বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি মামলা: সাবেক ছয় এমডিসহ ২২ জন কারাগারে

কয়লা দুর্নীতির মামলায় দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের সাবেক ছয় ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ (এমডি) ২২ জনকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
দিনাজপুর জেলা বিশেষ জজ মাহমুদুল করিম বুধবার তাদের জামিনের আবেদন প্রত্যাখ্যান করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এই মামলায় অভিযোগপত্রের আসামি ২৩ জন হলেও এক সাবেক এমডি মাহবুবুর রহমান মারা যাওয়ায় তার নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।

দুদকের পিপি আমিনুল ইসলাম বলেন, আদালত আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি এই মামলার অভিযোগ গঠনে শুনানির দিন ধার্য করেছে।

তিনি জানান, মামলাটি জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালত থেকে বিশেষ জজ আদালতে পাঠানো হলে আসামিরা হাজির হয়ে আবার জামিনের আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে কয়লা খনির সাবেক ছয় এমডিসহ ২২ কর্মকর্তার জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়।

সাবেক ছয় এমডি হলেন আবদুল আজিজ খান, খুরশীদুল হাসান, কামরুজ্জামান, আমিনুজ্জামান, এসএম নুরুল আওরঙ্গজেব ও হাবিব উদ্দিন আহমেদ।

আরেক আসামি সাবেক এমডি মাহবুবুর রহমান ইতিমধ্যে মারা গেছেন।

অন্য আসামিরা হলেন সাবেক জিএম (প্রশাসন) মো. শরিফুল আলম, মো. আবুল কাসেম প্রধানীয়া, আবু তাহের মো. নুর-উজ-জামান চৌধুরী (মাইন অপারেশন বিভাগ), নিরাপত্তা বিভাগের ম্যানেজার মাসুদুর রহমান হাওলাদার, মো. আরিফুর রহমান (ম্যানেজার, মেইন্টেন্যান্স অ্যান্ড অপারেশন), নিরাপত্তা বিভাগের ম্যানেজার সৈয়দ ইমাম হাসান, কোল হ্যান্ডলিং ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ডিজিএম মুহাম্মদ খলিলুর রহমান, মেইন্টেন্যান্স অ্যান্ড অপারেশন বিভাগের ডিজিএম মো. মোর্শেদুজ্জামান, প্রোডাকশন ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ডিজিএম মো. হাবিবুর রহমান, মাইন ডেভেলপমেন্ট বিভাগের ডিজিএম মো. জাহেদুর রহমান, ভেন্টিলেশন ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী ব্যবস্থাপক ডিজিএম সত্যেন্দ্র নাথ বর্মণ ও মো. মনিরুজ্জামান, কোল হ্যান্ডলিং ম্যানেজমেন্টের ম্যানেজার মো. শোয়েবুর রহমান, স্টোর ডিপার্টমেন্টের ডিজিএম একেএম খালেদুল ইসলাম, প্রোডাকশন ম্যানেজমেন্টের ম্যানেজার অশোক কুমার হালদার ও মাইন প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের ডিজিএম মো. জোবায়ের আলী।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে এক লাখ ৪৩ হাজার ৭২৭ দশমিক ৯৯ মেট্রিক টন কয়লা (যার আনুমানিক মুল্য ২৪৩ কোটি ২৮ লাখ টাকা) উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনায় ২০১৮ সালের ২৪ জুলাই বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির পক্ষে ম্যানেজার (প্রশাসন) মোহাম্মদ আনিছুর রহমান বাদী হয়ে ১৯ জনকে আসামি করে পার্বতীপুর মডেল থানায় মামলা করেন।

পার্বতীপুর মডেল থানার মামলার এই মামলায় (নম্বর-৩০) তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় দুদককে। দুদকের উপ-পরিচালক মো. সামসুল আলম তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র তৈরি করেন। ২০১৯ সালের ২৩ জুলাই সামসুল আলমের পক্ষে দুদক দিনাজপুর সমন্বিত কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আবু হেনা আশিকুর রহমান আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগপত্রে এজাহারভুক্ত ১৯ জনের মধ্যে ১৪ জনকে আসামি করা হয়; এছাড়া তদন্তে নতুন করে সাত জন সাবেক এমডিসহ নয়জনের নাম উঠে আসে।

একই বছরের ১৫ অক্টোবর দিনাজপুরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আজিজ আহমেদ ভুইয়া আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার পরোয়ানা জারি করেন। পরবর্তীতে আসামিদের কয়েকজন গ্রেপ্তার হন; পরে সবাই জামিনে ছিলেন।