ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়, আখাউড়ার এসআই ক্লোজড

police

ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়ের অভিযোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া থানার এসআই মতিউর রহমানকে ক্লোজ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকালে তাকে আখাউড়া থানা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশলাইনে পাঠানো হয়।

একই অভিযোগে অভিযুক্ত এসআই হুমায়ুন কবির অসুস্থজনিত কারণে অনেক আগেই পুলিশলাইনে ক্লোজড হয়েছেন। এ ছাড়া এএসআই খোরশেদ, কনস্টেবল প্রশান্ত এবং সৈকত ইতিমধ্যে বদলি হয়ে অন্যত্র চলে যাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (আখাউড়া-কসবা সার্কেল) মিজানুর রহমান ভূঁইয়া নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, আখাউড়া পৌরশহরের মসজিদপাড়া গ্রামের বাসিন্দা হারুন মিয়া বুধবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (আখাউড়া) আদালতে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়ের অভিযোগে আখাউড়া থানার অভিযুক্ত ওই পাঁচ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করেন। আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ সুপারকে তদন্তসাপেক্ষে প্রতিবেদনটি দাখিলের জন্য আদালত আদেশ প্রদান করেন।

আদালতে করা মামলা সূত্রে জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌরশহরের মসজিদপাড়া গ্রামের বাসিন্দা হারুন মিয়ার প্রতিবেশী হাসিনা বেগম (চিকুনি বেগম) ও তার মেয়ে তানিয়া এবং তানজিনার সঙ্গে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যরা একযোগে মিলিত হয়ে দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসা করে আসছে।

হারুন প্রতিবেশী চিকুনির মাদক ব্যবসায় বাধা দিলে চিকুনি ক্ষুব্ধ হয়ে পুলিশ সদস্যদের হারুনের পেছনে লেলিয়ে দেন। গত ২৬ মে গভীর রাতে অভিযুক্ত পাঁচ পুলিশ সদস্য নাটকীয়ভাবে চিকুনি বেগমকে গ্রেফতার দেখিয়ে তার প্ররোচনায় পূর্বপরিকল্পিতভাবে ওই পুলিশ সদস্যরা হারুনের বাড়িতে প্রবেশ করে তল্লাশির নামে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে। এ সময় ক্রসফায়ার ও হত্যার ভয় দেখিয়ে ঘরে থাকা ৪০ হাজার টাকা বলপূর্বক ছিনিয়ে নেন।

এ ছাড়া তারা ঘরের আসবাবপত্র তছনছ করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। পরে ওই দিনই ভোর ৪টার দিকে পুনরায় ওই পুলিশ সদস্যরা এসে হারুন ও তার স্ত্রীকে মিথ্যা মাদক মামলা ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের ভয় দেখিয়ে তাদের গ্রেফতার করে এক লাখ টাকা দাবি করে। তা না হলে তাদের মাদক মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে কোর্টে চালান দেয়া হবে বলে হুমকি দেয়।

ওই সময় তারা প্রাণরক্ষায় অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের ৫০ হাজার টাকা দিয়ে রফাদফা করলে হারুন ও তার স্ত্রীকে ছেড়ে দেয়। চলে যাওয়ার সময় বিষয়টি ওপরের অফিসারদের জানালে হারুনকে ক্রসফায়ার দেয়া হবে বলে হুমকি দেন পুলিশ সদস্যরা।

এ ব্যাপারে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (আখাউড়া-কসবা সার্কেল) মিজানুর রহমান ভূঁইয়া জানান, শৃঙ্খলাবিরোধী কাজ করার অভিযোগে তাদের ক্লোজ করা হয়েছে। তদন্তপূর্বক অপরাধের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।