যর্থতায় দেশের মানুষ মৃত্যু আতঙ্কে ভুগছে মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দেশের মানুষ জীবিকার চিন্তায় অস্থির হয়ে উঠেছে। গোটা দেশের মানুষ তাদের যে মৌলিক অধিকার ভোট দিয়ে তারা পার্লামেন্ট নির্বাচন করবেন সরকার করবেন সেই জায়গাটি হরণ করে নেয়া হয়েছে।

বুধবার (২২ জুলাই) দুপুরে সদ্য প্রয়াত বিএনপি নেতা শাহজাহান সিরাজের স্মরণে ‘স্বায়ত্তশাসনের সংগ্রামকে স্বাধীনতা যুদ্ধের রূপান্তরে শাহজাহান সিরাজের ভূমিকা’ শীর্ষক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট রিসার্চ অ্যান্ড কমিউনিকেশনের (বিএনআরসি) উদ্যোগে এ ভার্চুয়াল আলোচনা সভা হয়।

সির্জা ফখরুল বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে আজ ইতিহাসকে বিকৃত করা হচ্ছে, যার যার মতো করে নিয়ে আসা হচ্ছে। তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থ দলীয় স্বার্থকে চরিতার্থ করার জন্য। তারা তাদের মতো করে ইতিহাস রচনা করছেন। আমরা খুব কষ্ট পাই, দুঃখ পাই। কারণ আমরা যখন দেখি স্বাধীনতা যুদ্ধের যারা বীর যোদ্ধা, যারা সংগ্রাম করেছেন যারা তাদের জীবনকে বাজি রেখে লড়াই করেছেন, যারা বেঁচে নেই চলে গেছেন তাদের সম্পর্কে যখন আলোচনা উঠে তখন আমরা দেখি সেই মহান ব্যক্তিকে এদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে তিনি অবদান রেখেছেন তাকে খাটো করে দেখানো হয়। আমি খুব কষ্ট পেয়েছি কয়েক দিন আগে কয়েকজন বাংলাদেশের তথাকথিত বুদ্ধিজীবী তারা কিছু লেখা লিখেছেন শাহজাহান সিরাজের সম্পর্কে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমি নাম বলতে চাই না। আমি শুধু এইটুকু বলতে চাই, একজন মানুষের যা কিছু পাওনা সেটুকু তাকে দেওয়া প্রত্যেক রাজনীতিক-সাংবাদিক সবার দায়িত্ব। বিশেষ করে স্বাধীন বাংলাদেশের নাগরিকদের দায়িত্ব আমাদের একটা স্বাধীন দেশ দেওয়ার জন্য।’

তিনি বলেন, শাজহান সিরাজ এই দেশের জন্য শুধু যুদ্ধ করেননি পরবর্তীতে অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছেন; সংসদ সদস্য ছিলেন পাঁচবার। মন্ত্রী হয়ে দেশের জন্য তিনি কতগুলো মৌলিক কাজ করেছেন। পরিবেশ দূষণ রোধে তার মন্ত্রণালয়ের কিছু পদক্ষেপ ছিল, যা অত্যন্ত কার্যকরী। তিনি থ্রি হুইলার নিষিদ্ধ করলেন, পলিথিন শপিংব্যাগ নিষিদ্ধ করেছেন। সামাজিক বনায়নের ব্যাপক কর্মসূচি নিয়েছেন। এ কাজগুলো কিন্তু বাংলাদেশের বিনির্মাণে যথেষ্ট ভূমিকা রাখছে।

ফখরুল বলেন, পাকিস্তান ভাগ হওয়ার পর যারা স্বাধীন বাংলার জন্য লড়াই করেছেন, আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন তারা বাংলাদেশের মানুষের অধিকার যেন ফিরে পায় সে জন্যই ১৯৭১ সালে যুদ্ধ করেছেন। তারা এ দেশের মানুষের ভোটের অধিকার, ভাতের অধিকার, নাগরিক অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার জন্যই এ দেশকে স্বাধীন করেছেন।

তিনি বলেন, তারা আজকের এ বাংলাদেশকে দেখতে চাননি। তারা দেখতে চেয়েছেন এমন একটি দেশ, যে দেশে মানুষ তাদের সব অধিকার ফিরে পাবে এবং সুখে-শান্তিতে বসবাস করবে। কিন্তু স্বাধীন বাংলাদেশে আজ যারা ক্ষমতায় আছেন তারা স্বাধীনতার দল হিসেবে নিজেদের দাবি করলেও অত্যন্ত সচেতনভাবে তারা এ দেশের মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা যদি সত্যিকার অর্থে আমাদের পূর্বপুরুষদের সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে চাই; তবে ১৯৭১ সালের মতো একটি জাতীয় ঐক্য তৈরি করতে হবে। সেই ঐক্যের মাধ্যমেই এদেশের মানুষের ভোটের অধিকার ও অন্যান্য অধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে।

বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক সংসদ সদস্য জহিরউদ্দিন স্বপনের পরিচালনায় আলোচনা সভায় জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব, স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের অন্যতম নেতা নুরে আলম সিদ্দিকী, বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীরবিক্রম, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী বক্তব্য রাখেন।