উইঘুরদের ওপর গণহত্যা চালাচ্ছে চীন: যুক্তরাষ্ট্র

উইঘুর ও অন্যান্য মুসলমানের ওপর নিপীড়ন চালানোর সময় গণহত্যা চালাচ্ছে চীন। মঙ্গলবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এমন মন্তব্য করেছেন।

দায়িত্ব পালনের শেষ সময়টাতে এসে নাটকীয়ভাবে বেইজিংয়ের ওপর চাপ বাড়িয়ে যাচ্ছেন তিনি।

তার এ বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিতে যাওয়া জো বাইডেনের মনোনীত পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্তনি ব্লিংকেন। বার্তা সংস্থা এএফপি ও বিবিসির খবরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

এক বিবৃতিতে পম্পেও বলেন, আমি মনে করি, এখনো গণহত্যা চলছে। উইঘুরদের ধ্বংস করতে চীনা দলীয় রাষ্ট্রের পরিকল্পিত চেষ্টা আমরা প্রত্যক্ষ করছি। কিন্তু আমরা নীরব থাকব না।

তিনি বলেন, যদি গণহত্যায় নিজ দেশের লোকদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে চীনা কমিউনিস্ট পার্টি সায় দেয়, তবে অদূর ভবিষ্যতে মুক্ত বিশ্বকে কী করতে উৎসাহিত করা হবে; তা ভেবে দেখুন।

পম্পেও তার মেয়াদের পুরোটা সময় বেইজিংয়ের সমালোচনা করে আসছেন। তবে এর আগে তিনি গণহত্যা নিয়ে সরাসরি কোনো আলোচনা করেননি।

তিনি বলেন, উইঘুরদের বিরুদ্ধে চীনাদের নিপীড়নে নাৎসি জার্মানির নীতিগুলোকেই স্মরণ করিয়ে দেয়। এ ঘটনায় আদালতসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে সরব হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠে বলেন, চীনের ওপর যুক্তরাষ্ট্র চাপ অব্যাহত রাখবে।

মানবাধিকার সংস্থাগুলো মনে করে, পশ্চিমাঞ্চলীয় জিনজিয়াংয়ে বিভিন্ন ক্যাম্পে অন্তত ১০ লাখ উইঘুর ও তুর্কিভাষী মুসলমানকে আটকে রাখা হয়েছে।

ইসলামি প্রথার বিলোপ ঘটিয়ে সংখ্যালঘু হান সংস্কৃতির সঙ্গে উইঘুরদের জোর করে একীভূত করতে চাচ্ছে চীন। যে কারণে সংখ্যালঘু মুসলমানদের শূকরের মাংস ও অ্যালকোহল খেতে বাধ্য করা হচ্ছে, যা ইসলামে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

তবে কারাগারগুলোকে বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ আখ্যায়িত করে চীনে দাবি, তারা ভুল কিছু করছে না।

বিদায়ী প্রশাসনের সঙ্গে অনেক বিষয়ে অমিল থাকলেও মানবাধিকার ইস্যুতে চীনের ওপর চাপ বাড়াতে একমত হতে দেখা গেছে বাইডেনকে। গত বছরের নির্বাচনী প্রচারে উইঘুরদের বিরুদ্ধে চীন গণহত্যা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

ওয়াশিংটনভিত্তিক উইঘুর মানবাধিকার প্রকল্পের নির্বাহী পরিচালক ওমার কানাতের প্রত্যাশা, উইঘুরদের ওপর চীনা নিপীড়নকে ‘গণহত্যা’ আখ্যায়িত করায় আগামী বছর বেইজিং শীতকালীন অলিম্পিক বয়কটসহ দেশটির ওপর নতুন করে চাপ বাড়বে।

এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, এর প্রভাব অনেক বেশি। গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ করছে এমন একটি দেশের সঙ্গে সচরাচর ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনার কথা ভাবা যায় না।