পরমাণু চুক্তি নিয়ে ইরানের সঙ্গে বসতে রাজি যুক্তরাষ্ট্র

২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তিতে ফিরে যেতে ইরানের সঙ্গে আলোচনায় বসতে আগ্রহের কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। লন্ডনভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, ‘যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত মার্কিন প্রশাসনে পরিবর্তনের ইঙ্গিত বহন করছে। যুক্তরাষ্ট্রের পরমাণু চুক্তিতে ফেরার প্রধান কারণ ইরানকে পরমাণু অস্ত্র তৈরি থেকে বিরত রাখা।’

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন পরমাণু চুক্তিতে ফিরতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অবস্থানের ওপর জোর দিয়েছেন। ইরান যদি চুক্তির শর্ত পুরোপুরি মেনে চলে তাহলেই যুক্তরাষ্ট্র ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তিতে (জেসিপিওএ) ফিরবে বলে নিজের অবস্থানের কথা জানিয়েছেন জো বাইডেন।

বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং জার্মানির (ইথ্রি নামে পরিচিত) পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে এক বৈঠকে ভিডিও লিংকের মাধ্যমে যুক্ত হন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন। বৈঠকের পর চারদেশের যৌথ এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ইরান যদি পরমাণু চুক্তির প্রতিশ্রুতি কঠোরভাবে মেনে চলে তাহলে যুক্তরাষ্ট্রও তেমনটি করবে এবং এজন্য ইরানের সঙ্গে বসতে প্রস্তুত।’

২০১৫ সালে ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে ইরানের হওয়া ওই জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ) চুক্তিতে পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচিতে লাগাম টানার শর্তে তেহরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের আগের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তিন বছর আগে চুক্তিটি থেকে ওয়াশিংটনকে বের করে আনেন এবং ইরানের ওপর আগের সব নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করেন। পরে তেহরানও চুক্তিতে তার জন্য রাখা শর্তের লংঘন শুরু করে। কিন্তু বাইডেন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর এই চুক্তিতে আবার যোগ দেয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখতে শুরু করেন। এবার দেশটির পক্ষ থেকে জানানো হয় তারা ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি নিয়ে আলোচনায় বসতে চায়।

যুক্তরাষ্ট্রের একজন কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, প্রধান ছয় শক্তিধর দেশ যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, জার্মানি, চীন, রাশিয়ার সঙ্গে ইরানের আলোচনায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের যেকোনো আহ্বানে ওয়াশিংটন ইতিবাচক সাড়া দেবে।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পরমাণু চুক্তিতে ফেরার আগ্রহের বিষয়ে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ বলেছেন, আলোচনায় বসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে সর্বপ্রথম পদক্ষেপ নেয়া উচিত। কূটতর্ক এবং ইরানের ওপর দায় চাপানোর থেকে ইথ্রি/ইউরোপীয় ইউনিয়নের তাদের নিজেদের প্রতিশ্রুতি মেনে চলা উচিত। ইরানের বিরুদ্ধে অর্থনেতিক সন্ত্রাস কর্মকাণ্ড চালানো বন্ধ আহ্বান করা উচিত। অবশ্য ইরানের এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী পূর্বে যুক্তরাষ্ট্রের বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনায় বসার সংকেত দিয়েছিলেন।