পরীক্ষা ছাড়াই এসএসসি-এইচএসসির ফল প্রকাশে সংসদে বিল

বিশেষ পরিস্থিতিতে পরীক্ষা ছাড়াই মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি), উচ্চমাধ্যমিক (এইচএসএসি) ও সমমান পাসের সনদ দেওয়ার সুযোগ রেখে আইন সংশোধন করা হচ্ছে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট তিনটি আইনের সংশোধনী মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে তোলা হয়েছে।

সংশোধনীগুলো পাস হলে কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে পরীক্ষা ছাড়াই ২০২০ সালের উচ্চমাধ্যমিক ও সমমানের ফল ঘোষণা এবং পাসের সনদ দেওয়ার ক্ষেত্রে আইনি জটিলতা থাকবে না।

জাতীয় সংসদে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ‘ইন্টারমিডিয়েট অ্যান্ড সেকেন্ডারি এডুকেশন (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল-২০২১’, ‘বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড (সংশোধন) বিল-২০২১’ ও ‘বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড (সংশোধন) বিল-২০২১’ উত্থাপন করেন।

পরে ইন্টারমিডিয়েট অ্যান্ড সেকেন্ডারি এডুকেশন বিলটি একদিনের মধ্যে এবং বাকি দুটি বিল দুদিনের মধ্যে পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বিল উত্থাপন করে সংসদে বলেন, এই বিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এইচএসসির ফলের জন্য শিক্ষার্থী-অভিভাবক সবাই অপেক্ষা করছেন এবং আমাদের ফল প্রস্তুতও আছে। কিন্তু যেহেতু আইনে পরীক্ষা গ্রহণপূর্বক ফল দেওয়ার বিষয়টি ছিল। এবার যেহেতু বৈশ্বিক সংকটের কারণে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি। আমরা বিকল্প একটি পদ্ধতিতে আগের দুটি পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে এই ফল দিতে যাচ্ছি সে কারণে বর্তমান আইনটি সংশোধন করার প্রেয়োজন দেখা দেয়। সে কারণেই সংসদে বিলটি আনা হয়েছে।

বিল তিনটির উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, প্রস্তাবিত আইনে বিশেষ পরিস্থিতিতে বা সরকার কর্তৃক সময় সময় নির্ধারিত কোনো অনিবার্য পরিস্থিতিতে কোনো পরীক্ষা নেওয়া, ফল প্রকাশ ও সনদ দেওয়া সম্ভব না হলে সে ক্ষেত্রে সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপিত আদেশ দিয়ে কোনো বিশেষ বছরে শিক্ষার্থীদের জন্য পরীক্ষা ছাড়া বা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা নিয়ে ওই প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত পদ্ধতিতে মূল্যায়ন ও সনদ দেওয়ার জন্য নির্দেশাবলি জারি করার বিষয় উল্লেখ রয়েছে।

তবে ইন্টারমিডিয়েট অ্যান্ড সেকেন্ডারি এডুকেশন (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল-২০২১ উত্থাপন নিয়ে সংসদে আপত্তি জানান জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম। বিলটি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিরোধীদলীয় এমপি।

পরে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী তার অনুমোদন নিয়ে বিলটি তোলা হয়েছে বলে জানান।

প্রসঙ্গত, ১১টি শিক্ষা বোর্ডের ১৩ লাখ ৬৫ হাজার ৭৮৯ শিক্ষার্থীর ২০২০ সালে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। ২০২০ সালের ১ এপ্রিল থেকে এই পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনাভাইসের সংক্রমণের কারণে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়।

গত বছরের অক্টোবরের শুরুর দিকে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি জানান, পঞ্চম ও অষ্টমের সমাপনীর মতো এইচএসসি-সমমানের পরীক্ষাও নেওয়া যাচ্ছে না। এসব শিক্ষার্থীর জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার ফলের ওপর ভিত্তি করে এইচএসসির মূল্যায়ন করা হবে। ফল প্রস্তুত আছে, বিলটি পাস হলেই তা প্রকাশ করা হবে।