যুব বিশ্বজয়ের ১ বছর আজ

বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ দিন আজ ৯ ফেব্রুয়ারি। ক্যালেন্ডারের পাতা গুণলে, ঠিক ৩৬৫ দিন আগের এই দিনে যুব বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দে মেতেছিল দেশবাসী। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ী দলের অনেকে এখন গায়ে জড়িয়েছেন লাল-সবুজের সিনিয়র জার্সি। কিছু আছেন পাইপ লাইনে। তবে, কেমন ছিল সেদিনের পচেফস্ট্রুমের সেনওয়েস পার্কের সময়টা। চলুন স্মৃতিতে রোমন্থন করে আসি।

মালয়েশিয়ার কিলাত ক্লাব মাঠে ১৯৯৭ সালে যে রূপকথার শুরু হয়েছিল, ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপে অর্জনের খাতায় তা অনেকটা পূর্ণ হয়। ২০০৫ এর সোফিয়া গার্ডেনে অস্ট্রেলিয়া সে উত্তাপ টের পেয়েছিল হাড়ে হাড়ে। ২০০৭ এবং ২০১৫ বিশ্বকাপ সে ধারাকে নিয়ে গিয়েছিলো আরও এক ধাপ ওপরে।

কিন্তু কোথায় যেন আটকে ছিল বাংলাদেশের ক্রিকেটের পূর্ণতা! বার বার হোঁচটটা আসছিল আসরগুলোর অন্তিম মুহূর্তে। ভালো ছেলের তকমা গায়ে লাগলেও, কিছুতেই পরীক্ষায় ফার্স্ট হতে পারছিলেন না টাইগাররা। সাকিব-তামিম-মুশফিকদের পর যে জ্বালায় পুড়েছেন বিজয়-সৌম্য, মিরাজরাও।

সেই অপূর্ণাতা কাটিয়ে বাংলার ক্রিকেট আকাশে দেখা দিল একঝাঁক নক্ষত্র। নিজেদের দিনে যারা গুড়িয়ে দিচ্ছিল একের পর এক ক্রিকেট মহাপরাক্রমশালী শিবিরকে। যার শেষটা হয়েছিল পচেফস্ট্রুমের সেই সেনওয়েস পার্কে। সেদিন ছিলো ৯ ফেব্রুয়ারি। যদিও ওইদিন আফ্রিকার আকাশের মন ভালো ছিল না। তবে, সকালের সূর্যটা সেদিন হেসে ছিলো আকবরকে দেখে। না হলে তো বৃষ্টিতেই ভেসে যেতে পারতো পুরোটা দিন!

সূর্যের সে আগুন সেদিন ঠিকরে বের হয়েছিলো শরিফুল, সাকিব, অভিষেকদের হাত থেকে। যার এক একটি গোলায় পর্যদুস্ত হয়েছিল বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে শক্তিশালী ভারত। ব্যাটিংয়ে নেমে আলোটা নিজের দিকে কেড়ে নিয়েছিলেন পারভেজ হোসেন ইমন। দেখিয়ে ছিলেন মনের জোরের সামনে শরীরের আঘাত কিছুই না। আর তুলির শেষ আচঁড়টা বসিয়েছিলেন অধিনায়ক আকবর দ্য গ্রেট।

বাংলাদেশ জিতলো বিশ্বকাপ। হোক না ছোটদের আসর, তাতে কি! টাইগার ক্রিকেটে এমন দিন যে এর আগে আসেনি!

আনন্দের ঢেউ আছড়ে পড়ে ছিলো দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে পৃথিবীর বৃহত্তম এই ব-দ্বীপে। এয়ারপোর্টে তাই বীরদের বরণে গিয়েছিলেন হাজারো জনতা। ফুল আর মিষ্টির নহর বয়ে গিয়েছিল বিমানবন্দর থেকে মিরপুর অবধি। হোম অব ক্রিকেট সেজেছিল নিজের সন্তানদের বরণে। নিজ নিজ এলাকা এবং জেলাও বরণ করে নেয় বিশ্বকাপ নায়কদের।

আশা ছিল ক্রিকেট দুনিয়ার পরের ধাপে দ্রুতই পা দেবেন আকবর-শামীমরা। কিন্তু বিধি বাম, পুরো দুনিয়াটাকেই স্থবির করে দিল ছোট্ট এক ভাইরাস। মন্থর হল যুবাদের এগিয়ে যাওয়ার গতি।