টিকটক হৃদয়ের ৫ সহযোগী গ্রেপ্তার

রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকা থেকে টিকটক হৃদয় বাবুর অন্যতম সহযোগী ও মগবাজারের চিহ্নিত সন্ত্রাসী অনিক হাসান হিরো অনিকসহ পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

সোমবার (৫ জুলাই) র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন সংবাদমাদ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
অভিযানে বিদেশি অস্ত্র, গুলি ও মাদক উদ্ধার করেছে র‌্যাব।

সম্প্রতি ভারতে চার-পাঁচ জন যুবক মিলে এক তরুণীকে বিবস্ত্র করে যৌন নির্যাতন করে। পরে সেই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিলে তা ভাইরাল হয়। এরপর ভারতের পুলিশ ওই যুবকদের গ্রেপ্তার করে।

পরে পুলিশ জানতে পারে, ভুক্তভোগী ওই তরুণী এবং তার নির্যাতনকারীরা সবাই বাংলাদেশি। ভারতীয় পুলিশ বিষয়টি বাংলাদেশের পুলিশকে জানায়। এরপর এ ঘটনা তদন্তে নামে বাংলাদেশের পুলিশ। তদন্তে নেমে একে একে ভয়ংকর তথ্য দেয় পুলিশ। তালিকা করে ৫০০ টিকটকারকে খোঁজার অভিযানে নামে পুলিশ। সেই ধারাবাহিকতায় এবার এই ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হলো।

টিকটক হৃদয়ের এ ঘটনার পর নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। অনুসন্ধানে নেমে পুলিশ জানতে পারে শত শত তরুণ-তরুণীদের নিয়ে প্রায়ই পার্টির আয়োজন করতেন হৃদয় বাবু। আর এসব পার্টি ছিল হৃদয়ের নারী পাচারের মূল প্ল্যাটফর্ম। হ্যাংআউট পার্টি ও পুল পার্টিই ছিল টিকটক হৃদয়ের নারীদের ফাঁদে ফেলার মূল অস্ত্র। এ দুই ধরনের পার্টির মাধ্যমে বন্ধত্বের কৌশলে তরুণীদের পাচার করে দিত হৃদয়।

হৃদয় বাবুর পুল পার্টি এবং হ্যাংআউটে অংশ নেওয়া অনেকের কাছেই ছিল স্বপ্নের মতো। কারণ এসব পার্টিতে মিলত তরুণ-তরুণীদের অবাধ মেলামেশার সুযোগ। পার্টিতে থাকতো সব ধরনের আয়োজন। হৃদয়ের পুল পার্টিতে অংশ নিতে হুমড়ি খেয়ে পড়ত উঠতি টিকটকাররা।

হৃদয় বাবু অনলাইনে টিকটক ও বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়া গ্রুপের তরুণীদের টিকটক মডেল বানানো ও অন্যান্য প্রলোভন দেখিয়ে উচ্ছৃঙ্খল জীবনে আকৃষ্ট ও অভ্যস্ত করাত। পরবর্তীকালে তাদেরকে পাশ্ববর্তী দেশ বা উন্নত দেশে বিভিন্ন মার্কেট, সুপারশপ, বিউটি পার্লারসহ বিভিন্ন ধরনের ভালো বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বস রাফির মাধ্যমে পার্শ্ববর্তী দেশে পাচার করত।

মূলত যৌনবৃত্তিতে নিয়োজিত করার উদ্দেশ্যেই পার্শ্ববর্তী দেশের দক্ষিণ অঞ্চলে পাচার করা হত তরুণীদের। পাচারের পর তাদেরকে বিভিন্ন নেশা জাতীয় দ্রব্য সেবন করিয়ে জোরপূর্বক অশালীন ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল করত, যাতে তারা এ ধরনের কাজে বাধ্য হয়।