আগুনে হতাহতদের জন্য ক্ষতিপূরণ ঘোষণা

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান বলেছেন, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতা ইউনিয়নের কর্ণগোপ এলাকায় হাশেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজের সেজান জুস উৎপাদন কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের ২ লাখ টাকা এবং আহতদের ৫০ হাজার টাকা দেয়া হবে।

শুক্রবার ৯ জুলাই সংবাদমাধ্যমকে এসব কথা জানান তিনি। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট দপ্তর এবং প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোনো ত্রুটি থাকলে কঠোর শাস্তি দেয়া হবে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে আগুনে পোড়া কারখানার ধ্বংসস্তূপ থেকে এখন পর্যন্ত ৫২টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এরমধ্যে ৪৯ জনের লাশ নিয়ে আসা হয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে।

সব লাশই পুলিশি পাহারায় আনা হয় বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স নারায়ণগঞ্জ অফিসের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফীন।

ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানান, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পর ছয়তলা ভবনের চতুর্থ তলা পর্যন্ত প্রবেশ করা গেছে। সেখান থেকেই এতগুলো মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ছয়তলা কারখানা ভবনের উপরের দুই ফ্লোরে এখনও আগুন জ্বলছে। আগুন নেভানোর কাজ চলছে এখনও।

ধ্বংসস্তূপে তল্লাশিও এখনও শেষ হয়নি। বৃহস্পতিবার (০৮ জুলাই) সন্ধ্যা ৭টায় উপজেলার কর্ণগোপ এলাকার হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ কারখানার নিচ তলায় আগুনের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তেই আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। আগুন লাগার পর কারখানার ভবন থেকে লাফিয়ে পড়ে তখনই তিনজনের মৃত্যু হয়।

এদিকে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ভবনে আটকাপড়ে নিখোঁজ হওয়া শ্রমিকদের উদ্ধারে দেরি হওয়ায় পুলিশ ও সাংবাদিকদের ওপর দফায় দফায় হামলা চালিয়েছে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা। শুক্রবার বেলা ১১টার থেকে থেকে সাড়ে ১১টায় পর্যন্ত প্রায় আধা ঘণ্টা এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।

পুলিশের ওপর এলোপাতাড়ি ইট-পাটকেল নিক্ষেপসহ ধাওয়া-পাল্টার ঘটনা ঘটে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষ চলাকালে কারখানার প্রধান ফটকের সামনে আনসার ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে তিনটি শর্টগান লুট করে। পরে দুটি উদ্ধার হলেও একটি এখনও উদ্ধার হয়নি।

রূপগঞ্জের সজীব গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজের সেজান জুস কারখানার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম বেপারীকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অন্যরা হলেন- রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ নুসরাত জাহান, জেলার ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন, পুলিশের একজন প্রতিনিধি এবং কলকারখানা অধিদপ্তরের জেলার একজন কর্মকর্তা।