শোক দিবসের কর্মসূচি স্বাস্থ্যবিধি মেনে পালনের তাগিদ

১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসকে সামনে রেখে মাসব্যাপী কর্মসূচি পালন করছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। তবে করোনাভাইরাস মহামারির কারণে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে বারবার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে দলীয় নেতাকর্মীসহ সকলকে। ভাইরাসের কারণে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর আয়োজনে জাতীয় শোক দিবসের কোনো আয়োজন এবার হচ্ছে না।

দিবসটিকে সামনে রেখে ১ আগস্টের প্রথম প্রহরে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর ভবন প্রাঙ্গণ আলোর মিছিল বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ। একই সময়ে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করা হয়। এর মধ্যে দিয়েই জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচি শুধু করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।

এরপর প্রতিদিনই দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে নানা কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। তবে এসব আয়োজনে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে বারবারই নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

স্বাস্থ্যবিধিকে দূরত্ব দিয়ে ১৪ আগস্ট রাত সাড়ে আটটায় শোক দিবস উপলক্ষে বিশেষ ওয়েবিনার আয়োজন করা হয়েছে। ‘৭৫ পরবর্তী বাংলাদেশ ও কিছু অজানা কথা’ শীর্ষক এ ওয়েবিনারে অংশ নিচ্ছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, বেগম মতিয়া চৌধুরী, আব্দুর রহমান; বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মুখপত্র নূহ-উল-আলম লেনিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি।

এদিকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সকল আয়োজনে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে কেন্দ্রীয়ভাবে তাদেরকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যার অংশ হিসেবে সবধরনের গণজমায়েত পরিহার করে শোক দিবসের কর্মসূচি পালন করা হবে বলে তারা জানান।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গাজী গোলাম সারোয়ার বাবু জানান, জাতীয় শোক দিবসকে কেন্দ্র করে পুরো আগস্ট মাসজুড়েই যুবলীগের নানা কর্মসূচি রয়েছে। তবে সকল আয়োজনেই স্বাস্থ্যবিধিকে অত্যধিক গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।

তিনি জানান, আগস্ট মাসজুড়ে মোট ১০ দিন যুবলীগের নানা কর্মসূচি রয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি কর্মসূচি ১৫ আগস্ট। আয়োজনে মিলাদ মাহফিল, দোয়া এবং দুস্থ-এতিমদের মধ্যে খাদ্য বিরতণকে বেশি প্রাধান্য দেয়া হয়েছে।

এদিকে ১৫ আগস্টের দিনব্যাপী কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সূর্যোদয়কালে বঙ্গবন্ধু ভবন এবং কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারাদেশে সংগঠনের সকল স্তরের কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ ও কালো পতাকা উত্তোলন।

সকাল ৯টায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্মৃতি-বিজড়িত ধানমন্ডিস্থ বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ। (রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করার কারণে সময়সূচি সমন্বয় করে নিতে হবে)। এছাড়াও ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন এবং নগরীর প্রতিটি শাখা থেকে শোক মিছিলসহ বঙ্গবন্ধু ভবনে শ্রদ্ধা নিবেদন। সকাল ১০টা বনানী কবরস্থানে ১৫ আগস্টের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন, মাজার জিয়ারত, ফাতেহা পাঠ, মোনাজাত ও মিলাদ মাহফিল।

একই সময়ে টুঙ্গীপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন, ফাতেহা পাঠ, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল। বাদ জোহর দেশের সকল মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল। সুবিধামতো সময়ে মন্দির, প্যাগোডা, গির্জা, উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা। দুপুরে অস্বচ্ছল, এতিম ও দুঃস্থ মানুষদের মাঝে খাদ্য বিতরণ। বাদ আসর বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল।

এছাড়া পুরো আগস্ট মাসজুড়েই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সকল অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের মাধ্যমে দেশে এবং বিদেশে জাতির জনকের ৪৫ তম শাহাদাত বার্ষিকী পালন করা হবে।