কুষ্টিয়ায় আনুশকাহর দাফন সম্পন্ন, দোষীদের বিচার দাবিতে বিক্ষোভ

রাজধানীর কলাবাগানে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল মাস্টার মাইন্ডের ‘ও’ লেভেলের ছাত্রী আনুশকাহ নূর আমিনকে (১৮) সমাহিত করা হয়েছে।

গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়া সদরের গোপালপুরে শনিবার সকাল ৭টায় জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয়।

এর আগে শুক্রবার দিনগত রাত ১টার দিকে আনুশকাহর মরদেহ বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স তার গ্রামের বাড়িতে পৌঁছলে সেখানে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।

এদিকে দাফন শেষে ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিচার দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে গ্রামবাসী।

মেধাবী এই শিক্ষার্থীকে হত্যার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত ফারদিন ইফতেখার দিহানের কঠোর শাস্তি দাবি করে মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে আরও কারো সংশ্লিষ্টতা থেকে থাকলে তদন্তপূর্বক তাদেরকেও আইনের আওতায় আনতে হবে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকাল আনুমানিক সাড়ে ৮টার দিকে আনুশকাহ নূর আমিনের মা কর্মস্থলের উদ্দেশে বাসা থেকে বের হয়ে যান। এক ঘণ্টা পরে তার বাবাও ব্যবসায়িক কাজে বাসা থেকে বের হন।

দুপুর পৌনে ১২টার দিকে ওই ছাত্রী তার মাকে ফোন করে কোচিং থেকে পড়ালেখার পেপার্স আনার কথা বলে বাসা থেকে বের হন। এ মামলার একমাত্র আসামি ‘ও’ লেভেল পড়ুয়া দিহান বেলা ১টা ১৮ মিনিটে ফোন করে ওই শিক্ষার্থীর মাকে জানান, মেয়েটি তার বাসায় গিয়েছিলেন। হঠাৎ অচেতন হয়ে পড়ায় তাকে আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়েছে।

অফিস থেকে বের হয়ে আনুমানিক দুপুর ১টা ৫২ মিনিটে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মা হাসপাতালে পৌঁছেন। হাসপাতালের কর্মচারীদের মাধ্যমে তিনি জানতে পারেন, আসামি তার মেয়েকে কলাবাগান ডলফিন গলির বাসায় ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করেন। প্রচুর রক্তক্ষরণের কারণে অচেতন হয়ে পড়লে বিষয়টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য আসামি নিজেই তাকে আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে নিয়ে যান।

খবর পেয়ে কলাবাগান থানা পুলিশের একটি দল হাসপাতালে গিয়ে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে এবং ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায় বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।

বৃহস্পতিবারই হাসপাতাল থেকে দিহানকে গ্রেপ্তার করে কলাবাগান থানা পুলিশ। শুক্রবার মামলায় ‘দোষ স্বীকার’ করে তিনি ঢাকার মহানগর হাকিম আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।

শুক্রবার বিকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে মেয়েটির ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান সোহেল মাহমুদ জানিয়েছেন, স্কুলছাত্রীর শরীরের কোথাও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া না গেলেও যৌনাঙ্গ ও পায়ুপথে ক্ষত চিহ্ন পাওয়া গেছে। বিকৃত যৌনাচারের কারণে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হওয়ায় তার মৃত্যু হয়েছে।