ওসি প্রদীপের ইয়াবা বাণিজ্য জেনে যাওয়ায় সিনহাকে হত্যা: র‌্যাব

কক্সবাজারের টেকনাফ থানার তৎকালীন ওসি প্রদীপ কুমার দাশের ইয়াবাবাণিজ্য ও নির্যাতনের নানা কাহিনী জেনে যাওয়ায় অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়।

জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময়ে থানায় বসে ওসি প্রদীপসহ পাঁচজন মিলে এই হত্যার পরিকল্পনা করেন বলে সিনহা হত্যা মামলার তদন্তকারী সংস্থা র‌্যাব জানিয়েছে।

রবিবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বাহিনীটির মুখপাত্র লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ।

চারমাস দশদিন অর্থাৎ ১৩০ দিন মামলাটির তদন্তের পর রবিবার মামলাটির অভিযোগপত্র আদালতে জমা দিয়েছে র‌্যাব। মামলায় সর্বমোট ১৫ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এরমধ্যে নয়জন টেকনাফ থানার বরখাস্ত পুলিশ সদস্য, তিনজন এপিবিএন সদস্য এবং স্থানীয় তিনজন বেসামরিক লোক রয়েছেন। যাদের ১৪ জনকে র‌্যাব গ্রেপ্তার করেছে। বর্তমানে তারা জেলহাজতে রয়েছেন এবং সাগর দেব নামে একজন পুলিশ সদস্য পলাতক রয়েছেন।

৩১শে জুলাই রাতে কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভ সড়কে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ। এই ঘটনায় নিহতের বোন বাদী হয়ে আদালতে একটি মামলা করেন।

আশিক বিল্লাহ বলেন, হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারি প্রদীপ কুমার দাস। হত্যার ঘটনা ভিন্ন খাতে নিতে ওসি প্রদীপ বাকি অভিযুক্তদের সহযোহিতা করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা আজ আদালতে ২৬ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।

র‌্যাব জানায়, মেজর সিনহা একটি ইউটিউব চ্যানেল চালু করার কারণে তিনি কক্সবাজার এলাকায় ভিডিও ধারণ করছিলেন। এসময় তার সঙ্গে স্থানীয়দের সখ্যতা গড়ে ওঠে। সেসময় ওসি প্রদীপের নির্যাতনের ঘটনা এবং ইয়াবা বাণিজ্য সম্পর্কে তথ্য পান। এই বিষয়ে ওসি প্রদীপের বক্তব্য নিতে সিনহা থানায় যায়। ইতিমধ্যে ওসি প্রদীপ সিনহা সম্পর্কে সবকিছু জেনে যাওয়া তাকে বক্তব্য না দিয়ে উল্টো সরাসরি হুমকি দেন। সেই সঙ্গে এই কাজ থেকে বিরত থাকতে বলেন। কিন্তু ওসি প্রদীপের কথা না শুনায় মেজর সিনহাকে হত্যা করা হয়।

মূলত দুটি কারণে ওসি প্রদীপ মেজর সিনহাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন বলে মনে করে র‌্যাব। এ ব্যাপারে আশিক বিল্লাহ বলেন, যেহেতু ওসি প্রদীপ টেকনাফে একটি রাজ্য গড়ে তুলেছিলো আর সেটা যাতে কর্তৃপক্ষকে না জানান সেই জন্য ওসি প্রদীপ সরাসরি হুমকি দেয়। কিন্তু সিনহা তাদের কর্মকাণ্ড অব্যাহৃত রাখেন। এই কারণে ওসি প্রদীপ, ইন্সপেক্টর লিয়াকত আলী ও তার সহযোগীরা হত্যার মতো ন্যাক্কারজনক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়।