বিজেপি ক্ষমতায় এলে ৫ বছরের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ অনুপ্রবেশকারী মুক্ত করব: অমিত শাহ

পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি ক্ষমতায় এলে ৫ বছরের মধ্যে অনুপ্রবেশকারী মুক্ত করা হবে বলে ঘোষণা করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। রোববার এক নির্বাচনী ভাষণে তিনি এ ঘোষণা দেন।

তৃণমূলকে তীব্র আক্রমণ করে অমিত শাহ বলেন, ‘বিজেপি সরকার ক্ষমতায় এলে কাটমানি দিতে হবে না। পাঁচ বছরে বাংলাকে অনুপ্রবেশকারী মুক্ত করব। মমতা দিদি চান ভাইপোকে মুখ্যমন্ত্রী করতে। মোদীজি চান সোনার বাংলা তৈরি করতে।’

শাহের আক্রমণ, ‘বাংলায় দুর্গাপুজো করার জন্য সাধারণ মানুষকে আদালতে যেতে হয়। বাংলায় বিজেপি এলে দুর্গাপুজো, সরস্বতীপুজো কেউ আটকাতে পারবে না।’

একই সঙ্গে একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতি দেন অমিত শাহ। তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রীয় প্রকল্পের আওতায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ১৮ হাজার কোটি টাকা আটকে দিয়েছে। বিজেপি ক্ষমতায় এলে মৎস্যজীবীদের বছরে ছয় হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। বেতন বৃদ্ধি করা হবে শিক্ষকদের। সরকারি চাকরিতে মহিলাদের জন্য ৩৩ শতাংশ সংরক্ষণ রাখা হবে’।

এর আগেও গত ফেব্রুয়ারিতে কোচবিহার ও ঠাকুরনগরে দু’দুটো জনসভা থেকে অমিত শাহ বলেছিলেন, পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি ক্ষমতায় এলে সীমান্ত দিয়ে ‘কোনও মানুষ দূরে থাক – একটা পাখিও ঢুকতে পারবে না।

পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেস অবশ্য দাবি করছে তাদের শাসনামলে অনুপ্রবেশ মদত পেয়েছে বলে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার যা বলছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরাও অনেকেই মনে করছেন কথিত অনুপ্রবেশ ইস্যুর আড়ালে বিজেপি আসলে সাম্প্রদায়িক এজেন্ডাকেই সামনে আনতে চাইছে।

কী উদ্দেশে অনুপ্রবেশ নিয়ে রাজনীতি?

অনুপ্রবেশ নিয়ে বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, কোচবিহার বা ঠাকুরনগরে অমিত শাহ যখন (১১ ফেব্রুয়ারি) এ কথা বলছেন – ঘটনাচক্রে ঠিক তার আগের দিনই তার মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে পার্লামেন্টে লিখিত জবাবে জানানো হয়েছে, ২০১৬ সালের তুলনায় পরের পাঁচ বছরে বাংলাদেশ থেকে ভারতে অনুপ্রবেশের ঘটনা ক্রমশ বিপুল হারে কমেছে।

তৃণমূলের যে এমপি মানসরঞ্জন ভুঁইঞার প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই উত্তর দিয়েছে, তিনি বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন অমিত শাহ-র এই বক্তব্য তাই পুরোটাই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

মানসরঞ্জন ভুঁইঞা অমিত শাহকে উল্টো প্রশ্ন জুড়ে দিয়ে বলেন, আন্তর্জাতিক সীমান্তে বেড়া দেওয়ার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকারের, সেই বেড়া দেওয়ার কাজ অসম্পূর্ণ রয়ে গেছে। তা ছাড়া বাইরের দেশ থেকে যারা অবৈধভাবে ভারতে ঢুকবেন, তাদের বাধা দেওয়া বা তাদের ওপর নজরদারি করার কথাও বিএসএফের – যারা কেন্দ্রীয় সরকারের বাহিনী। ফলে কী করে তারা অনুপ্রবেশের জন্য মমতা ব্যানার্জির সরকারের ঘাড়ে দোষ চাপাতে পারেন’?

মানস রঞ্জন ভুঁইঞা আরও বলেন,‘আমার প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় সরকারই তো বলেছে বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশ কমে গেছে, তারপরও এসব কথা বলার অর্থ নিছক রাজনীতির জন্য রাজনীতি করা, নেহাত বলার জন্য বলা। এটা জেনে রাখুন, আমার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ও তার সরকার সব ব্যাপারেই সজাগ এবং তিনি কখনওই অনুপ্রবেশকে মদত দেন না, দেন না, দেন না ‘।