হামাসের সঙ্গে অ্যাঞ্জেলা মার্কেলের আলোচনা

মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা নিরসনে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সঙ্গে পরোক্ষভাবে আলোচনা করেছেন জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেল। বৃহস্পতিবার ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি এ তথ্য জানায়।

খবরে বলা হয়, জার্মানির রাজধানী বার্লিনে ইউরোপীয় এক ফোরামে অ্যাঞ্জেলা মার্কেল বলেন, হামাসের সঙ্গে অবশ্যই আমাদের পরোক্ষ আলোচনা চলছে। হামাস এ যুদ্ধে জড়িত, তাই হামাসের সঙ্গে আলোচনা ছাড়া তাদের (ইসরাইল-ফিলিস্তিন) যুদ্ধবিরতি সম্ভব নয়।

চলমান রক্তক্ষয়ী সংঘাত বন্ধ করে অবরুদ্ধ গাজায় দুই-একদিনের মধ্যেই যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানো সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন হামাসের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

এর আগে হামাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তা মুসা আবু মারজুক লেবাননের আল-মায়াদিন টেলিভিশনকে বলেন, আশা করছি দুই-একদিনের মধ্যেই যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানো যাবে আর যুদ্ধবিরতি হবে পারস্পারিক সম্মতিতে। আমার ধারণা যুদ্ধবিরতি নিয়ে চলমান উদ্যোগ সফল হবে।

বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। তবে বুধবার ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেছেন, তার দেশের নাগরিকদের জন্য শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত হামলা অব্যাহত থাকবে।

এদিকে চলমান রক্তক্ষয়ী সংঘাত বন্ধে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ওপর চাপ বাড়িয়ে যুদ্ধবিরতি চেয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

বুধবার হোয়াইট হাউজের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংঘাতে সহিংসতার মাত্রা উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কমে যাওয়া দেখতে চান প্রেসিডেন্ট।

সিএনএন জানায়, ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংঘাতের শুরু থেকে বুধবার নিয়ে এ পর্যন্ত মোট চারবার নেতানিয়াহুর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন বাইডেন। এদিন বাইডেনের কথার সুরে বোঝা গেছে, তিনি নেতানিয়াহুকে নিয়ে ধৈর্য্য হারাচ্ছেন।

হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ফোনালাপে বাইডে নেতানিয়াহুকে বলেছেন, হামাসের সঙ্গে বাড়তে থাকা লড়াইয়ের প্রেক্ষাপটে আজ ইসরাইল যুদ্ধবিরতির পথে হেঁটে সহিংসতার মাত্রা যথেষ্ট কমিয়ে আনুক- সেটিই তিনি আশা করেন।

বাইডেন সহিংসতা কমিয়ে আনার একটি সময়সীমাও নির্ধারণ করেছেন বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। তবে সহিংসতার মাত্রা কমাতে কী করণীয় তা হোয়াইট হাউস তাৎক্ষণিকভাবে জানায়নি।

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বর্বরতা এখনও অব্যাহত রয়েছে। ইসরাইলি আগ্রাসনে গেল ১০ দিনে মৃত্যু বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২৭ জনে, এরমধ্যে ৬৩ জনই শিশু। গাজায় এ পর্যন্ত ৫২ হাজারের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ৮শর বেশি ভবন-বাসাবাড়ি।

ফিলিস্তিনিদের জন্য মানবিক সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের প্রধান অ্যান্তনিও গুতেরেস। আন্তর্জাতিক সংগঠন সেভ দ্য চিলড্রেনের মতে, গাজার ৫০টি স্কুল ধ্বংস করেছে ইসরাইলি বাহিনী। এতে প্রায় ৪২ হাজার শিক্ষার্থীর স্কুলজীবন হুমকির মুখে পড়েছে।

জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ওআইসিসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং বিশ্ব নেতাদের যুদ্ধবিরতির আহ্বান কানে তুলছে না ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।