মেজর সিনহা হত্যা নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে ৪ আসামি

sinha mohammad reshed
সেনাবাহিনীর সাবেক মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ। ফাইল ছবি

সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা হত্যায় গ্রেফতার চার আসামি জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ ও চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে।

র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

সোমবার বিকালে র‍্যাবের সদর দফতরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ বলেন, ‘আত্মসমর্পণকারী চার আসামি জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ ও চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে। এই চার আসামির কাছ থেকে আরো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যেতে পারে। তাই র‍্যাবের পক্ষ থেকে আদালতে তাদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে।’

র‍্যাবের সংবাদ সম্মেলনে একজন সাংবাদিক এই মামলার সিজার লিস্ট নিয়ে জানতে চান। মামলার সিজার লিস্টে ল্যাপটপ বা ক্যামেরার নাম না থাকার বিষয়ে র‍্যাবের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ওই সাংবাদিক।

তখন জবাবে র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক বলেন, ‘আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের আগে আমরা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী সিফাত এবং শিপ্রাকে জিজ্ঞাসাবাদ করব। শিপ্রা ও সিফাতকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পরিপ্রেক্ষিতে এই বিষয়ে আমরা পূর্বতন যারা (মালামাল) জব্দ করেছেন তাদের এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করব। অর্থাৎ কেবল কোনো খবরের ভিত্তিতে বা কোনো তথ্যের ভিত্তিতে না গিয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রথমত সাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদ সাপেক্ষে এসব ইলেকট্রনিক ডিভাইসের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য পেলে সেই অনুযায়ী তিনি এগুলো সংগ্রহ করার চেষ্টা করবেন।’

এ সময় র‍্যাব কর্মকর্তা মামলার তদন্তের ক্ষেত্রে নিরপেক্ষতার কথা উল্লেখ করে আরো বলেন, ‘র‍্যাব অকুণ্ঠ চিত্তে বলতে চায়, এই মামলাটি সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে এবং প্রভাবমুক্ত হয়ে তদন্ত করবে। এই মামলার অন্যতম মুখ্য উদ্দেশ্য প্রকৃত আসামীদের শনাক্ত করা এবং এর পাশাপাশি ঠিক কী কারণে এ রকম একটি অনাকাঙ্ক্ষিত এবং অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটেছে, তা র‍্যাব তদন্ত করবে।

প্রসঙ্গত, ঈদের আগের রাতে (৩১ জুলাই) কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভ রোডে টেকনাফের বাহারছড়া চেকপোস্টে তল্লাশির সময় পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। ৫ আগস্ট নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বাদী হয়ে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পরিদর্শক লিয়াকত আলী, ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ নয়জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

৬ আগস্ট বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপসহ সাত আসামি কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। মামলার শুনানিতে র‌্যাবের পক্ষে প্রত্যেক আসামির ১০ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত লিয়াকত, প্রদীপ ও নন্দ দুলাল রক্ষিতকে সাত দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। বাকি চারজনকে দুই দিন কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেন। অন্য দুই আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।