বিশ্বজুড়ে ক্ষুধায় প্রতি মিনিটে ১১ জনের মৃত্যু হচ্ছে: অক্সফাম

ক্ষুধায় বিশ্বে এক মিনিটে গড়ে ১১ জনের মৃত্যু হচ্ছে বলে নতুন এক রিপোর্ট প্রকাশ করে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা অক্সফাম। রিপোর্ট অনুযায়ী, গত বছরের তুলনায় এ বছর বিশ্বে দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতিতে পড়া মানুষের সংখ্যা ছয় গুণ বেড়েছে।

শুক্রবার প্রকাশিত ‘দ্য হাঙ্গার ভাইরাস মাল্টিপ্লাইস’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে সংস্থাটি বলছে, বিশ্বে করোনায় রোজ যত মানুষ মারা যাচ্ছে, এর চেয়ে বেশি মারা যাচ্ছে ক্ষুধায়। করোনায় যেখানে মিনিটে ৭ জনের মৃত্যু হচ্ছে সেখানে ক্ষুধায় মারা যাচ্ছে ১১ জন।

গত বছরের জুলাইয়ে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে অক্সফাম সতর্ক করে বলেছিল, করোনার প্রাদুর্ভাব বিশ্বের ক্ষুধা সংকটকে আরও খারাপ পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে। করোনার সামাজিক ও অর্থনৈতিক বিরূপ প্রভাবে সৃষ্ট ক্ষুধায় প্রতিদিন ১২ হাজার মানুষ মারা যেতে পারে।

অক্সফামের আমেরিকার আঞ্চলিক প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী আবি ম্যাক্সম্যান বলছেন, পরিসংখ্যান বিস্ময়কর, তবে আমাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে, এই পরিসংখ্যান তৈরি হয়েছে অকল্পনীয় দুর্ভোগের মুখোমুখি ব্যক্তিদের নিয়ে। সংখ্যাটা একজন হলেও অনেক।

দাতব্য সংস্থাটি বলছে, বিশ্বজুড়ে ১৫৫ মিলিয়ন মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার চেয়ে খারাপ বা আরও খারাপ সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে যা গত বছরের চেয়ে প্রায় ২০ মিলিয়ন বেশি। এর প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ খেতে পারে না কারণ তাদের দেশ সামরিক সংঘাত চলছে।

খাদ্য সংকট ২০২১ শীর্ষক প্রতিবেদন অনুযায়ী জুনের মাঝামাঝি সময়ে ইথিওপিয়া, মাদাগাস্কার, দক্ষিণ সুদান আর ইয়েমেনে দুর্ভিক্ষের সবচেয়ে তীব্র পর্যায়ে পড়া মানুষের সংখ্যা ৫ লাখ ২১ হাজার ৮১৪। গত বছরের ৮৪ হাজার ৫০০ এর চেয়ে যা ৫০০ শতাংশ বেশি।

মহামারির প্রাদুর্ভাব ও এর ফলে সৃষ্ঠ অর্থনৈতিক পরিণতির কারণে ইয়েমেন, গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, আফগানিস্তান এবং ভেনেজুয়েলাসহ এমন অনেক দেশে বিদ্যমান খাদ্য সংকট আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে বলে জানানো হয়েছে প্রতিবেদনে।

অক্সফাম বলছে, এর তিনটি প্রধান কারণ হলো কোভিড-১৯, জলবায়ু সংকট এবং সংঘাত। মহামারির প্রাদুর্ভাব শুরুর পর থেকে যুদ্ধগুলো ক্ষুধার একক বৃহত্তম চালক ছিল যা ২৩টি দেশের প্রায় ১০০ মিলিয়ন মানুষকে খাদ্য সংকটের আরও খারাপ স্তরে ঠেলে দিয়েছে।

আবি ম্যাক্সম্যান বলছেন, আবহাওয়া বিপর্যয় ও অর্থনৈতিক ধাক্কায় ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত লাখ লাখ মানুষের জন্য শেষ আঘাত হিসেবে দেখা দিয়েছে মহামারির প্রকোপ ঠেকাতে লড়াইয়ের পরিবর্তে যুদ্ধরত পক্ষগুলো একে অপরের সাথে লড়াই চালিয়ে যাওয়া।