পৌর নির্বাচন : আ. লীগ বিদ্রোহী বহিষ্কার করবে ভোটের পরে

স্থানীয় সরকারের পৌরসভা নির্বাচনে নৌকার বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, এমন দলীয় নেতাদের বহিষ্কার করবে আওয়ামী লীগ। তবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার আগমুহূর্ত পর্যন্ত বিদ্রোহী প্রার্থীদের বসিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলবে। শেষ না দেখে কাউকেই বহিষ্কার করা হবে না। গতকাল শনিবার আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি নির্বাচন মনোনয়ন বোর্ডের সভায় এমন আলোচনা হয়েছে। সভায় উপস্থিত একাধিক নেতা এমনটা জানিয়েছেন।

গতকাল স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি নির্বাচন মনোনয়ন বোর্ডের সভায় তৃতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ৬৪ পৌরসভায় মেয়র পদে প্রার্থী চূড়ান্ত করে আওয়ামী লীগ। প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে গতবারের নির্বাচনে যাঁরা দলীয় নির্দেশ অমান্য করে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন, তাঁদের বিবেচনায় না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল আওয়ামী লীগ। তবে এর ব্যতয় ঘটেছে। ময়মনসিংহের গৌরীপুর পৌরসভায় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন শফিকুল ইসলাম হবি। তিনি বিগত ২০১৫ সালে গৌরীপুর পৌরসভা নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নৌকার প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন। সে নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী সৈয়দ রফিকুল ইসলাম পেয়েছিলেন সাত হাজার ১৩৩ ভোট, আর শফিকুল ইসলাম হবির নারিকেলগাছ প্রতীক পায় চার হাজার ১৫০ ভোট। বিএনপির ধানের শীষ প্রতীক পায় দুই হাজার ৭২৬ ভোট। আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত মেয়র রফিকুল ইসলাম একটি খুনের মামলায় কারাগারে রয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে গৌরীপুর পৌরসভায় গতবারের বিদ্রোহী প্রার্থী শফিকুল ইসলাম হবির হাতেই নৌকা তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আওয়ামী লীগ।

গত ২৮ নভেম্বর স্থানীয় সরকারের প্রথম ধাপের নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী বাছাই করতে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়, বিগত পৌরসভা নির্বাচনে যাঁরা নৌকার বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন, তাঁদের এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেওয়া হবে না। কিন্তু গতকালের সভায় শফিকুল ইসলাম হবিকে মনোনয়ন দেওয়ার মাধ্যমে সে সিদ্ধান্তের ব্যত্যয় ঘটল।

আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো জানায়, বৈঠকে দলীয় শৃঙ্খলা বজায় রাখতে বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক কঠোর শাস্তির সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে এর আগে বিদ্রোহী প্রার্থীদের বুঝিয়ে-শুনিয়ে নির্বাচন থেকে সরানোর চেষ্টা করা হবে। ভোটের আগমুহূর্ত পর্যন্ত এই চেষ্টা চলবে। ফলে ভোটের আগে কাউকে দল থেকে বহিষ্কারের সম্ভাবনা খুবই কম। ভোটের পরে বিদ্রোহী প্রার্থীদের বহিষ্কারের চিঠি দেওয়া হবে।

সূত্রগুলো জানায়, প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের পৌরসভাগুলোর নির্বাচনে অন্তত দুই ডজন পৌরসভায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে। আগামীকাল সোমবার প্রথম ধাপের ২৪ পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই ২৪ পৌরসভায় এখনো অন্তত ১০ জন বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন। এ ছাড়া আগামী ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া দ্বিতীয় ধাপের ৬১ পৌরসভা নির্বাচনে ১৫-২০ পৌরসভায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে। এসব প্রার্থীকে বুঝিয়ে নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরিয়ে দিতে চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগ।