পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে দিল্লিতে ঢুকল বিক্ষুদ্ধ কৃষকরা

কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে পঞ্জাব থেকে মিছিল করে ‘দিল্লি চলো’র ডাক দিয়েছিলেন কৃষকরা। বৃহস্পতিবার সারা দিন ধরেই হরিয়ানার পুলিশ বিভিন্নভাবে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করেছে বিক্ষুদ্ধ কৃষকদের।

সেই চেষ্টা আরও মরিয়া হয়েছে বৃহস্পতিবার রাত থেকে। প্রবল ঠান্ডার মধ্যেই হরিয়ানার সোনপতে রাত ১১টার দিকে কৃষকদের উপর জলকামান চালায় পুলিশ। উদ্দেশ্য একটাই, কৃষকদের দিল্লি ঢুকতে বাধা দেয়া। খবর আনন্দবাজার পত্রিকা ও এনডিটিভির।

শুক্রবার সকাল থেকেই দিল্লির সীমান্ত লাগোয়া এলাকায় কৃষকরা ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। তাদের আটকাতে নিজেদের শক্তি প্রয়োগ করছে পুলিশ।

সকাল থেকে শক্তি প্রয়োগ করার পর অবশেষে শুক্রবার দুপুরে সংঘর্ষের পথ থেকে সরে এল পুলিশ। বড় জয় পেলেন কৃষি বিল বাতিলের দাবিতে আন্দোলনকারী কৃষকরা। অবশেষে তাদের দিল্লিতে ঢুকতে অনুমতি দিল পুলিশ।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই সোনপতে পৌঁছে গিয়েছিল দুই শতাধিক কৃষকের একটি দল। রাস্তার মধ্যে দাঁড়িয়েই তারা স্লোগান দিচ্ছিল।

পুলিশও তাদের ব্যারিকেড দিয়ে জলকামান, কাঁদানে গ্যাস নিয়ে তৈরি ছিল। রাত ৯টার দিকে সেখানে পরিস্থিতি কিছুটা উত্তপ্ত হয়। কৃষকরা পুলিশকে ব্যারিকেড সরিয়ে নিতে অনুরোধ করে। পিছিয়ে যেতে রাজি হয়নি কৃষকরাও।

রাতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ে কনকনে ঠান্ডা। তার মধ্যেই প্রতিবাদরত কৃষকদের ওই দলের উপর জলকামান ছোড়ে হরিয়ানা পুলিশ।

যদিও বৃহস্পতিবার সারা দিন সর্বশক্তি দিয়ে চেষ্টা করেও কৃষকদের আটকাতে পুরোপুরি সফল হয়নি হরিয়ানার বিজেপি সরকার।

দিল্লি ঢোকার জন্য ইতিমধ্যেই প্রায় ৫০ হাজার কৃষক পৌঁছে গিয়েছে দিল্লি-হরিয়ানা সীমানার বিভিন্ন এলাকায়। শুক্রবার দিল্লি ঢোকার জন্য প্রস্তুত তারাও।

বিভিন্ন কৃষক সংগঠনের দিল্লি ঢোকার আর্জি করোনা মহামারীর দোহাই দিয়ে ইতিমধ্যেই খারিজ করে দিয়েছে দিল্লি পুলিশ। দিল্লির পুলিশ কমিশনার এস এন শ্রীবাস্তব বলেছেন, কোভিড-১৯ নির্দেশিকার জন্য রাজনৈতিক সমাবেশের অনুমতি দেয়া সম্ভব হয়। আমরা অনুরোধ খারিজ করেছি।

দিল্লি সীমান্তে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। দিল্লির সিংঘু সীমান্তে বিক্ষোভরত কৃষকদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছে পুলিশ।

দিল্লি- বাহাদুরপুর হাইওয়েতে তিকরি সীমান্তের কাছে লরি দিয়ে রাস্তা আটকেছিল পুলিশ। বিক্ষোভরত কৃষকরা ট্রাক্টর দিয়ে সেই লরি রাস্তা থেকে সরানোর চেষ্টা করে।পুলিশ বাধা দিলে হয় ধস্তাধ্বস্তি। এর পরই জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস চালায় পুলিশ। সেখানে কৃষকদের হঠাতে লাঠিচার্জ করা হয়েছে।

এই বিক্ষোভের জেরে দিল্লি-গুরুগ্রামে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তায় গাড়ির উপর নজরদারি চালাচ্ছেন সিআরপিএফ জওয়ানরা। দিল্লি মেট্রো রেল কর্পোরেশন সীমান্তবর্তী বিভিন্ন মেট্রো স্টেশনগুলি বন্ধ করে দিয়েছে।

বিক্ষোভরত কৃষকদের সঙ্গে কথা বলার জন্য কেন্দ্রকে আর্জি জানিয়েছেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংহ।

দিল্লি যেতে শুক্রবারও পঞ্জাবের সীমানা পেরিয়ে হরিয়ানায় ঢোকার চেষ্টা করছেন কৃষকরা। হরিয়ানা পঞ্জাব সীমানায় অম্বালার কাছে শাম্ভুতে জড়ো হয়েছেন প্রচুর সংখ্যক কৃষক। সেখানে কৃষকদের মিছিলে মহিলাদের উপস্থিতি নজর কাড়ছে।

এদিকে কৃষকদের বিক্ষোভকে সমর্থন জানাতে পানিপথ পৌঁছলেন কংগ্রেস নেতা রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা। মথুরাতে যমুনা এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধ কৃষকদের

দিল্লিতে ঢুকতে দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি কৃষক নেতাদের। রামলীলা ময়দানে আলোচনার প্রস্তাব। ৯টি স্টেডিয়ামকে অস্থায়ী জেলে রূপান্তরিত করার জন্য দিল্লি সরকারের কাছে অনুমতি চেয়েছিল দিল্লি পুলিশ। তা খারিজ করেছে দিল্লি সরকার।