দুই মামলায় ইরফান ও দেহরক্ষীর ১৪ দিনের রিমান্ড চায় পুলিশ

ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিম ও তার বডিগার্ড জাহিদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক আইনে পৃথক দুটি মামলায় সাত দিন করে মোট ১৪ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছে পুলিশ।

আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও চকবাজার থানার পুলিশ পরিদর্শক মো. দেলোয়ার হোসেন আসামিদের বিরুদ্ধে এই আবেদন করেন। একইসঙ্গে উভয় মামলায় দুই আসামিকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন পাঠানো হয়েছে।

এর আগে গত মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর চকবাজার থানায় ইরফান সেলিম ও তার দেহরক্ষী জাহিদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক আইনে দুটি পৃথক মামলা দায়ের করে পুলিশ। পরে গত বুধবার ঢাকা মহানগর হাকিম সাদবীর ইয়াছির আহসান চৌধুরীর তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনের দুটি মামলার এজাহার গ্রহণ করে আগামী ১৭ নভেম্বর তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে ঢাকা মহানগর হাকিম মামুনুর রশিদের আদালত তাদের বিরুদ্ধে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দুটি মামলার এজাহার গ্রহণ করে আগামী ৩ ডিসেম্বর তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়, ২৬ অক্টোবর ১১টার দিকে বিশেষ অভিযান পরিচালনাকালে ঢাকা মহানগরীয় শাহবাগ থানাধীন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের সামনে অবস্থানকালে র‍্যাবের গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারেন যে, ঢাকা মহানগরীর চকবাজার থানাধীন দেবীদাস ঘাট লেন ২৬ , চান সর্দার দাদা বাড়ী ভবনে বিপুল পরিমাণ মাদ্রব্যসহ কয়েকজন ব্যক্তি অবস্থান করছে। এরপর সাড়ে ১২ টার দিকে ঘটনাস্থলে দুইজন লোক দৌড় দিয়ে ভবনে ওপরের দিকে উঠে যায়। ভবনটিকে ফোর্সের সহায়তায় ঘেরাও করে রাখে র‍্যাব। এরপর সাক্ষীদের উপস্থিতিতে সেই ভবনে চতুর্থ তলায় তল্লাশী করা হয়। সেখান থেকে জাহিদুল মোল্লাকে আটক করে হেফাজতে নেওয়া হয়। এ সময় তার দেহ তল্লাশী করে একটি বিদেশি পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলিসহ একটি ম্যাগাজিন পাওয়া যায়। এ সময় তার থেকে চারশো ছয় পিস ইয়াবা ট্যাবলেটও পাওয়া যায়। আর দুই পকেট থেকে উদ্ধার করা হয় দুটি ‘টাচ মোবাইল’।

এজাহারে আরো বলা হয়, আরেকটি আভিযানিক দল ভবনের ৪র্থ তলার অপর একটি কক্ষ থেকে আসামি মোহাম্মদ ইরফান সেলিমকে আটক করে। এ সময় স্বাক্ষীদের উপস্থিতিতে ইরফানের ব্যক্তিগত বিছানার ডান পাশের তোষকের নিচ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলিসহ একটি ম্যাগাজিন পাওয়া যায়। এ সময় তার রুম থেকে ছয়টি বিদেশি বিয়ার জব্দ করা হয়। পরে পঞ্চম তলা থেকে একটি এয়ারগান, কালো রঙের দুটি ছোরা, একটি চাইনিজ কুড়াল, বিদেশি মদ ও হুইস্কি, ৩৮ টি কালো রঙের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বাটারি এবং চার্জারসহ ওয়াকিটকি, হ্যান্ডকাপসহ, ক্যামেরাযুক্ত ড্রোন উদ্ধার করা হয়।

এজাহারে আরো উল্লেখ আছে, অবৈধ অস্ত্র, গুলি এবং মাদক বিষয়ে আসামি ইরফান ও জাহিদকে জিজ্ঞাসা করা হলে তারা দুজন সন্তোষজনক কোনো জবাব কিংবা কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারিনি।

এদিকে নৌবাহিনীর কর্মকর্তাকে মারধর করার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় গত বুধবার আদালত আসামি ইরফান ও তার দেহরক্ষী জাহিদের তিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। দুই আসামি রিমান্ডে রয়েছে বর্তমানে।