বাংলাদেশের কৃষক আন্দোলন তথা ঐতিহাসিক তে-ভাগা আন্দোলনের অগ্রসৈনিক প্রখ্যাত কমিউনিস্ট নেতা কমরেড হেমন্ত সরকারের ২২তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে।
এ উপলক্ষে হেমন্ত সরকারের জন্মস্থান নড়াইল সদর উপজেলার বড়েন্দা গ্রামে দু’দিনব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) রাতে কবিগানের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শেষ হয়েছে।
এর আগে গত সোমবার বিকেলে হেমন্ত সরকারের সমাধিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ, আলোচনা সভা ও গ্রামীণমেলা অনুষ্ঠিত হয়। হেমন্ত সরকার স্মৃতিরক্ষা কমিটির উদ্যোগে এসব অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
কমরেড নির্মল গোলদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য কমরেড মুস্তফা লুৎফুল্লাহ এমপি।
প্রধান বক্তা ছিলেন ওর্য়াকার্স পার্টি নড়াইল জেলা সভাপতি কমরেড নজরুল ইসলাম।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন-নারী মুক্তি সংসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি নাসরিন খান লিপি, ওয়ার্কার্স পার্টি নড়াইল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক কমরেড আমিরুল ইসলাম, মলয় কান্তি নন্দী, শাহজাহান মৃধা, শচীন্দ্রনাথ অধিকারী, স্বপ্না সেন, সৌরভ গোলদারসহ দলীয় নেতাকর্মীরা।
হেমন্ত সরকার ১৯৯৮ সালের ২৮ ডিসেম্বর ভোরে নড়াইলে শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। জন্মভূমি নড়াইল সদর উপজেলার বড়েন্দা গ্রামে তাকে সমাধিস্থ করা হয়।
এদিকে, ১৯১৬ সালে বড়েন্দা গ্রামে গরিব কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।
হেমন্ত সরকারের জীবনাদর্শ থেকে জানা যায়, দারিদ্র্যের কারণে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সুযোগ পাননি তিনি। জীবনের প্রথম দিকে নড়াইলের প্রতাপশালী জমিদারদের ‘লাঠিয়াল’ হিসেবে কাজ করতেন। পরে উপমহাদেশের প্রখ্যাত কমিউনিস্ট নেতা কমরেড অমল সেনের সংস্পর্শে এসে মার্কসবাদের দীক্ষা নেন। পরবর্তীতে কমিউনিস্ট আন্দোলনে নিজেকে উৎসর্গ করেন হেমন্ত সরকার।
চল্লিশ দশকে তে-ভাগা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তিনি। সাংগঠনিক দক্ষতা ও যোগ্যতার বলে প্রথমে পূর্ব-পাকিস্তান কমিউনিস্ট পার্টি (এম এল) এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টির (এম এল) যশোর জেলা ও কেন্দ্রীয় কমিটির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন হেমন্ত সরকার। বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে অপরিসীম ভূমিকা রাখায় তাকে প্রায় ৬০ বছর কারাগারে এবং আত্মগোপনে থাকতে হয়।