মিয়ানমারে বিক্ষোভে গুলি, নিহত ২

মিয়ানমারে বিক্ষোভে গুলিতে দুই বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে। এই ঘটনায় আহত হয়েছে অন্তত তিনজন। তবে কার গুলিতে ওই দুই ব্যক্তি নিহত হয়েছে সেটা জানা যায়নি।

গত ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারে ব্যাপক বিক্ষোভ এবং ধর্মঘট চলছে। প্রতিবাদ ঠেকাতে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী কঠোর অবস্থানে যাওয়ার পর এ পর্যন্ত ৫৫ জন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। গতকাল রবিবারও সামরিক জান্তার আদেশ অমান্য করে দেশব্যাপী বিক্ষোভ করেছে গণতন্ত্রপন্থীরা।

রয়টার্সের খবরে বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করা ছবিতে মিয়ানমারের উত্তরের শহর মিতকিয়ানার সড়কে দুই ব্যক্তির লাশ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, নিহতরা বিক্ষোভে অংশ নেয়। এসময় নিকটস্থ ভবন থেকে গুলি করা হলে কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়ে।

আরেকজন প্রত্যক্ষদর্শী যিনি মরাদেহ সরাতে সাহায্য করেন তিনি বলেন, বিক্ষোভে অংশ নেয়া দুই জনের মাথায় গুলি করা হলে ঘটনাস্থলেই তারা নিহত হন। গুলিতে আহত হয় আরও তিনজন।

নিজের চোখে গুলি করার ঘটনা প্রত্যক্ষ করা ২০ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি বলেন, নিরস্ত্র মানুষকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, কি নির্দয়! শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করার অধিকার তাদের রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চিসহ তার রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসির নেতৃত্বস্থানীয় ২০ এর অধিক নেতাকে গ্রেপ্তার করে সেনাবাহিনী। এরপর গত বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে ব্যাপক ভোট কারচুপির অভিযোগ তুলে তারা জরুরি অবস্থা জারি করে। কিন্তু মিয়ানমারের সাধারণ জনতা সামরিক শাসন প্রত্যাখান করে এর বিরুদ্ধে রাজপথে বিক্ষোভ শুরু করে।

মিয়ানমারে এখন পর্যন্ত সেনাবাহিনী এবং পুলিশের গুলিতে পঞ্চাশের অধিক বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে। জাতিসংঘসহ পশ্চিমা দেশগুলো মিয়ানমারের জান্তা সরকারের ওপর সীমিত পরিসরে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তবুও জান্তা সরকারের অবস্থান পরিবর্তনের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।

এদিকে, সোমবার পুলিশ-সেনাবাহিনীর রক্ত চক্ষু উপেক্ষা করে গ্রেপ্তার নেতৃবৃন্দের মুক্তি ও সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে সাধারণ মানুষ। দেশের সর্ববৃহৎ শহর ইয়াঙ্গুন, দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালাইসহ আরও কয়েকটি শহরে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়া মিয়ানমারের গুরুত্বপূর্ণ ট্রেড ইউনিয়নগুলো দেশটিতে ধর্মঘট ডেকেছে। দেশটির সেনাশাসকদের ওপর চাপ সৃষ্টির লক্ষ্যে তারা এই কর্মসূচি পালন করতে যাচ্ছে।