কোথায় হবে করোনা আক্রান্ত খালেদা জিয়ার চিকিৎসা?

khaleda
ফাইল ছবি

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। রোববার স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে জানানো হয়েছে, করোনা পরীক্ষায় পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে খালেদা জিয়ার। তিনি গুলশানের যে বাসায় থাকছেন, সেই ফিরোজার ৯ জন স্টাফ কোভিড-আক্রান্ত।

৭৫ বছর বয়সী সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, আর্থাইটিসসহ নানা জটিল রোগে ভুগছেন। এমতাবস্থায় তার করোনা আক্রান্তের খবরে বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা কাজ করছে।

আজ তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করবেন চিকিৎসকরা। বিকাল সাড়ে ৪টা থেকে ৫টার মধ্যে চিকিৎসকদের প্রতিনিধিদল খালেদা জিয়াকে দেখতে তার গুলশানের বাসভবনে যাবেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শায়রুল কবির খান।

চিকিৎসকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার পরই খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এর আগে করোনায় আক্রান্ত বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে রেখে চিকিৎসার পরামর্শ দেন তার কয়েকজন চিকিৎসক। এ জন্য রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে করোনা ইউনিটে কেবিন বুক করাও হয়েছে। সেখানে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রসহ (আইসিইউ) সব ধরনের সুবিধা থাকছে। যদিও বিএনপি চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থা যে পর্যায়ে, তাতে এখনই আইসিইউ–সুবিধার দরকার নেই।

অবশ্য চিকিৎসকেরা বলছেন, দেশে করোনার রোগী বাড়ছে। অল্প সময়ের মধ্যে আইসিইউ–সুবিধা পাওয়া নিয়ে গণমাধ্যমে নানা খবর আসছে। এ কারণে আগে থেকেই একটি আইসিইউ বেড ও কেবিন বুক করে রাখা হয়েছে।

খালেদা জিয়ার একজন চিকিৎসক গণমাধ্যমকে বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের বয়স হয়েছে। তিনি ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপসহ নানা ধরনের শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে যাদের বয়স বেশি এবং অন্য শারীরিক জটিলতা আছে, তারা স্বাভাবিকভাবেই ঝুঁকিতে থাকেন। এসব বিবেচনায় তারা মনে করছেন, হাসপাতালে রেখে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা দেওয়া উচিত।

অবশ্য খালেদা জিয়ার চিকিৎসকরা এও বলছেন যে, এই মুহূর্তে খালেদা জিয়ার তেমন কোনো জটিলতা নেই।

বিএনপির চেয়ারপারসনের মেডিকেল বোর্ডের সদস্য ডা, মো. আল মামুন রোববার জানান, খালেদা জিয়ার জ্বর, সর্দি, কাশি বা গলাব্যথা—এ ধরনের কোনো উপসর্গ এই মুহূর্তে নেই। তবে তারপরও তাঁরা সব ব্যবস্থা নিয়ে রাখছেন।

চিকিৎসকরা বলছেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের পুরো চিকিৎসার বিষয় দেখভাল করেন তার বড় ছেলে তারেক রহমানের স্ত্রী চিকিৎসক জোবাইদা রহমান। তিনি লন্ডনে স্বামীর সঙ্গে অবস্থান করছেন। সব ধরনের মেডিকেল রিপোর্ট ও খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা–সম্পর্কিত তথ্য জোবাইদা রহমানকে পাঠানো হয়েছে। ঢাকায় তার পরিবারের সদস্যরাও সবকিছু জানেন। ডা. জোবাইদাসহ অন্যরা মিলে ঠিক করবেন, বিএনপি চেয়ারপারসনকে আপাতত বাসায় রেখে চিকিৎসা দেওয়া হবে, নাকি হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হবে।

খালেদা জিয়া গত শনিবার করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা আইসিডিডিআরবিতে দেন। ওই দিন রাতেই রিপোর্ট দেওয়া হয়। সেখানে দেখা যায়, বিএনপির চেয়ারপারসন করোনায় আক্রান্ত।

দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর পরিবারের আবেদনে সরকার গত বছরের ২৫ মার্চ ‘মানবিক বিবেচনায়’ শর্তসাপেক্ষে তাকে সাময়িক মুক্তি দেয়।

তখন থেকে তিনি গুলশানে নিজের ভাড়া বাসা ফিরোজায় থেকে ব্যক্তিগত চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তার সঙ্গে বাইরের কারও যোগাযোগও সীমিত।